হাওয়া ভবন নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে রেজ্জাকুলকে, টিএফআই সেলে আব্দুর রহিম

হাওয়া ভবন নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে রেজ্জাকুলকে টিএফআই সেলে আব্দুর রহিম
।। চট্টগ্রাম অফিস ।।
দশ ট্রাক অস্ত্র চালানের সাথে ‘হাওয়া ভবনে’র সংশিস্নষ্টতা জানার জন্য জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দারকে বিশেষভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিআইডি। এড়্গেত্রে তাকে মুখোমুখি করা হতে পারে সংস্থাটির সাবেক পরিচালক গ্রেফতারকৃত উইং কমান্ডার (অব.) শাহাবু্‌দ্িদনের। দুইজনেই বিগত বিএনপি সরকারের ড়্গমতার কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত হাওয়া ভবন সংশিস্নষ্ট ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
যে কারণে অপর এনএসআইয়ের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিমকে গতকাল বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকা টাস্কফোর্স ইন্টারগেশন (টিএফআই) সেলে পাঠানো হলেও রেজ্জাকুল হায়দারকে চট্টগ্রাম কারাগারেই রেখে দেয়া হয়েছে। উইং কমান্ডার (অব.) শাহাবুদ্দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পর রেজ্জাকুল হায়দারকে রিমান্ডে নেবে সিআইডি। গতকাল বেলা সোয়া দশটার দিকে সিআইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিমকে নিয়ে আসেন। এরপর পুলিশের কড়া পাহারায় তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। দুপুরের পর ঢাকায় পৌঁছে সিআইডির দলটি তাকে টিএফআই সেলের হেফাজতে দিয়ে আসেন।
উলেস্নখ্য, গত বুধবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ওসমান গনি সাবেক শীর্ষ দুই গোয়েন্দা কর্মকর্তার ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। তার কয়েকদিন আগেই শাহাবুদ্দিনের রিমান্ডের আবেদন আদালতে জমা দেয়া হয়েছে। তবে শাহাবুদ্দিনের জন্য পুনরায় রিমান্ড চাওয়ার বিষয়টি সিআইডি গোপন রাখার চেষ্টা করছে। এনএসআইয়ের সাবেক দুই ডিজিকে দ্বিতীয় দফায় এবং শাহাবুদ্দিনকে তৃতীয় দফায় রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে শাহাবুদ্দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। এখন তাকে অস্ত্র আটক ঘটনায় চোরাচালান আইনে দায়েরকৃত মামলায় রিমান্ডে আনা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে মামলার সুপারভাইজার ও সিআইডি চট্টগ্রাম জোনের প্রধান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মুসলিম ইত্তেফাককে বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আপাতত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিমকে ঢাকায় টিএফআই সেলে পাঠানো হয়েছে। মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দারকে সুবিধামত সময়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’ উইং কমান্ডার (অব.) শাহাবুদ্দিনকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, দেখা যাক কি হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিআইডি কর্মকর্তা জানান, প্রথম দফায় তিন দিনের রিমান্ডে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম অস্ত্র আনার আগে দেশে ও বিদেশে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। এমনকি এই ঘটনার সাথে জড়িত দেশী-বিদেশী অনেক গুরম্নত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিসত্মারিত তথ্যও দিয়েছেন। শাহাবুদ্দিনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির অনেক তথ্যও তিনি মেনে নিয়েছেন। তথ্যগুলোর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাকে টিএফআই সেলে নেয়া হয়েছে।
কিন্তু মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার
এড়্গেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম। জিজ্ঞাসাবাদের প্রাথমিক পর্যায়ে তিনি বেশ কিছু গুরম্নত্বপূর্ণ তথ্য দিলেও শেষ পর্যায়ে এসে তিনি উইং কমান্ডার শাহাবুদ্দিনের সাথে কোনো পরিচয় ছিল না বলে দাবি করছেন। তাই দুইজনকে মুখোমুখি রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কারণ শাহাবুদ্দিন তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন, উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়াকে নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নেয়ার পাশাপাশি রেজ্জাকুল হায়দার তাকে দেখতে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে গিয়েছিলেন। এ সময়ে তার সঙ্গে ছিলেন উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়া।
এই দুইজনের মধ্যে মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমানের সাথে আমেরিকা গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া উইং কমান্ডার (অব.) শাহাবুদ্দিন তার কর্মড়্গেত্রে নিজেকে হাওয়া ভবনের লোক বলে পরিচয় দিতেন। তাই সিআইডি কর্মকর্তারা মনে করছেন এই দুই সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে মুখোমুখি করা হলে দশ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনার সাথে হাওয়া ভবনের সংশিস্নষ্টতার বিষয়ে গুরম্নত্বপূর্ণ অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।

Popular posts from this blog

THE CONSTITUTION OF THE BANGLADESH AWAMI LEAGUE

ইতিহাসবন্ধনী

ব্রিগেডিয়ার বারীর যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা