গাজীউল হকের অসামান্য অবদান নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা জোগাবেঃ সিডনিতে বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়া আয়োজিত স্মরন সভায় বক্তারা
গাজীউল হকের অসামান্য অবদান নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা জোগাবেঃ
সিডনিতে বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়া আয়োজিত স্মরন সভায় বক্তারা পিএস চুনু্, সিডনি থেকে ভাষাসৈনিক গাজীউল হক আর আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময়ে স্বৈরাচার বিরোধি আন্দোলনসহ সকল প্রগতিশীল গনতান্ত্রিক আন্দোলনে তার অসামান্য অবদান নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা জোগাবে। নতুন প্রজন্ম তার চিন্তা-চেতনাকে ধারণ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে সোনার বাংলা গঠনের কাজে। গত ৫ই জুলাই, রবিবার সিডনিস্থ গ্রীন স্কয়ার কমিউনিটি হলে বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়া’র আয়োজনে ভাষা সৈনিক গাজীউল হক স্মরণে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় বক্তারা এভাবেই গাজীউল হককে স্মরণ করেন। স্মরন সভায় উপস্থিত অতিথিদের একাংশকে দেখা যাচ্ছে।অনুষ্ঠানের শুরুতে মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন ড. কাইউম পাভেজ । মরহুম গাজীউল হকের রুহের মাগফিরাত কামনা ছাড়াও তাঁর শোকবিহবল পরিবারের সদস্যদের সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।উল্লেখ্য, কথাসাহিত্যিক আলাউদ্দিন আল আজাদ গত ৩রা জুলাই, শুক্রবার রাতে রাজধানীর উত্তরায় নিজের বাড়িতে মৃত্যুবরন করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। বাংলা একাডেমী ও একুশে পদকসহ বহু পুরস্কারে ভূষিত আলাউদ্দিন আল আজাদ একাধারে কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক ও গবেষক ছিলেন। এ স্মরণ সভায় তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। স্মরন সভায় উপস্থিত অতিথিদের একাংশকে দেখা যাচ্ছে।মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাতের পর বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়া’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ শামীমূল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় গাজীউল হকের স্মুতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন গাজীউল হকের নাতি রেজা আহমেদ,বঙ্গবন্ধু সোসাইটির জয়েন্ট সেক্রেটারী ইফতেখার উদ্দিন ইফতু, বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি ক্যাম্বেলটাউন-এর সভাপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলা একাডেমীর সভাপতি আনোয়ার আকাশ, একুশে একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নেহাল নেয়ামূল বারী, প্রাক্তন সভাপতি নির্মল পাল, চরমপত্র খ্যাত এম আর আখতার মুকুলের কন্যা কবিতা পারভেজ, বাংলাদেশ থেকে আগত মিসেস হাসিনা বানু,বঙ্গবন্ধু সোসাইটি অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি আব্দুল জলিল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান তরুণ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়ার কার্যনির্বাহী পরিষদের সিনিয়র সদস্য ড. বোরহান উদ্দিন, শিক্ষাবিদ ড. কাইউম পারভেজ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা গামা আব্দুল কাদির ও বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব অস্ট্রেলিয়ার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নজরুল ইসলাম।স্মরণ সভায় বক্তারা বলেন বক্তারা বলেন, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং পরবর্তীতে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের সঙ্গে একাত্ম হয়ে ঘাতক দালাল নির্মূল ও যুদ্ধাপরাধীরের বিচারে তিনি আজীবন সোচচার ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠনে তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। দিনবদলের এই দিনে গাজীউল হকের মতো অসীম সাহসী ব্যক্তির বড় প্রয়োজন। তাঁর মৃত্যুতে জাতির যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ হবার নয়। স্মৃতিচারন শেষে ড. কাইউম পারভেজ আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে গাজীউল হকের স্মৃতির উদ্দেশ্য স্বরচিত কবিতা ‘বর্ণমালার- সেই গাছটির আশা’ আবৃতি করেন।সবশেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি শেখ শামীমূল হক ভাষা সৈনিক গাজীউল হকের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন-ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রামসহ সকল অসাম্প্রদায়িক চেতনায় দেশ গড়ার নেতৃত্বে তাঁর যে অবদান তা আমাদের অস্তিত্বে লালন করতে হবে। তাঁর চিন্তা-চেতনা ও আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই কেবল তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন সার্থক হবে। তিনি সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে স্মরণ সভার সমাপ্তি ঘোষনা করেন।অনুষ্টানে অনান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মিসেস নজরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু পরিষদের কোষাধক্ষ্য শাহ আলম সৈয়দ,সাংগাঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, বাংলা বার্তা পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মোহামমদ আসলাম মোল্লা, বাংলা একাডেমীর শারমিন সোমা, বঙ্গবন্ধু সোসাইটির জয়েন্ট সেক্রেটারী জহিরুল ইসলাম মহসিন, কার্যনির্বাহী সদস্য লিয়াকত আলী লিটন, সোহেল, এনামুল হক, রনি, বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি ক্যাম্বেলটাউন এর সদস্য হাবিবুর রহমান, আকতারুজ্জামান ও রিপন প্রমুখ।অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারন সম্পাদক ড. এজাজ আল মামুন। অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়িত করা হয়। অনুষ্ঠানটির সার্বিক ব্যাবস্থাপনায় ছিলেন পিএস চুন্নু ও শাহ আলম সৈয়দ।