মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও ডিজিএফআই-কে প্রয়োজনে বিলুপ্ত করার পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিক
"র্যাব ও ডিজিএফআই ভেঙে দিন"
মানবাধিকার সংস্থা
ঢাকা, মে ১৮ ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরকে (ডিজিএফআই) বিলুপ্ত করার পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। র্যাব ও ডিজিএফআই-কে ভেঙে না দেওয়া হলেও 'কমপক্ষে' তাদের কার্যক্রম তদারক করার জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া 'বিচার-বহির্ভূত হত্যা' বন্ধে সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার এখনো বাস্তবায়িত না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। নিউইয়র্ক ভিত্তিক প্রভাবশালী মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাটি সোমবার বাংলাদেশ বিষয়ক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ২০০৮ এর জাতীয় নির্বাচনে বিচার বহির্ভূত হত্যা বন্ধ করার বিষয়টি ছিল আওয়ামী লীগের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্র"তি। ওই সময় দলটি এ ঘটনার জন্য দায়ীদের আইনের আওতায় আনার কথাও বলেছিল। সংস্থার ৭৬ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে গত ৫ বছরে অন্তত ১ হাজার বিচার-বহির্ভূত হত্যার সঙ্গে র্যাব ও পুলিশ জড়িত ছিল উল্লেখ করে বলা হয়, আগের তুলনায় সংখ্যায় অনেক কম হলেও আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর হত্যা-নিযার্তন বন্ধে নির্বাচনী প্রতিশ্র"তি পূরণে সরকার এখনো ব্যর্থ। এছাড়া ডিজিএফআই 'মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতীকে' পরিণত হয়েছে। ডিজিএফআই-এর বিরুদ্ধে পেশাগত দায়িত্ব-বহির্ভূত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে তারা রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ীকে আটক করে নির্যাতন করেছে বলে ওই সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কথিত ভুক্তভোগী অনেকেই সংসদসহ বিভিন্ন ফোরামে অভিযোগ করেছেন। প্রতিবেদনে সরকারের প্রতি কিছু সুপারিশও করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। সংস্থাটি বলছে, প্রয়োজনে ডিজিএফআই ও র্যাবকে বিলুপ্ত করতে হবে। কমপক্ষে তাদের কার্যক্রম তদারক করার জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠন, ডিজিএফআইয়ের কার্যক্রম সামরিক বাহিনীতে সীমাবদ্ধ রাখা, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা এবং কার্যপ্রণালী সুনির্দিষ্ট করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মান নিশ্চিত করতে হবে। ' মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ও নির্যাতন : বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীকে দেওয়া অব্যাহতি' শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও প্রতিশ্র"তি অনুযায়ী মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধে বর্তমান সরকারের এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এছাড়া কথিত 'ক্রস ফায়ার' এবং নিরাপত্তা হেফাজতে মৃত্যু, নির্যাতন ও অযৌক্তিক গ্রেপ্তারের সঙ্গে আধা সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা ও পুলিশের জড়িত থাকার বিস্তারিত তুলে ধরা হয় ওই প্রতিবেদনে। এছাড়া বিডিআর বিদ্রোহ-পরবর্তী ঘটনার বিষয়টিও ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, বাংলাদেশের র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা বা পুলিশ সদস্যরা খুব সহজেই মানুষ হত্যা করেও পার পেয়ে যায়। তবে এসব হত্যাকারী বা নির্যাতনকারীদেরও অন্য অপরাধীদের মতো বিচারের আওতায় আনা উচিত। প্রতিবেদনে বলা হয়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী ও সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা মনে করেন, দায়িত্ব পালন করতে গেলে সহিংস পদ্ধতি ব্যবহার করাসহ যে কোনো কিছু করার অধিকার তাদের আছে। তারা এর শিকার ব্যক্তিদের এ বার্তাটি পৌঁছে দেন যে, এর বিরুদ্ধে প্রতিকার চাইতে গেলে চড়া মূল্য দিতে হবে এবং তা করেও ফায়দা হবে না। সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোষীদের ছাড় না দেওয়ার ঘোষণার কথা তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে অতীতের নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা তদন্ত শুরু করার কোনো উদ্যোগ এ সরকার নিয়েছে তার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, বাংলাদেশের সেকেলে আইনী ব্যবস্থাও এ পরিস্থিতির জন্য অংশত দায়ী। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের আর্টিকেল ৪৬ সংসদকে এ ক্ষমতা দিয়েছে যে, তা কোনো সরকারি কর্মকর্তা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যে কোনো কাজ করলেও তাকে অব্যাহতি বা ক্ষমা করার আইন প্রণয়ন করতে পারে। সংস্থাটির মতে এটি আন্তর্জাতিক আইনের মানদণ্ড লঙ্ঘন।
মানবাধিকার সংস্থা
ঢাকা, মে ১৮ ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরকে (ডিজিএফআই) বিলুপ্ত করার পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। র্যাব ও ডিজিএফআই-কে ভেঙে না দেওয়া হলেও 'কমপক্ষে' তাদের কার্যক্রম তদারক করার জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া 'বিচার-বহির্ভূত হত্যা' বন্ধে সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার এখনো বাস্তবায়িত না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। নিউইয়র্ক ভিত্তিক প্রভাবশালী মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাটি সোমবার বাংলাদেশ বিষয়ক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ২০০৮ এর জাতীয় নির্বাচনে বিচার বহির্ভূত হত্যা বন্ধ করার বিষয়টি ছিল আওয়ামী লীগের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্র"তি। ওই সময় দলটি এ ঘটনার জন্য দায়ীদের আইনের আওতায় আনার কথাও বলেছিল। সংস্থার ৭৬ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে গত ৫ বছরে অন্তত ১ হাজার বিচার-বহির্ভূত হত্যার সঙ্গে র্যাব ও পুলিশ জড়িত ছিল উল্লেখ করে বলা হয়, আগের তুলনায় সংখ্যায় অনেক কম হলেও আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর হত্যা-নিযার্তন বন্ধে নির্বাচনী প্রতিশ্র"তি পূরণে সরকার এখনো ব্যর্থ। এছাড়া ডিজিএফআই 'মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতীকে' পরিণত হয়েছে। ডিজিএফআই-এর বিরুদ্ধে পেশাগত দায়িত্ব-বহির্ভূত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে তারা রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ীকে আটক করে নির্যাতন করেছে বলে ওই সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কথিত ভুক্তভোগী অনেকেই সংসদসহ বিভিন্ন ফোরামে অভিযোগ করেছেন। প্রতিবেদনে সরকারের প্রতি কিছু সুপারিশও করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। সংস্থাটি বলছে, প্রয়োজনে ডিজিএফআই ও র্যাবকে বিলুপ্ত করতে হবে। কমপক্ষে তাদের কার্যক্রম তদারক করার জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠন, ডিজিএফআইয়ের কার্যক্রম সামরিক বাহিনীতে সীমাবদ্ধ রাখা, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা এবং কার্যপ্রণালী সুনির্দিষ্ট করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মান নিশ্চিত করতে হবে। ' মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ও নির্যাতন : বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীকে দেওয়া অব্যাহতি' শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও প্রতিশ্র"তি অনুযায়ী মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধে বর্তমান সরকারের এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এছাড়া কথিত 'ক্রস ফায়ার' এবং নিরাপত্তা হেফাজতে মৃত্যু, নির্যাতন ও অযৌক্তিক গ্রেপ্তারের সঙ্গে আধা সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা ও পুলিশের জড়িত থাকার বিস্তারিত তুলে ধরা হয় ওই প্রতিবেদনে। এছাড়া বিডিআর বিদ্রোহ-পরবর্তী ঘটনার বিষয়টিও ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, বাংলাদেশের র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা বা পুলিশ সদস্যরা খুব সহজেই মানুষ হত্যা করেও পার পেয়ে যায়। তবে এসব হত্যাকারী বা নির্যাতনকারীদেরও অন্য অপরাধীদের মতো বিচারের আওতায় আনা উচিত। প্রতিবেদনে বলা হয়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী ও সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা মনে করেন, দায়িত্ব পালন করতে গেলে সহিংস পদ্ধতি ব্যবহার করাসহ যে কোনো কিছু করার অধিকার তাদের আছে। তারা এর শিকার ব্যক্তিদের এ বার্তাটি পৌঁছে দেন যে, এর বিরুদ্ধে প্রতিকার চাইতে গেলে চড়া মূল্য দিতে হবে এবং তা করেও ফায়দা হবে না। সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোষীদের ছাড় না দেওয়ার ঘোষণার কথা তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে অতীতের নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা তদন্ত শুরু করার কোনো উদ্যোগ এ সরকার নিয়েছে তার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, বাংলাদেশের সেকেলে আইনী ব্যবস্থাও এ পরিস্থিতির জন্য অংশত দায়ী। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের আর্টিকেল ৪৬ সংসদকে এ ক্ষমতা দিয়েছে যে, তা কোনো সরকারি কর্মকর্তা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যে কোনো কাজ করলেও তাকে অব্যাহতি বা ক্ষমা করার আইন প্রণয়ন করতে পারে। সংস্থাটির মতে এটি আন্তর্জাতিক আইনের মানদণ্ড লঙ্ঘন।