হাসিনার কাঁধে বন্দুক রেখে খালেদার টিপাইপাখী শিকার
হাসিনার কাঁধে বন্দুক রেখে খালেদার টিপাইপাখী শিকার
সোনা কান্তি বড়ুয়া
জনতা সহ আমরা সাবেক অযোগ্য প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিচার চাই। কারন আজ হাসিনার কাঁধে জালিম জমানার বন্দুক রেখে খালেদার রাজনৈতিক ফায়দা লুটে নিতে “টিপাইমুখ বাঁধ” নামক আন্দোলনের গভীর ষড়যন্ত্র রচনা করা হয়েছে।
২০০৬ সালে খালেদা জিয়া কেন ভারত সরকারের কাছে “টিপাইমুখ বাঁধ” বন্ধ করতে রাজনৈতিক প্রস্তুতি নেননি। টিপাইমুখ বাঁধে খালেদার দেশ বিক্রির ছাতায়, আইনের শাসনের মাথা কই? বিগত ২০০৬ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া “দিল্লীর টিপাইমুখ বাঁধ প্রকল্প বাস্তবায়নে ইন্টারন্যাশনাল টেন্ডার আহ্বানের” সময় চুপ থাকার কারন জনতা জানতে চায়। মহারানী খালেদার পেঠে ভোগ, মুখে লাজ ছিল কি? আহা ! রাজনীতির বাজারে নেকামি করার জন্য আর জায়গা খুঁজে পাওয়া গেল না। ক্ষমতার সিংহাসনে বসে দুর্নীতির মাধ্যমে টাকা আনা পাই কামানো সহজ কিন্তু দেশের মঙ্গলের জন্য ভারত সরকারের বিরুদ্ধে টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে একটা টু শব্দ ও বিএনপি বা জোট সরকার করেনি। ১৯৮০ সালের পর থেকে মনিপুর রাজ্যের সচেতন জনতা সহ ২০টি সংগঠন ভারত সরকারের বিরুদ্ধে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মানের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রসঙ্গতঃ খালেদা জিয়ার পুরানো রাজনীতির ফর্মূলা “ দেশ বিক্রীর” সাথে ভারতের টিপাইমুখ বাঁধ মিলে গেছে।
বঙ্গবন্ধু কন্যা সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাষ্ঠ্রক্ষমতা থেকে সরাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেন, “আপনার সাথে মে হুঁ না। আমি আছি।” খালেদার হারানো গৌরব ফিরে পাবার এমন মোক্ষম সময় আর আসবে না। বিগত কয়েক যুগের রাজনৈতিক লোভ লালসার পাপ ঢাকতে “ভারত বিরোধী” শ্লোগান দিয়ে বাংলাদেশে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আই এস আই কে সুযোগ দেবার এই উপযুক্ত সময়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সরাসরি ভারত সরকারের সাথে টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে রাজনৈতিক আলাপ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে মায়ের চেয়ে ও মাসির দরদ এতো বেশী কেন? জনতা খালেদাকে হারে হারে চেনার পর তাঁর চালাকি ধরে ফেলেছে। ফারাক্কা বাঁধ ও টিপাইমুখ বাঁধ অশু্দ্ধ হলে “কাপ্তাই বাঁধ” শুদ্ধ হল কেন? চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী। আজ ও বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদছে।
টিপাইমুখ বাঁধ প্রসঙ্গ এবং কর্নফুলির কান্না ঃ
অমানবিক আইনে সর্বনাশা পাকিস্তানী আমলে ১৯৬০ সালের সেদিন শত শত বছরের ঐতিহ্য ও ইতিহাস নিয়ে পুরানো রাঙামাটি শহর কাপ্তাই বাঁধের পানির নীচে চলে গেল। স্রোতস্বিনীর বুকে পাহাড়ী জনতার অশ্রু নিয়ে কর্নফুলির কান্না এখন ও থামেনি। ১৯৬০ সালে কোন আইনে পাকিস্তান সরকার পাহাড়ীদের বেঁচে থাকার অধিকার ধ্বংস করতে রাঙামাটি শহর পানির তলে ডুবিয়ে দিয়ে কাশ্মরীরের ও প্যালেষ্ঠাইনের মানুষের অধিকারের জন্য কুমিরাশ্রু বর্ষন করে? মানুষ জাতি পরম করুনাময় আল্লাহের আমানত। পাহাড়ীদের মানবাধিকার আছে কি? আইনের শাসনে তো পুরানো রাঙামাটি শহর ধ্বংস ও শত্রু সম্পত্তির কথা লেখা ছিল না। টিপাইমুখ বাঁধে তো বাংলাদেশের কোন শহর পুরানো রাঙামাটি শহরের মতো পানির নীচে তলিয়ে যায়নি। তবে অন্যায়কে সহ্য করা আইনের শাসনে ঘোরতর অন্যায়। ধর্মের দোহাই দিয়ে কাপ্তাই বাঁধ দেবার সময় তৎকালিন পুর্ব পাকিস্তানে (বাংলাদেশে) গণ আন্দেলন হয়নি। কারন পাহাড়ীরা মরুক, বাঙালিরা ঠিক আছে। দশ বছর পর ১৯৭১ সালে জামাত নামক ইসলামী পিশাচগণের যন্ত্রনায় বাঙালি ভাই বোন দুঃখের দহনে করুন রোদনে তিলে তিলে ক্ষয় হবার পর যুদ্ধাপরাধীদেরকে হারে হারে টের পেয়েছেন। তখন খুব দেরী হয়ে গেছে। কাপ্তাই বাঁধে সব হারানো পাহাড়ী জনসাধারনঃ একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হবার ১০ বছর আগে পাকিস্তান সরকার ইচ্ছা করে গুঁড়িয়ে দিয়েছে চাকমা রাজবাড়ী সহ পুরানো রাঙামাটি শহর, মারমা, মুরং, খ্যাং সকল পাহাড়ীদের মাথার উপরে থাকা এক চিলতে টিনের ছাউনি দেয়া বসত বাড়ি। পানির অতল তলে তলিয়ে দিয়েছে গ্রাম্য বাজার, লোকালয়। কিশোরির চিরচেনা স্কুল, বুদ্ধমন্দির, বিভিন্ন ধর্মের উপাসনালয় এবং স্বপ্নের সিঁড়ি সব কিছু সলিল সমাধি। দারিদ্র পীড়িত ও জামাত নির্যাতিীত পাহাড়ী মানুষগুলোর দুঃখ দুর্দশার বিষাদ সিন্ধু এক বেদনার্ত কাব্যচিত্রে পরিনত হয়েছে গোটা রাঙামাটি জেলা। চারিদিকে ছিল শুধু মানুষের আহাজারি, হাহাকার। পাকিস্তান যে বাংলাদেশের সর্বনাশ করবে তার প্রমান দশদিক জুড়ে এবং তছনছ করে দিয়েছে পাহাড়ীদের সংসার। যেন তার পেছনে লেগেই রয়েছে জামাত বিএনপি সহ জোট সরকারের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি। তাকিয়ে দেখুন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে যু্দ্ধ করে ইরান ও ইরাকের কি লাভ হয়েছে? পাকিস্তান সিন্ধু নদ সহ বিভিন্ন নদীর সমস্যা ভারতের সাথে মেটাতে পারলে গঙ্গার “ফারাক্কা বাঁধ” সমস্যা নিয়ে তোলপাড় করে সতীনের ছেলের হাতে সাপ দিয়ে কেটে পড়েছে। যত দোষ নন্দঘোষদের। পাকিস্তান আমলে “কাপ্তাই বাঁধ” তৈরী করার সময় দেশে আজ “টিপাইমুখ বাঁধের” মতো এতো আন্দোলন তো দেশের জনতা দেখেনি। ১৯৬০ সালে চাকমা, মারমা সহ ১৪ উপজাতি মুসলমান নয় বলে পাকিস্তান সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে দেশের রাজনৈতিক দল সমূহের কোন নৈতিক সমর্থন পায়নি। ১৯৭৮ সালে জেঃ জিয়া পাকিস্তানের বাদ বাকী অপকর্মরাশি পার্বত্য চট্্রগ্রামের আদিবাসীদের উপর নির্মম অত্যাচার ও হত্যাকাণ্ড দিয়ে মানবতাকে কলঙ্কিত করে গেল। অন্যায় ভাবে শুধুমাত্র জামাতের ইসলাম ধর্মকে প্রশ্রয় দেবার ফলে দেশে শত্রু সম্পত্তি সহ ধর্মের অপব্যবহার হবার ফল কওমি মাদ্রাসায় রাষ্ঠ্রদ্রোহী সন্ত্রাসের ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশে তালেবান জন্ম নিচ্ছে। জামাতের নেতাগণ জনপ্রিয় চিত্র নায়িকা সুচিত্রা সেনের বাড়ী দখল করে পাকি মার্কা শত্রু সম্পত্তি আইনকে বাস্তবায়িত করে ফেলেছে। পাকিস্তানের সামরিক কর্মকর্তাগণ ইসলামধর্মকে অপব্যবহার করে বাংলাদেশের সর্বনাশ করার পর ও আবার নতুন শত্রুতা শুরু করে দিয়েছে। গত সপ্তাহে ভারতের দুর্ধর্ষ জঙ্গী ড. মুফতি ওবায়দুল্লাহর (জনকন্ঠ, ১৮ই জুলাই, ২০০৯) ঢাকায় গ্রেফতার হলো এবং তার স্বীকারোক্তিতে পাকিস্তানের জঙ্গী সংগঠন লস্কর - ই তৈয়বা ও সামরিক গোয়েন্দা আই এস আইয়ের ১৫ বছরে বিপুল অর্থ ব্যয়ে ৫টি কওমি মাদ্রাসায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী ট্রেনিং দিয়ে “জিহাদী ভাই” নামক রাষ্ঠ্রদ্রোহী সন্ত্রাসী দল তৈরী করে চলেছে।
যুদ্ধাপরাধীরা ধর্মকে ঢাল তলোয়ারের মত ব্যবহার করছেঃ
এই প্রসঙ্গে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অভিশাপে ২০০১ সালে নির্বাচনের পর সংখ্যালঘু জনতার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল জোট সরকারের মদমত্ত রাজনৈতিক টর্নেডো। একদিকে যেমন মানুষের রক্তে হোলিখেলা হলো মাটির উপর তেমনি আরেক দিকে মা বোনের ইজ্জত পর্যন্ত অব্যাহতি পেলোনা ধর্মের ঠিকাদারদের ভোগ লালসা থেকে। মানুষের দরবারে অত্যাচারিতের দুঃখের দহনে করুণ রোদনভরা ফরিয়াদে বাংলার আকাশ বাতাস কেঁদে কেঁদে গুমরে উঠেছিল। মৌলবাদী জঙ্গীরা নারী, আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদেরকে আক্রমণ করে । ধর্ম নিয়ে ভয়ঙ্কর রাজনীতি করতে গোলমেলে আল্লাহ রসুল বলতে বলতে একাত্তরের রক্তাক্ত প্রান্তরের ছবি দেখা যায় আজকের বাংলাদেশ জে এম বি সন্ত্রাসী দলে। গত ৭ বছরের মধ্যে বিএনপির ৫ বছর এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ২ বছরের দুর্নীতির বিচার কবে শুরু হবে? পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা আই এস আইয়ের মতো জোট সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা ডি জি এফ আই।
নিযামি খালেদার শাসন আমলের পুলিশের আলি আকবর বা কোহিনুর ডি এফ আইয়ে রেখে দেশের উন্নতি হবে কি? ধর্মের নামে একাত্তরে মতো আজ ও রক্তগঙ্গার স্রোত দেশে বহে কেন? বাংলাদেশের ”মসজিদ মিশন”, জামাতুল মুজাহিদীনেরা ও পাকিস্তানের লাল মসজিদের খতিবের চেলা। আমাদের সময় (১০ই জুলাই, ২০০৭) পত্রিকায় হেডলাইন সংবাদ ছিল,”জেহাদের প্রস্তুতি নিতে সারা দেশে প্রচার পত্র বিলি করেছেন নিষিদ্ধ হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামির অন্যতম নেতা মুফতি মুনসূরুল হক। তার লেখা বইয়ের নাম ”আফগান জিহাদ।” ”আশরাফুল মাখলুকাতদের” রক্তপাত ও আদম সস্তানদের হত্যাযজ্ঞ প্রসঙ্গে হুমায়ূন আজাদের মতবাদটি প্রনিধানযোগ্য, “মানুষ ধর্ম দ্বারা আক্রান্ত, এবং বিশেষ ধর্মের মানুষ আক্রান্ত ঐ ধর্মের মানুষদের দ্বারা, মুসলমান আক্রান্ত মুসলমানের দ্বারা, হিন্দু হিন্দুর দ্বারা, তাই মুসলমানের হাত থেকে মুসলমানকে , হিন্দুর হাত থেকে হিন্দুকে বাঁচানো দরকার। ... এই অন্ধকার থেকে মুক্ত হয়ে মানুষকে হয়ে উঠতে হবে মানুষ।” কারণ সম্প্রতি বাংলাদেশের” মসজিদ মিশনের সভাপতি প্রিন্সিপ্যাল জয়নাল আবেদীন (ভোরের কাগজ, জুলাই ৬, ২০০৭) সহ জামাত নির্বাচন কমিশনের উপর ভর হচ্ছে। জামাত পাকিস্তান পন্থী এবং বাংলাদেশ অস্তিত্ব বিরোধী। ইসলামাবাদের রক্তাক্ত লাল মসজিদের নীল নকশায় দেশের ”মসজিদ মিশন” প্রতিষ্ঠিত না তো? বাঙ্গালির দুর্ভাগ্যে পায়ের নিচের জমিকে সর্বগ্রাসী ধর্মান্ধরা লুট করে নিয়ে গেছে। ধর্ম নিয়ে রাজনীতির মস্তক বিক্রয়ে তাদের বিবেকের দংশণ নেই। জেঃ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক নন, বঙ্গবন্ধুই স্বাধীনতার একমাত্র ঘোষক। খালেদা জিয়ার জোট সরকারের লজ্জা শরমের বালাই নেই। রাজনীতির নেশায় অন্ধ হয়ে জোট সরকার আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করেছে। জনতা সহ আমরা জোট সরকারের বিচার চাই। একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম প্রহরে জামাত ও মৌলবাদীরা পাকিস্তানীদের বন্ধু হয়ে আত্মঘাতী ইসলামিক মৌলবাদী গোষ্ঠি ঘরের শত্রু বিভীষণ রুপে রাজাকার নামে বাংলাদেশ ও বাঙালি হত্যাযজ্ঞে স্বাধীনতার বেঈমানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। দেশে নিরাপদ মাতৃত্ব ও মানবাধিকার রক্ষার জন্যে শান্তিকামী জনতা বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্টের কাছে সংবিধান লঙ্ঘনকারী মৌলবাদীদের বিচার চায়। কারন সাবেক সামরিক শাসকগণ রাষ্ঠ্রদ্রোহী ছিলেন এবং আজ ও রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অন্যতম পুরোধা ও দুর্নীতির নাটের গুরু জেঃ এরশাদ রাজনীতির নামে মানবাধিকারের মস্তক বিক্রয় করে চলেছে দিনের পর দিন। ১৯৭২ সালের ৪ই নভেম্বর বাংলাদেশ গণপরিষদ গৃহীত এবং ১৯৭২ সালের ১৪ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রথম খন্ডে প্রকাশিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮ (২) অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে, “রাষ্ঠ্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী পুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন।” গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যে সংবিধান রচিত হয়েছিল তাতে এই নতুন রাষ্ট্রে চারটি স্তম্ভের উল্লেখ আছে যাহা জামাত ও ”মসজিদ মিশন” মানে না। যথা ঃ (১) গণতস্ত্র (২) জাতীয়তাবাদ (৩) সমাজতস্ত্র এবং (৪) ধর্মনিরপেক্ষতা। অদূরদর্শী বি এন পির রাজনৈতিক নেতাগণ ধর্ম ব্যবসায়ীদের সাথে হাত মিলিয়েছে এবং সাম্প্রদায়িক স্বার্থে আবিলতায় পঙ্কিল হয়ে আছে বাংলার ধর্মব্যবসায়ীদের মনমানস-জগত। সময় থাকতে সাধু সাবধান। বর্তমান সরকার যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী খেলাফতে মজলিসের ধর্মান্ধ ষড়যন্ত্রে প্রবেশ না করে। বার বার অনেকবার পবিত্র বায়তুল মোকাররম সহ ধর্মস্থানে রাজনীতির মস্তক বিক্রয় হবে কেন? মানব মনের লোভ দ্বেষ মোহে কোন ধর্মের অস্তিত্ব নেই। ধর্মের ঘৃতে রাজনীতির মধু মিশে বিষক্রিয়া হয় এবং সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার মৌলবাদের ১১ টা মিছিলে ২০০ জন সাংবাদিক আহত এবং নারীমুক্তি নিয়ে জঘন্য টানা হেঁচড়া পর ও মৌলবাদের বিচার করলেন না। কারণ ”চিনির বলদ চিনি টানে, চিনে না চিনি।” শান্তিময় ধর্মকে তড়োয়ালের মতো ব্যবহার করে জনগনমনের ধর্মনিরপেক্ষতাকে সমূলে ধংস করে রাজনীতির সিংহাসন অধিকার করতে ধর্মের ঠিকাদারগণ, রাজনীতিকরা ও সামরিক নেতৃবৃন্দ তান্ডবলীলায় পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ সহ বিশ্বে মানবতার অনিষ্ঠ সাধন করে চলেছে দিনের পর দিন। মানব সন্তানের রক্তে রাঙানো পরম করুনাময় আল্লাহের ঘর বায়তুল মোকাররম মসজিদে কারবালার বিষাদ সিন্ধু থমকে আছে কেন ইতিহাসের আলোকে সপ্তদশ শতাব্দীতে মহাজ্ঞানী কোপার্নিকাস সহ কতিপয় বিশ্ববিখ্যাত বৈজ্ঞানিক এবং ১৬৩৮ সালে মহামহোপধ্যায় মহাজ্ঞানী গ্যালিলিও ক্যাথোলিক ধর্মদ্রোহীতার শিকার হয়ে ছিলেন। কারন মানব সভ্যতার ইতিহাসে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত চক্রের পৈচাশিক উন্মত্ততার মতো মৌলবাদী জঙ্গী গোষ্ঠী বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারা ও আলোকিত মানবাধিকারের (এনলাইটেনমেন্ট) দুশমন। টলেমির রচিত ২০০০ হাজার বছরের পুরানো নীতিমালায় “সূর্য পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে” ভুল প্রমান করে কোপার্নিকাস গভীর গবেষণার পর মহামূল্যবান বৈজ্ঞানিক গ্রন্থ রচনা করেন। তারপর ১৬৩৮ সালে গ্যালিলিও “ডায়লগ কনসার্নিং টু নিউ সায়েন্স” লিখে প্রমান করেছেন, “সূযই সৌর জগতের কেন্দ্র এবং পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে।” ধর্মের কুসংস্কার পরিহার করার পর জাতি, সমাজ ও রাষ্ঠ্র জ্ঞান - বিজ্ঞানে সমৃদ্ধিশালী হয়ে উঠে। জামায়াতীদের ষড়যন্ত্রে রক্তাক্ত ২০০৬ সালের ২৮শে অক্টোবর। কেলেঙ্কারির মূলে ধর্মের টুপি পরে দুরভিসন্ধি “জামায়াতের নর নারী হত্যাযজ্ঞে মানবতা বিরোধী ও রাষ্ঠ্র্রদ্রোহী রাজনীতি।” রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে ১/১১ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হ’ল জোট সরকারের ডিগবাজি ও পাপের প্রায়শ্চিত্তের ফল। পাপ করেছিল জোট সরকার, ভোগ করে অপাপবিদ্ধ জনতা। ২০০৬ সালের ২৮শে অক্টোবরে জোট সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বায়তুল মোকারমের উত্তর গেঠের সামনে থেকে জামায়াত শিবির ক্যাডারদের বৃষ্ঠির মতো ছোড়া গুলি থেকে বাঁচতে জনতা লগি বৈঠা নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ২৮ জন নিহত ও অনেক নর নারী আহত হলেন। ঢাকার বায়তুল মোকারম আল্লাহের ঘর কি পাকিস্তানের লাল মসজিদ হবে? ছিঃ! জোট সরকার ছিঃ! জনতাকে হত্যা করে ক্ষমতা পেতে চায় বিএনপি জামায়াতের জোট সরকার। দেশ কি তাদের জমিদারি? ওলামা মাশায়েকগণের সর্বগ্রাসী লোভের লোলায় নারী উন্নয়ন নীতিমালা বন্ধ করতে কোন ধর্মের অস্তিত্ব নেই। মৌলবাদীরা পবিত্র ইসলাম ধর্মের নাম দিয়ে হিংসা উন্মত্ত মন মানসিকতায় রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেগ ইউনিয়নে আদিবাসী হত্যা ও ধর্ষণের প্রতিবাদে ছয়মাস আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে মানববন্ধন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত করেন। (দৈনিক ইত্তেফাক, এপ্রিল ২৩, ২০০৮ ) উক্ত সংবাদ পড়ার সময় চট্টগ্রামের গান মনে পড়ে গেল, “চোরাইয়া চুরি করি মসজিদে ঘুমায়। অথবা, হুজুর বদ্দা! তোরে কিয়ে নকুলায়? রাতের বেলা ওয়াচ কর / দিনের বেলা সীমা টেল।” সরকার কি দুর্নীতির অচীন পাখীর পায়ে বেরি ঁেবধে দিয়ে দুর্নীতির কারখানা বন্ধ করতে পারবেন? লেফটানেন্ট জেনারেল এরশাদ প্রথমে ক্ষমতায় এসে দেশের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করে ছিলেন। তারপর কি হ’ল আমরা সবাই জানি। ক্ষমতার নেশা তাদের কিছুতেই ছাড়ে না। এমনতরো নেতা নেত্রীর কারনে বুড়িগঙ্গার অমৃত ধারা আজ হলাহল বিষে পরিপূর্ণ এবং দেশের নদী নালা শুকিয়ে ভবিষ্যতে আরবের মতো মরুভূমি হবে। তাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হয়ে দেশের রাজনীতিতে শুধু রাজাকারি ষড়যন্ত্র চলেছিল। সদাচারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখা পড়া শিখে বড় হতে হয়। বিদ্যা অমূল্য ধনের অর্থ কি? মহাভারতের রাজা ধৃতরাষ্ঠ্রের মতো ক্ষমতার লোভে সামরিক রাষ্ঠ্রপতিগণ ধর্মভিত্তিক রাজনীতিতে অন্ধ হয়ে স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করেছে। জনতা সহ আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতকারী জোট সরকারের বিচার চাই। প্রত্যেক মানব সন্তানই আল্লাহের আমানত। ধর্মের নামে মনুষ্য হত্যা অমানবিক। সর্বগ্রাসী রাজনৈতিক ধর্মীয় জঙ্গীগোষ্ঠিরা আল্লাহ, গড এবং ভগবানের নামে ”রাজনীতির ট্রেড মার্ক ” দিয়ে ভোট ও টাকা কামানোর ধান্ধায় মুহ্যমান এবং ১৪ই আগষ্ঠ ১৯৪৭ সালে একমাত্র মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার জন্যেই অখন্ড ভারত দ্বিখন্ডিত হয়ে পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল। জনগণের মঙ্গল না করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনারমূলে কুঠারাঘাত করেছে জেঃ জিয়া ও জেঃ এরশাদ সামরিক শাসকগোষ্ঠির ধর্মভিত্তিক রাজনীতি। দুই হাজার নয় বছর আগে ইহুদি পুরোহিতগণ ধর্মের টুপি মাথায় দিয়ে রাজনীতির অন্ধগলিতে মহামানব যীশুখৃষ্ঠকে হত্যা করার কথা সবাই জানেন। তেমনি বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধী জামাতিরা (১৯৭১ থেকে ২০০৮ ) ধর্মের টুপি মাথায় দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা ও জাতিকে হত্যা করেছে দিনের পর দিন। ধর্মের জাদুতে পাকিস্তান ও সৌদী আরব আমাদের রাষ্ঠ্রক্ষমতার চোখ বেঁধে দিয়েছে। মানবাধিকারই মানুষের একমাত্র ধর্ম।
লেখক মানবতার প্রবক্তা
সোনা কান্তি বড়ুয়া প্রবাসী খ্যাতিমান গ্রন্থকার, বিবিধ প্রবন্ধ প্রণেতা ও কলামিস্ট।