ফেঁসে যাচ্ছেন জোট সরকারের শীর্ষ নেতারা রেজ্জাক-রহিমকে জিজ্ঞাসাবাদে মিলছে হাওয়া ভবন কানেকশন
১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা : এনএসআই’র সাবেক দুই শীর্ষ কর্মকর্তা বললেন ‘নিজামী বাবর ও তারেককে জিজ্ঞাসা করুন’
ফেঁসে যা"েছন জোট সরকারের শীর্ষ নেতারা রেজ্জাক-রহিমকে জিজ্ঞাসাবাদে মিলছে হাওয়া ভবন কানেকশন
যুগান-র রিপোর্ট চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় ফেঁসে যা"েছন চারদলীয় জোট সরকারের নীতিনির্ধারকসহ শীর্ষ নেতারা। এ ঘটনায় বহুল আলোচিত হাওয়া ভবন কানেকশনের তথ্যও পেয়েছেন মামলার তদন-কারী সংস'া সিআইডির কর্মকর্তারা। গ্রেফতারকৃত এনএসআই পরিচালক সাহাবউদ্দিনের জবানবন্দি ও তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডি জোট সরকারের নীতিনির্ধারকসহ অন্যদের জড়িত থাকার বিষয়ে অনুসন্ধান চালা"েছ। এতে উঠে আসছে জোট সরকারের নীতিনির্ধারকসহ শীর্ষ নেতাদের নাম। গ্রেফতারকৃত এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিমকে টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই) জিজ্ঞাসাবাদ করা হ"েছ। তার কাছ থেকেও মিলেছে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য তথ্য। সাহাবউদ্দিনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে প্রকাশিত তথ্যের সঙ্গে গোয়েন্দারা আবদুর রহিমের জবানবন্দি মিলিয়ে দেখছেন। আবদুর রহিম ছাড়াও এনএসআইয়ের আরেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদেও হাওয়া ভবন কানেকশনসহ নীতিনির্ধারকদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি বেরিয়ে আসছে।সূত্র জানায়, রাষ্ট্রীয় ম্যাকানিজম ব্যবহার করে তৎকালীন ক্ষমতাসীন চারদলীয় জোট নেতাদের আশীর্বাদে আবদুর রহিম কি করে স্মরণকালের অস্ত্র চোরাচালানের মিশন সফল করেন সেসব তথ্য ফাঁস হতে শুর" করেছে। ইতিমধ্যে দেশী-বিদেশী যেসব কানেকশন পাওয়া গেছে সে রহস্য উদঘাটনে ইন্টারপোল বা আন-র্জাতিক গোয়েন্দা সংস'ার সহায়তা প্রয়োজন। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও হাওয়া ভবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পাঁচজন নেতার নাম ইতিমধ্যে বেরিয়ে এসেছে। পাকিস-ানের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাক ইয়াকুবের দুবাইভিত্তিক কোম্পানি এআরওয়াই’র আর্থিক সহায়তায় কি করে অস্ত্রের চালান চট্টগ্রামে পৌঁছেছিল সে তথ্যও জানতে পেরেছে গোয়েন্দারা। কেবল অস্ত্র চোরাচালান নয়, জোট সরকারের একজন প্রভাবশালী নেতাকে টিভি চ্যানেল তৈরি করতেও ওই কোম্পানি মোটা অংকের অর্থ দিয়েছিল বলে তথ্য পেয়েছে। এমনকি পাকিস-ানি নাগরিক একজন মহিলাকে ওই চ্যানেলের পরিচালক হিসেবে রাখা হয়। এসব কাজের মধ্যস'তা করেছিলেন তৎকালীন এনএসআই ডিজি ব্রিগেডিয়ার আবদুর রহিম। তার দেয়া কিছু অ্যাসাইনমেন্ট পালন করেন পরিচালক সাহাবউদ্দিন। এনএসআই’র অর্থ, গাড়ি ও লোকবল ব্যবহূত হয় এসব কাজে। সাহাবউদ্দিন নিজে বিমানবন্দর থেকে ইয়াকুবের ভাতিজা সালমান ইকবালসহ দু’জনের প্রতিনিধি দলকে বিমানবন্দর থেকে অভ্যর্থনা জানিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসেন এবং তাদের সঙ্গে শলাপরামর্শ করেই অস্ত্র চালান খালাসের নীলনকশা তৈরি করা হয়।বৃহস্পতিবার আবদুর রহিমকে টিএফআই সেলে নিয়ে গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে এসব জেরার মুখোমুখি হতে হয়। সূত্র জানায়, সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদকালে লজ্জায় মাথানত করে থাকছেন। কোন প্রশ্নের উত্তরে হ্যাঁসূচক আবার কোন কোন ক্ষেত্রে নাসূচক মাথা নাড়ছেন। সাবেক পরিচালক সাহাবউদ্দিনকে তার বস আবদুর রহিমের মুখোমুখি করার প্রস'তি চলছে। সেই সঙ্গে এনএসআই’র সাবেক আরেক মহাপরিচালক রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীকেও টিএফআই সেলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইতিমধ্যে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলার রহস্য উদঘাটনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ বলেছেন, রাষ্ট্রীয় ম্যাকানিজমে থেকে যারা অস্ত্র চোরাচালানের মতো ভয়ংকর কাজ করেছেন তাদের কোন ক্ষমা নেই। তদনে- যতদূর যেতে হয় সরকার তার সবকিছুই করবে। তদন-কারী সূত্রে জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রভাবশালী ব্যক্তি হারিস চৌধুরী, হাওয়া ভবনের কর্ণধার সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, শিল্পমন্ত্রী জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামী ও বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার নানা কানেকশন বের হতে শুর" করেছে। তবে এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করে সত্যতা উদঘাটনের পরই আইনগত ব্যবস'া গ্রহণ করা হবে বলে সূত্র জানায়। ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানে কার কতখানি সম্পৃক্ততা তা নির্ণয়ের কাজ চলছে। তবে এদের সঙ্গে দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এআরওয়াই’র কানেকশনের বিষয়টি ইতিমধ্যেই অনেকটা খোলসা হয়েছে। এমনকি আবদুর রহিমের সঙ্গে উলফার সামরিক প্রধান পরেশ বড়-য়ার বৈঠকেরও চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। ওই বৈঠকে একটি বিদেশী দূতাবাসের একজন হাইকমিশনার ও প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা উপসি'ত থাকার বিষয়েও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। উলফা নেতা পরেশ বড়-য়া ও অনুপ চেটিয়ার সঙ্গে অস্ত্র চালানের কোন কোন স-রে কে কে সরাসরি জড়িত ছিল, কোথায় কবে কার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে, এসব বৈঠকে কারা ছিল তার সবকিছুই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দারা।সূত্র জানায়, ভয়াবহ এসব তথ্য পাওয়ার পর গোয়েন্দারা আবদুর রহিম ও রেজ্জাকুল হায়দারের ব্যক্তিগত কম্পিউটার জব্দ করার সিদ্ধান- নেয়। তারা বৃহস্পতিবার রেজ্জাকুলের ডিওএইচএসের বাসা এবং রহিমের ধানমণ্ডির বাসা থেকে কম্পিউটার, পাসপোর্ট, মোবাইল ফোন ও গুর"ত্বপূর্ণ কাগজপত্র জব্দ করে। সাবেক দুই গোয়েন্দা কর্মকর্তার কম্পিউটার হার্ডডিস্ক এখন গোয়েন্দাদের হাতে। তদন-কারী সূত্রে জানা গেছে, এনএসআই’র সাবেক পরিচালক সাহাবউদ্দিন ১৫ মে চট্টগ্রামের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের পর রহিম ও রেজ্জাকের সম্পর্কে নানা তথ্য বেরিয়ে আসে। তাদের প্রথম দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে করা হলে প্রকৃত তথ্য আড়াল করার চেষ্টা চালায়। এসব তথ্যের সত্যতা নির্ণয়ের জন্য বুধবার রহিমকে আরও ৬ দিনের রিমান্ডে নিয়ে টিএফআই সেলে নিয়ে আসা হয়।গোয়েন্দারা জানান, দুবাইয়ের চোরাচালানভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এআরওয়াই গ্র"পের সঙ্গে আবদুর রহিম একাধিকবার বৈঠক করেছেন। এদিকে রেজ্জাকুল হায়দার ও তারেক রহমান অঘোষিত সফরে দুবাই গিয়েছিলেন। এআরওয়াই সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আত্মীয়ের সঙ্গে সিএসবি চ্যানেল প্রতিষ্ঠায় বড় ধরনের বিনিয়োগ করেছিল বলেও তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। সূত্র জানায়, আবদুর রহিম দেশ-বিদেশে সফরের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি এআরওয়াই গ্র"পের সঙ্গে বৈঠকের কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, ওই বৈঠক অস্ত্র চোরাচালান সম্পর্কিত নয়। গোয়েন্দারা জানান, রহিমের ওই গ্র"পের সঙ্গে বৈঠকের অন্য কোন কারণ রয়েছে কিনা তিনি তা বলেননি। ফলে সাবেক পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার সাহাবউদ্দিনের দেয়া তথ্য অধিক গুর"ত্ব বহন করছে। সাহাবউদ্দিন স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন, ২০০৪ সালে অস্ত্র চোরাচালানের আগে ২০০৩ সালে এআরওয়ই’র পরিচালক পাকিস-ানি নাগরিক সালমান ইকবাল ও তার এক সহকর্মী বাংলাদেশে আসেন। ওই সময় আবদুর রহিমের সার্বিক ব্যবস'াপনায় এনএসআই’র গাড়ি ব্যবহার করে একটি টিভি চ্যানেল প্রতিষ্ঠার জন্য সাইট পরিদর্শন করেন। ওই দু’জন ফিরে যাওয়ার কিছুদিন পর আবদুর রহিম দুবাই সফরে যান। সেখান থেকে টিভি চ্যানেলের সার্বিক পরিকল্পনা নিয়ে দেশে ফেরেন। সূত্র জানায়, দুবাইভিত্তিক কোম্পানি এআইওয়াই’র পাকিস-ান, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে ৮টি টিভি চ্যানেল রয়েছে। এ ব্যাপারে আড়ালে তাদের বির"দ্ধে স্বর্ণ, মুদ্রা চোরাচালান ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ কোম্পানি থেকে আবদুর রহিম একটি উন্নতমানের মোবাইল মনিটরিং সিস্টেম ও ৪০ লাখ পাউন্ড উপঢৌকন পান বলে জানা গেছে।সূত্র জানায়, এছাড়া আবদুর রহিমের উলফা কানেকশনের তথ্যও পাওয়া গেছে। পরেশ বড়-য়া ও অনুপ চেটিয়ার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। এমনকি আবদুর রহিম অসুস' হয়ে একবার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি হলে অনুপ চেটিয়া সেখানেও তাকে দেখতে গিয়েছিলেন বলে তথ্য বেরিয়ে আসছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাবেক একজন শীর্ষস'ানীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তার কাছ থেকে ১/২ দিনের মধ্যে জটিল এসব তথ্যের স্বীকারোক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে নানা কৌশল অবলম্বন করা হ"েছ। পর্যায়ক্রমে আরও গুর"ত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।তদন-কারী সংস'া সিআইডি সূত্র জানায়, রিমান্ডে সাবেক তিন এনএসআই কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য, টিএফআই সেলে আবদুর রহিমের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হবে। ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাজনৈতিক নেতাদের যেসব নাম পাওয়া যাবে সে বিষয়ে সরকারকে অবহিত করা হবে। সরকারের সিদ্ধান- অনুযায়ী ব্যবস'া গ্রহণ করা হবে। সূত্র বলেছে, এনএসআই’র সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীকে ঢাকায় এনে জিজ্ঞাসাবাদের মধ্য দিয়ে ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুর রহিমের বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করা হবে। প্রয়োজনে এ দু’জনের সামনে এনএসআই’র পরিচালক সাহাবউদ্দিনকেও মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, দশ ট্রাক অস্ত্র চালান আনার নেপথ্য হোতা হিসেবে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের নীতিনির্ধারকদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়ার পর সিআইডি টিএফআই সেলে এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিমকে জিজ্ঞাসাবাদের ওপর জোর দি"েছ। সাহাবুদ্দিনের দেয়া তথ্যে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের নীতিনির্ধারকদের বেশ কয়েকজনের নাম রয়েছে বলে সিআইডি সূত্র জানিয়েছে। রিমান্ডে নিয়ে এনএসআই’র সাবেক ডিজি আবদুর রহিমকে জিজ্ঞাসাবাদকালেও একই ধরনের তথ্য পাওয়ায় সিআইডি আশাবাদী, এবার ওই অস্ত্র চালানের ঘটনা কথিত ‘উপর মহল’ এবং ‘নির্দেশদাতা’র নামধাম, পরিচয় মিলবে। অস্ত্র চালান আনায় তাদের ভূমিকা এবং সংশ্লিষ্টতার ধরন উদ্ঘাটিত হবে।চট্টগ্রামে তিনদিনের রিমান্ডে আবদুর রহিমের দেয়া বেশকিছু গুর"ত্বপূর্ণ তথ্য টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদে যাচাই করা হ"েছ বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। আবদুর রহিমকে ঢাকায় টিএফআই সেলে নেয়া হলেও এনএসআই’র আরেক সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীকে এখনও এ সেলে প্রেরণ করা হয়নি। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম কারাগারে রয়েছেন। দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার সুপারভাইজার ও সিআইডি চট্টগ্রাম জোনের সুপার মোহাম্মদ মুসলিম শুক্রবার যুগান-রকে জানান, রেজ্জাকুল হায়দারকে টিএফআই সেলে প্রেরণের দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়নি এবং এনএসআই’র তিনজনকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারেও চূড়ান- সিদ্ধান- হয়নি। গোয়েন্দা সংস'ার শীর্ষ কমকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে দশ ট্রাক অস্ত্র চালানের সঙ্গে বহুল আলোচিত হাওয়া ভবনের কানেকশন, তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমানের সম্পৃক্ততার বিষয়টিও উঠে এসেছে। তবে ঘটনার সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের নীতিনির্ধারকরা জড়িয়ে যা"েছন- এটা আঁচ করতে পেরে উভয় দলে চাপা আতংক ও অসি'রতা টের পাওয়া যা"েছ। ২০ মে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব নজর"ল ইসলাম খান বলেছেন, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার নতুন তদনে-র টার্গেট বিএনপি।এদিকে বৃহস্পতিবার রংপুর টাউন হলে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় পরিষদের কনভেনশনে খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস'াপনা মন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকও বলেছেন, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের নীতিনির্ধারকরা জড়িত। তাদের সায় না থাকলে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস'া এনএসআই প্রধানরা এ অপকর্ম করতে সাহস পেতেন না।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দশ ট্রাক অস্ত্র চালান আনা ও খালাস কার্যক্রমে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহারের পেছনে তৎকালীন কোন কোন মন্ত্রী-এমপি ও নেতার ভূমিকা ছিল, সে ব্যাপারে এনএসআই’র দুই সাবেক ডিজিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরই সূত্র ধরে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুর রহিম দুবাই গিয়ে এআরওয়াই গ্র"পের প্রধানের সঙ্গে বৈঠকের কথা স্বীকার করলেও সেখানে তারেক রহমানের উপসি'তির বিষয়টি এড়িয়ে যান। সিআইডি কর্মকর্তারা নিশ্চিত, দশ ট্রাক অস্ত্র চালান আমদানির সঙ্গে জড়িত দেশী-বিদেশী ব্যক্তি, মন্ত্রী-এমপিসহ সংশ্লিষ্টদের সম্পৃক্ততা উদ্ঘাটিত হবে। মামলার অধিকতর তদন- শুর"র পরপরই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিল্প সচিব নুর"ল আমিন, সিইউএফএলের সাবেক এমডি মোহসিন উদ্দিন তালুকদারসহ অন-ত ৩০ জন ব্যক্তির বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়। মূলত উইং কমান্ডার সাহাবুদ্দিন টিএফআই সেলে দশ ট্রাক অস্ত্র চালান আমদানির সঙ্গে তারেক রহমানের জড়িত থাকার বিষয়টিও উত্থাপন করলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। এ তথ্যের সূত্র ধরে নেপথ্যে জড়িত তৎকালীন সরকারের অন্য নীতিনির্ধারকদের ভূমিকা উদঘাটনে সাবেক এনএসআই ডিজি রহিমকে টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হ"েছ। শুক্রবার ছিল জিজ্ঞাসাবাদের দ্বিতীয় দিন। সিআইডি সূত্র জানায়, দশ ট্রাক অস্ত্রের উৎস, গন-ব্য, অর্থদাতা, নিরাপদে চালান খালাসের নির্দেশদাতা ও পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত হোতাদের চিহ্নিত করাসহ ৫টি বিষয়কে সামনে রেখে তদন- চলছে। চট্টগ্রাম মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন আহাম্মদ শুক্রবার যুগান-রকে বলেন, মামলাটির তদন- এখন গুর"ত্বপূর্ণ পর্যায়ে রযেছে। এদিকে শুক্রবার মামলার তদন-কারী কর্মকর্তা সিআইডি’র এএসপি মনির"জ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদে আবদুর রহিমের বেশ কিছু তথ্য প্রাপ্তির কথা স্বীকার করলেও তদনে-র স্বার্থে তা জানাতে রাজি হননি।