অবসরপ্রাপ্ত দুই সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল রেজাকুল হায়দার এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুর রহিমকে পুলিশ শনিবার এই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে
চট্টগ্রাম দশ ট্রাক অস্ত্র আটক মামলা
এনএসআইর সাবেক দু'প্রধান তিন দিনের রিমান্ডে
চট্টগ্রাম : ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় গ্রেফতারকৃত এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল
চট্টগ্রাম : ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় গ্রেফতারকৃত এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল
ওমর ফারুক, চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামের সার কারখানার জেটিঘাটে ১০ ট্রাক অস্ত্র পাচার মামলায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক দুই মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুর রহিম ও মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দারের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল রোববার চট্টগ্রাম মহানগর ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমানের আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশের সিআইডি। গতকাল দুপুরে শুনানির পর ম্যাজিষ্ট্রেট তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম দামপাড়াস্থ সিআইডি কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এর আগে গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় এনএসআই সাবেক দুই মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুর রহিম ও মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দারকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে চট্টগ্রাম আদালতে আনা হয়। মেজর জেনারেল (অবঃ) রেজ্জাকুল হায়দারের হাতে ছিল কোরান শরীফ। তাদের উভয়কে বিমর্ষ ও ক্লান্ত দেখাচ্ছিলো। আদালত ভবন জুড়ে ছিল এপিবিএন, দাঙ্গা পুলিশের কড়া নিরাপত্তা বুহ্য। উৎসুক জনতার ভিড় ছিল যথেষ্ট। আদালত ভবনের তিন তলায় পুলিশ কর্মকর্তার একটি কক্ষে তাদের বসতে দেয়া হয়। বেলা ৩ টা ৫ মিনিটে শুরু হয় রিমান্ড শুনানি হয়।। প্রায় আধা ঘণ্টা শুনানি শেষে ম্যাজিষ্ট্রেট এ আদেশ দেন। গত ১৬ মে গভীর রাতে রেজ্জাকুল হায়দারকে তার ধানমন্ডি বাসা থেকে এবং আব্দুর রহিমকে বনানীর ডিওএইচসের বাসা থেকে সিআইডি গ্রেফতার করেন। শনিবার রাতে তাদের চট্টগ্রামে আনা হয়। তারপর তাদের দামপাড়াস্থ সিআইডি কার্যালয়ে রাখা হয়।গতকাল রিমান্ড শুনানিতে অংশ নিয়ে মহানগর আদালতের সরকারি কৌশলী (পিপি) কামাল আহমেদ বলেন, এনএসআই সাবেক পরিচালক ও উইং কমান্ডার (অব.) সাহাব উদ্দিন আহম্মদ ও মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন গ্রেফতারের পর ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দিতে রেজ্জাকুল হাযদার ও আব্দুর রহিমের সম্পৃতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দুবাইয়ের এআরওয়াই গ্রুপের সাথে গ্রেফতারকৃত সাবেক এনএসআই মহাপরিচালক আব্দুর রহিমের বৈঠক হয়েছিল। তারা রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করে অস্ত্র পাচারের সুযোগ সৃষ্টি ও ফায়দা হাসিল করে রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ করেছে। সুতরাং এ অস্ত্র পাচার সম্পর্কে তাঁরা দুই জন অনেক কিছু জানেন। তাদের নামধাম প্রকাশ করার প্রয়োজন আছে।আসামী পক্ষের আইনজীবী নাজিম উদ্দিন রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, এজাহারে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুর রহিম ও মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দারের নাম নেই। তারা দুই জনই শারীরিকভাবে অসুস্থ। সাহাব উদ্দিন ও আকবর হোসেন খানকে গ্রেফতারে পর জোর করে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতার করা উচিত হয়নি।সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি মনিরুজ্জমান চৌধুরী তার প্রতিক্রিয়ায় আদালতে সাংবাদিকদের বলেন, এনএসআই সাবেক পরিচালক ও উইং কমান্ডার (অব.) সাহাব উদ্দিন আহম্মদ এর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আমরা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুর রহিম ও মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দারের নাম পেয়েছি। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় তাদের সম্পৃক্ততা কতটুকু ও পেছনে আরও কারা আছে সেটা বের করা প্রয়োজন। তাই তাদের রিমান্ডে নেয়া প্রয়োজন মনে করছি।