বিশ্বমন্দা মোকাবিলার আহ্বানের মধ্য দিয়ে ন্যাম সম্মেলন শু্রু


বিশ্বমন্দা মোকাবিলার আহ্বানের মধ্য দিয়ে ন্যাম সম্মেলন শুরু
ধনী দেশগুলোর অসমতার কারণে বর্তমান সংকট সৃষ্টি হয়েছে - ক্যাস্ট্রো
যত বড় দেশই হোক, একার পৰে সমস্যা সমাধান সম্ভব নয় - বান কি মুন

।। শারম আল শেখ থেকে বাসস ।।
বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার আহ্বান জানানোর মধ্যদিয়ে বুধবার মিসরের পর্যটন নগরী শারম আল শেখে জোট নিরপেৰ আন্দোলনের (ন্যাম) পঞ্চদশ শীর্ষ সম্মেলন শুরম্ন হয়েছে। ১৪তম ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতি কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল ক্যাস্ট্রো গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫০টি’রও বেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের অংশগ্রহণে এ শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধন ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলন স'লে উপসি'ত হলে মিসরের প্রধানমন্ত্রী হোসনি মোবারক তাকে উষ্ণ স্বাগত জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ মিজারম্নল কায়েস, সাবেক রাষ্ট্রদূত এম জিয়াউদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ন্যাম নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দ্বিপৰীয় বৈঠক ও আনুষ্ঠানিক ফটোসেশনে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে মিসরের পর্যটন নগরী শারম আল শেখে অত্যনৱ কর্মব্যসৱ দিন অতিবাহিত করেন। দিনের মূল কার্যসূচিতে যাওয়ার প্রাক্কালে সম্মেলনে গত সম্মেলনের পর থেকে এ পর্যনৱ মারা যাওয়া ন্যাম নেতৃবৃন্দের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সম্মেলনে রাউল ক্যাস্ট্রো বলেন, বিশ্বের সকল দেশকে অবশ্যই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা নিরসনের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। তিনি বলেন, ধনী দেশগুলোর অসমতা এবং তাদের অর্থনৈতিক ব্যবস'ার কারণেই বর্তমান সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সম্মেলনে অংশগ্রহণ-কারী দেশগুলোর প্রতি একটি নতুন আর্থিক ব্যবস'ার আহ্বান জানিয়ে ক্যাস্ট্রো বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রয়োজন বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে
হবে।’ ক্যাস্ট্রোর বক্তৃতা শেষে মিসরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক সর্বসম্মতিক্রমে ১৫তম ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত হন। মোবারক অধিকতর ভারসাম্যপূর্ণ ও ন্যায়সঙ্গত নতুন আনৱর্জাতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ব্যবস্থাকে গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই সম্মেলন সংলাপের চমতকার সুযোগ এবং ন্যাম সদস্যদের এই শীর্ষ সম্মেলনকে সংহতি জোরদারে কাজে লাগানো উচিত।
জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন সম্মেলনে তার বক্তৃতায় ন্যাম সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সংকট নিরসনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যত বড় দেশই হোক, আর যতো সম্পদই থাকুক, কোন দেশের একার পৰে সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।’ তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্ব পরিসি'তির ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে এবং বিশ্ব উন্নয়ন ও নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নানা জটিল সমস্যা মোকাবেলা করছে। বান কি-মুন বলেন, অভিন্ন সমস্যাসমূহের সমাধানের লৰ্যে বর্তমানে ন্যাম সদস্য দেশগুলোকে অতীতের চেয়ে আরো বেশি ততপর হতে হবে।
ভবিষ্যতে যে কোন ধরনের সমস্যা মোকাবেলায় নিজেদের মধ্যে আরো বেশি ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে অনুষ্ঠানে লিবীয় নেতা মুয়ামমার গাদ্দাফি, ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট গেস্নারিয়া ম্যাকপাগাল অ্যারোইয়ো ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশসমূহের পৰে ডোমিনিকান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট বক্তৃতা করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ন্যাম নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধভাবে বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রতিক্রিয়া মোকাবিলা এবং শানিৱ ও নিরাপত্তার পাশাপাশি উন্নয়নের লৰ্যে আনৱর্জাতিক সংহতির ওপর গুরম্নত্ব আরোপ করেন। দুই দিনের এ শীর্ষ সম্মেলনে ১১৮ সদস্য দেশ নিয়ে গঠিত ন্যাম নেতৃবৃন্দ তাদের আলোচনায় সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য শানিৱ ও উন্নয়নের লৰ্যে আনৱর্জাতিক সংহতি বিষয়ের ওপর আলোকপাত করবেন বলে আশা করা যা"েছ। তারা বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকট, জলবায়ুর পরিবর্তন, মধ্যপ্রাচ্য শানিৱ প্রক্রিয়া, খাদ্য নিরাপত্তা, জ্বালানি ও পারমাণবিক ইস্যু নিয়েও আলোচনা করবেন।
ন্যাম ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে সংস্থটির ১৬টি পর্যবেৰক দেশ এবং ৯টি পর্যবেৰক সংস্থা রয়েছে। ন্যাম জাতিসংঘের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ সদস্য দেশের প্রতিনিধিত্ব করে এবং এসব দেশের মোট জনসংখ্যা বিশ্ব জনসংখ্যা ৫৫ শতাংশ। এ আন্দোলন বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বার্থের সংগ্রামকে তুলে ধরে থাকে।

Popular posts from this blog

THE CONSTITUTION OF THE BANGLADESH AWAMI LEAGUE

ইতিহাসবন্ধনী

Justice order of the day