সাকা চৌধুরীর সংসদ সদস্যপদ বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু
সাকা চৌধুরীর সংসদ সদস্যপদ বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু এই এখতিয়ার কেবল ইসির : স্পিকার
আইনি পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত : সিইসি
আইনি পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত : সিইসি
আশীষ কুমার দে : অবশেষে সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর সংসদ সদস্যপদ বাতিলের কার্যকর পদৰেপ শুর" করতে যা"েছ নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বহুল আলোচিত-সমালোচিত এই বিএনপি নেতার সদস্যপদ বাতিলের ব্যাপারে জাতীয় সংসদের স্পিকারকে লেখা চিঠির জবাব পাওয়ার পর কমিশন নিজেই এই প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে। আজকালের মধ্যে কমিশন এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট আইনজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেবে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ড. এ টি এম শামসুল হুদাও বলেছেন, ইসি আইনি দিক খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবে।জাতীয় সংসদের স্পিকার এডভোকেট আবদুল হামিদ এর আগে বলেছেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সংসদ সদস্যপদ বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ৰমতা তার নেই। এই এখতিয়ার কেবল নির্বাচন কমিশনের। বিষয়টি ইতিমধ্যে কমিশনকে জানানো হয়েছে। গত ১৭ জুন রাজধানীর গণগ্রন্থাগার মিলনায়তনে এক নাট্যোৎসবের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ইসি বললে তিনি সাকা চৌধুরীর নির্বাচনী আসন শূন্য ঘোষণা করতে পারেন বলেও জানান স্পিকার। উলেস্নখ্য, মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামায় সাকা চৌধুরী শিৰাগত যোগ্যতা সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দেয়ায় সর্বশেষ সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও ২০০৯) সংশ্লিষ্ট বিধি অনুযায়ী, তিনি সংসদ সদস্য থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। এ কারণে তার সদস্যপদ বাতিলের ব্যাপারে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার গত ২ জুন স্পিকারের কাছে একটি চিঠি লেখেন। জাতীয় সংসদ সচিবালয় সূত্র মতে, স্পিকারকে পাঠানো ইসির চিঠিতে বলা হয়েছিল, আদালতের নির্দেশনা উপেৰা করে মনোনয়নপত্রের হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেয়ায় নির্বাচনী আইন অনুযায়ী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী সংসদ সদস্য থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। সূত্র আরো জানায়, স্পিকার গত ১৬ জুলাই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এই চিঠির জবাব দিয়েছেন। জবাবে বলা হয়, এৰেত্রে ইসিকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সংসদ সদস্যপদ বাতিল করে চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনটি কবে নাগাদ শূন্য ঘোষণা করা হতে পারে- গতকাল রোববার নির্বাচন কমিশনে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি ড. শামসুল হুদা বলেন, আমরা আইনি পরামর্শ এবং চিন্তাভাবনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো। এ ব্যাপারে ইতিপূর্বে স্পিকারকে লেখা সিইসির চিঠির জবাব পাওয়ার কথাও স্বীকার করেন তিনি। তবে ইসি সচিবালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র মতে, সাকা চৌধুরীর সদস্যপদ বাতিল ইস্যুটি আর দীর্ঘায়িত করতে চায় না কমিশন। এ লৰ্যে কমিশন সংশ্লিষ্ট আইনজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ২-১ দিনের মধ্যে আলোচনা শেষ করে খুব শিগগির চূড়ান্ত পদৰেপ নেয়া হবে। উলেস্নখ্য, বিএনপি সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী গত ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দেয়া হলফনামায় তার শিৰাগত যোগ্যতা ‘নাই’ উলেস্নখ করলেও নির্বাচন কমিশন বলছে, এর আগে বিভিন্ন নির্বাচনে তার দেয়া তথ্যের সঙ্গে এবারের তথ্যের গরমিল রয়েছে। কমিশনের অনুসন্ধানে সাকা চৌধুরীর সম্মানসহ স্নাতক পাসের তথ্য মিলেছে। তার মেট্রিক পাস নিয়েও রয়েছে দুধরনের তথ্য।জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী- দ্বিতীয়, সপ্তম ও অষ্টম সংসদের সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর জীবন বৃত্তান্ত জাতীয় সংসদের গ্রন্থাগারে সংরৰিত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দ্বিতীয় সংসদে তার শিৰাগত যোগ্যতা হ"েছ- চট্টগ্রামের সেন্ট পস্নাসিডস স্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি, পাকিস্তানের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স। উ"চতর ডিগ্রি অর্জনের লৰ্যে ব্রিটেনের লন্ডনের লিঙ্কনস ইন-এ অধ্যয়নকালে বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরীর মৃত্যু হলে দেশে ফিরে আসেন তিনি।পরবর্তী সংসদে রৰিত তথ্যে রয়েছে- সালাউদ্দিন কাদের পাকিস্তানের পাঞ্জাবের সাদিক’স স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পাস করেন। এরপর লন্ডনের একটি স্কুলে লেখাপড়ার সময় বাবার মৃত্যুতে দেশে ফিরে আসেন।তবে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর দাবি, তার সদস্যপদ বাতিলের কোনো এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের নেই। যে কারণে জাতীয় সংসদের স্পিকার একজন সংসদ সদস্যের সদস্যপদ খারিজ করতে পারেন, তেমন কোনো কাজও তিনি করেননি। তাই কমিশনের পদৰেপে তিনি বিচলিত নন।