প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৬ মাস, জাতিসংঘ-স্টেট ডিপার্টমেন্ট-মার্কিন কংগ্রেসের সন্তোষ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের অগ্রগতিতে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৬ মাস
জাতিসংঘ-স্টেট ডিপার্টমেন্ট-মার্কিন কংগ্রেসের সন্তোষ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের অগ্রগতিতে
এনা, নিউইয়র্ক থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের ৬ মাস পূর্তি উপলক্ষে জাতিসংঘ, স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং মার্কিন কংগ্রেস পৃথক পৃথক বিবৃতিতে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের অগ্রগতিতে গভীর সন্তোষ প্রকাশ করেছে। সারাবিশ্বে কর্মরত সাংবাদিকদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে লড়াইরত নিউইয়র্কভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস’ (সিপিজে) স্বাগত জানিয়েছে মুক্ত সাংবাদিকতার পরিবেশ তৈরীর জন্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোভাবকে। উল্লেখ্য যে, ৬ জুলাই বর্তমান সরকারের ৬ মাস পূর্তি হচ্ছে। সে আলোকে বার্তা সংস্থা এনাকে পৃথক পৃথকভাবে উপরোক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা আশা পোষণ করেছেন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের স্বার্থেই বিরোধী দল ও ক্ষমতাসীন জোটের মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপিত হবে। জাতীয় স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সকল মহল ছোটখাটো মতভেদকে পরিহার করবে বলেও আন্তর্জাতিকভাবে প্রভাবশালী সকলে আশা করছেন।জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন এর পক্ষে তার মুখপাত্র ফারহান হক বলেছেন, জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখতে প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রই বদ্ধপরিকর। সে আলোকে বাংলাদেশ সরকারও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে একাগ্রচিত্তে কাজ করে যাচ্ছে বলে আমরা জানতে পেরেছি, এ ধরনের মনোভাবকে প্রশংসা করছে জাতিসংঘ। মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের প্রতিষ্ঠাতা কো-চেয়ার কংগ্রেসম্যান যোসেফ ক্রাউলী বার্তা সংস্থা এনাকে বলেছেন, বাংলাদেশকে সমৃদ্ধশালী করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক আগ্রহকে আমি অভিনন্দিত করছি এবং সামনের দিনগুলোতেও তাঁর অব্যাহত সাফল্য প্রত্যাশা করি। আমি মহাজোট সরকারের প্রতি আহবান রাখছি মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে আরো কার্যকরী করার লক্ষ্যে আরো সংস্কার সাধনের জন্য। একইসাথে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানকে আরো সুসংগঠিত করতে ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে বলে আশা করছি। স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তা এনাকে বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলি দেশের উন্নতির জন্য পরষ্পর সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করতে পারে এমন পরিবেশ খুব দ্রুত তৈরী হবে বলে যুক্তরাষ্ট্র আশা করছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে গতিশীল রাখার স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। কর্মকর্তাটি আরো বলেন, গত ৬ মাসে বাংলাদেশের সামগ্রিক অগ্রগতিতে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় পাশে ছিল, সামনের দিনগুলোতে পারসপরিক সহযোগিতার এ দিগন্ত আরো প্রসারিত হবে বলে আমা করছি। যুক্তরাষ্ট্র সব সময় বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের অগ্রগতিতে সহায়তা করে যাবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ রোধ ও দারিদ্র্র্য বিমোচনেও বাংলাদেশের সাথে একযোগে কাজ করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)’র এশিয়া প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী বব ডায়েট এনাকে বলেছেন, মুক্ত সাংবাদিকতার ব্যাপারে শেখ হাসিনার প্রত্যয়কে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। তবে এখন পর্যন্ত অনেক ক্ষেত্রেই তার সে মনোভাবের পূর্ণ বাস্তবায়ন ঘটেনি। আমরা আশা করছি খুব শ্রীঘ্র সালাহউদ্দিন সুয়েব চৌধুরীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত সকল অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয়া হবে। কুইন্স ডেমক্র্যাটিক ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ব্যবসায়ী আকতার হোসেন বাদল বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আরো উদার হতে হবে বিরোধী দলকে জাতীয় সংসদে যোগদানের ব্যাপারে। বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে জাতীয় সংসদ যেমন কার্যকর হতে পারে না, ঠিক তেমনি রাষ্ট্র পরিচালনায় তারা (শেখ হাসিনা) সফল বলে দাবি করতে পারেন না। ১/১১ এর ষড়যন্ত্রকারীরা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে হয়রানির জন্যে অসংখ্য মামলা করেছেন। সে সব মামলা প্রত্যাহারের ব্যাপারেও শেখ হাসিনাকে একপেশে নীতি পরিহার করতে হবে। ডেমক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় কমিটির সদস্য খোরশেদ খন্দকার শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, দিন বদলের সনদ বাস্তবায়িত করতে গত ৬ মাসের কার্যক্রম প্রশংসার দাবি রাখে। এ ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে প্রতিটি স্তরে জবাবদিহিতা অটুট রেখে। দলবাজি, মাস্তানী, চাঁদাবাজি ইত্যাদিকে কঠোরহস্তে দমন করতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার রোধে যে কোন ষড়যন্ত্রকে রুখতে হবে সমিমলিত উদ্যোগে। এদিকে প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতিনিধিত্বকারী কয়েকটি সংস্থার কর্মকর্তারাও মহাজোট সরকারের ৬ মাসের অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে বিরোধী দলের ব্যাপারে কিছুটা ছাড় দেয়া জরুরী বলেও তারা উল্লেখ করেন। প্রবাসী নেতৃবৃন্দ আশা করেছেন, সত্যিকার অর্থে যারা দুর্নীতির সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে। দলীয় স্বার্থে কিংবা ক্ষমতাকে প্যোক্ত করার লক্ষ্যে কোন ধরনের অন্যায়-অপকর্মের সাথে মহজোট সরকার আপোষ করবে না বলেও প্রবাসীরা আশা করেছেন। নেতৃবৃন্দের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউইয়র্কের সাবেক সভাপতি আকতার হোসেন, নাটাব সভাপতি নাজমুল হুদা, ব্যবসায়ী ও সমাজকর্মী আবু সুফিয়ান, ফ্লোরিডা বিজনেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান, সমাজকর্মী শওকত হোসেন।