জামাতমুক্ত প্রশাসন গড়তে পারলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ করা সম্ভব

জামাতমুক্ত প্রশাসন গড়তে পারলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ করা সম্ভব
ভিওবিডি, ঢাকা থেকেস্বাধীনতাবিরোধী ও জামাতমুক্ত প্রশাসন গড়ে তুলতে পারলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ করা সম্ভব। এজন্য শিক্ষাসংশি-ষ্ট সকল কার্যক্রম এবং প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতাবিরোধী জামাতমুক্ত করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা, সামাজিক উন্নয়ন ও রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেছেন। গতকাল শনিবার সিরডাপ মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি প্রতিরোধ মঞ্চ আয়োজিত ‘মুক্তিযুদ্ধে আমাদের প্রত্যাশা, প্রাপ্তি এবং আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। এতে অন্য বক্তারা বলেন, বিগত জোট সরকারের সময় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে উপহাসে পরিণত করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। দেশ ও জনগণের কথা না ভেবে, সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের সামনে বিকৃত ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে সভায় উপদেষ্টা ছাড়াও বক্তব্য রাখেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক, অধ্যাপক ড. গিয়াসউদ্দিন মোল্লা, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, মুক্তিযোদ্ধা নুর“ল ইসলাম প্রমুখ। এ ছাড়াও সারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মুক্তিযোদ্ধারা আলোচনা সভায় অংশ নেন।ড. আলাউদ্দিন আহমদ বলেন, আমলাতান্ত্রিক কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করা সম্ভব হ“েছ না। তালিকা তৈরির জন্য মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে চিঠি পাঠানো হয়। ওই কর্মকর্তা যদি স্বাধীনতাবিরোধী হন, তবে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তথ্য দেন না। আর এ কারণেই মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তথ্য তালিকা তৈরি করা সম্ভব হয় না। স্বাধীনতার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করাকে ভুল হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রক্তাক্ত বিপস্নবের পর এর বিরোধীতাকারীদের কোনো ক্ষমা করতে নেই, তাদের বাঁচতে দিতে হয় না। আমরা এই ভুল করেছি। মুক্তিযুদ্ধের ৩ মাসের মধ্যে সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচার করে দেশকে পবিত্র করা প্রয়োজন ছিল। ’৭৫ পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা উল্লেখ করে ড. আলাউদ্দিন বলেন, ’৭৫ পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমানের ভূমিকাই প্রমাণ করে তিনি কতোটুকু স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন। তিনি যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হতেন তাহলে ক্ষমতা নেয়ার পর শাহ আজিজুর রহমানের মতো চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীকে প্রধানমন্ত্রী বানাতেন না। বিগত জোট সরকারের সময় যেসব স্থাপনা থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম বাদ দেয়া হয়েছে সেসব স্থাপনায় তার নাম পুনর্বহাল করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, জোট সরকারের সময়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে উপহাসে পরিণত করার চেষ্টা করা হয়েছে। নতুন প্রজন্ম যেন সঠিক ইতিহাস না জানতে পারে সেজন্য পাঠ্যপুস্তকে বিকৃত ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। দেশ ও জনগণের কথা না ভেবে, সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থেই ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এই সরকারকে সকলের মধ্যে এই চেতনা ছড়িয়ে দিতে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান জানান তিনি।ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক বলেন, স্বাধীনতা অর্জিত হলেও মুক্তিযুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। পরাজিত শক্তিরা এখনো নানা ষড়যন্ত্র করে যা“েছ। তাই স্বাধীনতাবিরোধীদের শুধু ঘৃণা করলেই চলবে না, শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়া বলেন, জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কখনোই নিজেকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেননি। হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এটি করা হয়েছে। অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন মোল্লা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির জন্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দলিলে পরিবর্তন করা হয়েছে। এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট চলছে। অবিলম্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি জানান তিনি

Popular posts from this blog

THE CONSTITUTION OF THE BANGLADESH AWAMI LEAGUE

ইতিহাসবন্ধনী

Justice order of the day