সংসদ থেকে রাজনৈতিক সফরের জন্য তেল খরচ নিয়েছেন তারেক
সংসদ থেকে রাজনৈতিক সফরের জন্য তেল খরচ নিয়েছেন তারেক
দলীয় কাজে ব্যবহারের জন্য জাতীয় সংসদ সচিবালয় থেকে গাড়ির জ্বালানি তেল নিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমান। অষ্টম জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার এডভোকেট আখতার হামিদ সিদ্দিকীর অনুকূলে তারেক রহমান ৫৩০ লিটার তেল নেন বলে জানিয়েছে সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার মুহাম্মদ জমিরউদ্দিন সরকারের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি তদনেত্মর সর্বদলীয় তদনত্ম কমিটির সাব-কমিটি। সাব-কমিটি জানিয়েছে, ২০০৬ সালের ১ জুন নওগাঁয়ের বদলগাছি এবং মহাবেদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ৫ দিনের সফরের জন্য এ তেল নেন তারেক রহমান। সাব-কমিটির প্রধান শাহজাহান খান জানিয়েছেন, যে ভাউচারে তেল দেয়া হয়েছে সেখানে স্পষ্ট তারেক রহমানের নাম উলেস্নখ রয়েছে। সে ভাউচার এখন কমিটির কাছে রয়েছে বলে জানান তিনি।
বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, এর বাইরে একই বছর জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যনত্ম তৎকালীন চীফ হুইপ খন্দকার দেলোয়ার হোসেন বিদেশে থাকলেও তার নামে সংসদ থেকে আপ্যায়ন খাতে ১২২ বোতল পানি, ১২২ টি কোল্ড ড্রিংসক, ১২২ পেস্নট ভাত, ডাল, সবজি নেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে বাসা বরাদ্দের দায়িত্ব স্পিকারের হাতে থাকলেও সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার মুহাম্মদ জমিরউদ্দিন সরকার এখানেও অনিয়ম করেছেন বলে জানিয়েছে কমিটি। গতকাল রবিবার জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সাব-কমিটির বৈঠক শেষে শাহজাহান খান বলেন, তদনত্ম কাজ যতই অগ্রসর হচ্ছে, ততই অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসছে। তদনত্ম কমিটির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কাছেও সরাসরি লিখিতভাবে অনেকে অভিযোগ জানাচ্ছেন। তিনি বলেন, সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাসা বরাদ্দের ড়্গেত্রেও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদনত্ম করে দেখা গেছে, সিনিয়রদের বাদ দিয়ে জুনিয়রদের বাসা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আবার যাদের চাকরি জীবন শেষ পর্যায়ে তাদের বাসা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সংসদ ভবনের জন্য যশোর থেকে ফুলের টব আনা হয়েছে। কেন আনা হয়েছে, এর কোন জবাব নেই।
শাহজাহান খান বলেন, বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমান জাতীয় সংসদের কেউ না হলেও তার সফরের জন্য সংসদ সচিবালয়ের গাড়ী ব্যবহার করা হয়েছে। জ্বালানি খরচ সংসদ সচিবালয় থেকে দেয়া হয়েছে। এটা কীভাবে ও কেন করা হয়েছে তার কোন ব্যাখ্যা নেই। এছাড়া ঘাস প্রকল্প, হাঁস প্রকল্প, গাড়ী ব্যবহার, আসবাবপত্র ক্রয়, বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল পরিশোধসহ নানা বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। আগামী ৩১ মের মধ্যে এ সকল বিষয়ে তদনত্ম শেষ করে মূল কমিটির কাছে তা জমা দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান খান বলেন, তদনত্ম কাজের স্বচ্ছতার স্বার্থে সাবেক স্পিকার, সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও সাবেক চীফ হুইপকে মূল কমিটির বৈঠকে ডাকা হবে। আগামী ১ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে তাদের ডাকা হবে। যদি তারা না আসেন, তাহলে দুর্নীতির যে দালিলিক প্রমাণ আছে তার ভিত্তিতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।