'১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানে জোট সরকারের নীতি নির্ধারকরা জড়িত'

ঢাকা, মে ২১ - চট্টগ্রামে আটক ১০ ট্রাক অস্ত্রের চোরাচালানের সঙ্গে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিগত জোট সরকারের নীতি নির্ধারকরা জড়িত ছিলেন বলে দাবি করেছেন খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, "তাদের সায় না থাকলে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা- এনএসআই'র প্রধানরা এ অপকর্ম করতে সাহস পেতেন না।" বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের রংপুর প্রতিনিধি জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রংপুর টাউন হলে রংপুর জেলা উন্নয়ন সমন্বয় পরিষদের কনভেশনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় খাদ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, "জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা লুটপাট করেছে। তাদের দুর্নীতিবাজ না বলে ডাকাত বললে অন্যায় হবে না।" খালেদা জিয়ার দুই ছেলে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে বলেও মন্ত্রী অভিযোগ করেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, "রংপুর অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে ভূট্টা চাষ হয়, আলু হয়। এখানে দরকার কৃষিভিত্তিক কারখানা স্থাপন করা। এ জন্য সরকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।" তিনি কৃষকদের ধান চালের পাশাপাশি আরও বেশি শাক সবজি আর ভূট্টা চাষ করার আহবান জানান। রংপুরকে বিভাগ ঘোষণার দাবি সমর্থন করে মন্ত্রী বলেন, "আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে এ দাবি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে। আশা করি অচিরেই এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পুরণ হবে।" কনভেনশনে রংপুরকে আগামী বছরের মধ্যে বিভাগ ঘোষণা, শিক্ষা বোর্ড স্থাপন, প্রয়াত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার নামে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহসহ ১৮ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। রংপুর জেলা উন্নয়ন সমন্বয় পরিষদের আহবায়ক চৌধুরী খালেকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কনভেনশনে আরও বক্তব্য রাখেন- সাংসদ এইচ এন আশিকুর রহমান ও আনিসুল ইসলাম মণ্ডল, জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক আবুল মনসুর আহামেদসহ স্থানীয় নেতারা। এদিকে অনুষ্ঠান মঞ্চে আহবান না জানানোয় রংপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, পীরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান মাহবুবার রহমানসহ বেশ কয়েকজন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অনুষ্ঠান বয়কট করে চলে যান। দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, দুপুরে দিনাজপুর সার্কিট হাউসে জেলার চালকল মালিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন খাদ্যমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, "গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতেই সরকার চলতি বোরো মৌসুমের ধান চালের ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। সরকারের খাদ্য শস্য সংগ্রহ অভিযানের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আপদকালীন মজুদ গড়ে তোলা এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টি করে কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা।" জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল জলিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- দিনাজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিম, মহিলা সাংসদ সুলতানা বুলবুল, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পিউস কস্তা, জেলা চালকল মালিক গ্র"পের সভাপতি মোছাদ্দেক হুসেন প্রমুখ। এরপর মন্ত্রী শহরের পুলহাটে খাদ্য গুদাম পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি সংগ্রহ অভিযান পর্যবেক্ষণ করেন। এর আগে সকালে খাদ্যমন্ত্রী দিনাজপুর গম গবেষণা কেন্দ্রে জেলার কৃষিবিদদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। তিনি দিনাজপুর গম গবেষণা কেন্দ্রের কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। পর্যায়ক্রমে কেন্দ্রটিকে পূর্ণাঙ্গ ইনস্টিটিউট করা হবে বলেও মন্ত্রী আশ্বাস দেন।
যুদ্ধাপরাধ বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন যুগোপযোগী করা হচ্ছে
ঢাকা, মে ২১ -যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ সাংবাদিকদের একথা জানান। তিনি বলেন, "যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য বিশেষজ্ঞদের মতামত চেয়ে আইন কমিশনে তা পাঠানো হয়েছে।" আইনমন্ত্রী বলেন, "এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সংশোধনীর পরই যুদ্ধাপরাদীদের বিচারে বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে যুদ্ধাপরাধের ঘটনার তদন্তের ক্ষেত্রে আইনগত কোনো বাধা নেই।" এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল যদি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতা করে, তাহলে ধরে নিতে হবে ঐ দলে যুদ্ধাপরাধী রয়েছে। আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের প্রধান বা তার সদস্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনছি না। আমরা প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নিচ্ছি। নিম্ন আদালতে দেলওয়ার হোসেন সাঈদির মামলা ও তার আইনজীবীর বক্তব্য প্রসঙ্গে শফিক আহমেদ জানান, যখন তদন্ত শুরু হবে, তখনই বোঝা যাবে কে কোন অপরাধ করেছে। এখন যদি কেউ নিজের পক্ষে সাফাই গাইতে চায় তাহলে বলার কিছু নেই। তবে বিষয়টি 'ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না'র মতো। বিচারের প্রক্রিয়া শুরুর ক্ষেত্রে বিলম্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা আগেই বলেছি এখনো বলছি '৭১ এ যারা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে তাদের বিচার করা হবে। এজন্য জনগণ আমাদের ম্যাণ্ডেটও দিয়েছে। ট্রাইব্যুনালের জন্য অফিস রেজিস্ট্রার, বেঞ্চ ক্লার্কসহ বিভিন্ন পর্যায়ে সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ ও তাদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার বিষয় আছে। এজন্যই একটু সময় নিচ্ছি। তদন্ত সংস্থা ও আইনজীবী নিয়োগের কাজ অনেকটা এগিয়েছে বলে মন্ত্রী জানান। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার- এ দুটোর মধ্যে সরকার কোনটাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে- এই প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, সরকারের কাছে দুটো ঘটনাই গুরুত্বপূর্ণ। এই দুটিকে এক করে দেখার সুযোগ নেই। তবে পিলখানার ঘটনায় বিভিন্ন সংস্থার তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। এই রিপোর্টগুলো পাওয়া গেলেই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

Popular posts from this blog

THE CONSTITUTION OF THE BANGLADESH AWAMI LEAGUE

ইতিহাসবন্ধনী

Justice order of the day