২০০৯-১০ অর্থ বছরের বাজেট পাস
২০০৯-১০ অর্থ বছরের বাজেট পাস
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে এক বছর জীবন ইসলাম : বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতেই গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০০৯-১০ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পাস হয়েছে। বাজেটে ১ জুলাই ২০০৯ থেকে ৩০ জুন ২০১০ সময়ের মধ্যে সরকারের যাবতীয় কার্যনির্বাহ করতে সংযু্ক্ত তহবিল থেকে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৯৫৯ কোটি ৯৬ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ব্যয় বরাদ্দ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ২০০৯-১০ এই অর্থবছরের জন্য মূল বাজেট হচ্ছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের এটাই প্রথম বাজেট। এই বাজেটের মাধ্যমে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য হ্রাস, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন হওয়াসহ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের যাত্রা শুরু হলো বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। আজ বুধবার (১ জুলাই) থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হচ্ছে। গতকাল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ব্যয় বরাদ্দ সংবলিত নির্দিষ্টকরণ বিল ২০০৯ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেন এবং তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। সরকারি দলের সাংসদরা এ সময় টেবিল চাপড়িয়ে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা গতকাল সংসদে উপস্থিত ছিলেন। বাজেট অধিবেশন গত ৪ জুন শুরু হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ১১ জুন জাতীয় সংসদে ১ লাখ ১৩ হাজার ৮১৯ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন। বাজেট অধিবেশনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সাংসদরা অনুপস্থিত ছিলেন। এরপর গত সোমবার পর্যন্ত বাজেটের ওপর প্রায় ৪৫ ঘণ্টা আলোচনা চলে যার পরিপ্রেৰিতে প্রস্তাবিত বাজেটের সঙ্গে পাস হওয়া বাজেটে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার মেয়াদ তিন বছর করা হলেও পাস হওয়া বাজেটে তা এক বছর করা হয়েছে। এছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটের চেয়ে কমানো হয়েছে গাড়ি, মোবাইল সেট ও সিম, নিউজপ্রিন্ট, মোটরসাইকেল ও বিড়ির ওপর শুল্ক। অন্যদিকে প্রস্তাবিত বাজেটের চেয়ে পাস হওয়া বাজেটে শুল্ক বেড়েছে ১৫০০ সিসির ওপরের গাড়ি, সিগারেট ইত্যাদির।২০০৯-১০ অর্থবছরের বাজেটে ব্যয়ের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে অর্থ বিভাগকে- যার পরিমাণ হচ্ছে ৯৫ হাজার ৪৯১ কোটি ৮১ লাখ ৮২ হাজার টাকা। আর সবচেয়ে কম বরাদ্দ দেয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতির সচিবালয়কে- যার পরিমাণ হচ্ছে ৬ কোটি ৯০ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। বাজেটে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জন্য ব্যয় বরাদ্দ করা হয়েছে ২৪৮ কোটি ৬৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জন্য ৫৯৬ কোটি ২৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা, প্রতিরৰা মন্ত্রণালয়ের জন্য ৮ হাজার ৩৮২ কোটি ১৬ লাখ ১১ হাজার টাকা, শিৰা মন্ত্রণালয়ের জন্য ৭ হাজার ৪১৫ কোটি ৬৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য ৫ হাজার ৮৭৯ কোটি ৮৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকা, স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্য ৭ হাজার ৯৩৪ কোটি ২ লাখ ৮২ হাজার টাকা, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জন্য ৭৩২ কোটি ১১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা বরাদ্দ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে ৭ হাজার ৩৫ লাখ ৯৭ হাজার টাকা, খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়কে ১২ হাজার ৯৪৮ কোটি ৪৫ লাখ ৯১ হাজার টাকা, কৃষি মন্ত্রণালয়কে ৫ হাজার ৯৭১ কোটি ৫১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়কে ১ হাজার ৪৮৩ কোটি ৫২ লাখ ৭২ হাজার টাকা, বিদ্যুৎ বিভাগকে ৩ হাজার ৫৭৮ কোটি ৮৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে ৩৪৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা, মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রণালয়কে ৭১৮ কোটি ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়াসহ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জন্য ২২ কোটি ৯৭ লাখ ৬২ হাজার টাকা, সরকারি কর্ম-কশিনের জন্য ২১ কোটি ৭১ লাখ ৩০ হাজার টাকা, দুর্নীতি দমন কমিশনের জন্য ২৩ কোটি ৯১ লাখ ১৪ হাজার টাকা ও সেতু বিভাগের জন্য ৮০১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ অনুমোদন দেয়া হয়েছে।জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর ৪৯টি মঞ্জুরি দাবি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন হয়েছে। সংসদে ১ হাজার ১৩টি ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় এবং তা কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার মেয়াদ তিন বছর করা হলেও তা এক বছর করা, গাড়ি, মোবাইল সেট ও সিম, নিউজপ্রিন্ট, মোটরসাইকেল ও বিড়ির ওপর প্রস্তাবিত শুল্ক হ্রাস করাসহ ঘোষিত বাজেটের ওপর বেশ কিছু সংশোধনী আনা হয়। এ ছাড়াও ৰমতা বিকেন্দ্রীকরণ, গ্রাম, ইউনিয়ন ও থানা পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির বিস্তার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও কৃষি খাতকে প্রধান্য দেয়া, শিৰা, জ্বালানি, পরিবহন, যোগাযোগ, দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক নীরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা ও ভাতা বৃদ্ধি, পদ্মা সেতু নির্মাণ, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করাসহ ন্যাশনাল সার্ভিসের আওতায় যুব সমাজের চাকরির ব্যবস্থা করা, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ৬০ বছরের ঊর্ধ্ব মুক্তিযোদ্ধাদের বিনা খরচে সর্বত্র যাতায়াতের ব্যবস্থা করা, দেশীয় শিল্পের স্বার্থরৰা, বিশ্বমন্দা মোকাবেলা, রপ্তানি খাতের জন্য থোক বরাদ্দ ও অবকাঠামোগত খাতসহ ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদশকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করার লৰ্যকে সামনে রেখে বাজেট পাস করা হয়।
ঢাকা, জুলাই ০১ ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে দিনের আলোর বর্ধিত ব্যবহারের কারণে প্রতিদিন গড়ে ২০৫ থেকে ২০৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু। মন্ত্রী বলেন, চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা যাচ্ছে না বলে 'এটি দৃশ্যত বোঝা যাচ্ছে না'। তবে লোড-শেডিং আগের তুলনায় অনেক কমেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বুধবার সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন মন্ত্রী।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো বোমা হামলায় নিহত হবার পর জাতিসংঘের একটি কমিশন এই হত্যাকান্ডের তদন্ত কাজ শুরু করেছে৷ জাতিসংঘে চিলির রাষ্ট্রদূত এক্টর মুনস-এর নেতৃত্বে এই কমিশন ভুট্টো হত্যার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে তথ্য উদ্ঘাটন করবে৷ পাকিস্তান সরকার জাতিসংঘের কাছে তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছিল৷ ২০০৭-এর ২৭ ডিসেম্বর রাওয়ালপিন্ডিতে এক নির্বাচনী সমাবেশের সময় বোমা হামলায় নিহত হন বেনজির ভুট্টো৷