দেশের বিভিন্ন স্থানে নদীর পানি বৃদ্ধি, আকস্মিক বন্যা


দেশের বিভিন্ন স্থানে নদীর পানি বৃদ্ধি, আকস্মিক বন্যা

ঢাকা, জুলাই ১ - উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বর্ষণে বুধবার নেত্রকোনা, বান্দরবান ও লালমনিরহাটে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে নিখোঁজ হয়েছেন একজন। নদীতে বিলীন হয়ে গেছে দুই কিলোমিটার সড়ক। নেত্রকোনার সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বান্দরবানে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদী তীরবর্তী বসতি ঝুঁকির মুখে পড়েছে। সুনামগঞ্জের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। প্লাবিত হয়েছে চার উপজেলার নিম্নাঞ্চল। লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বহু ফসলী জমি তলিয়ে গেছে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ- নেত্রকোনা: নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলার প্লাবিত এলাকাগুলা হলো কুল্লাগড়া, কাকৈরগড়া ও গাওকান্দিয়া ইউনিয়ন এবং লেঙ্গুরা ও খারনৈ ইউনিয়ন। দুর্গাপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খাইরুল আনাম জানান, দুর্গাপুর শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙে পাহাড়ি ঢল শহরে প্রবেশ করেছে। বহু বাসাবাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার লোক। মেয়র শুভেন্দু সরকার পিন্টু জানান, পাহাড়ি ঢলের কারণে সোমেশ্বরী নদীর ভাঙন ব্যাপক আকার নিয়েছে। পানির প্রবল তোড়ে এরই মধ্যে ডাকুমারা এলাকার প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঢলে ভেসে আসা গাছ টেনে আনতে গিয়ে শিবগঞ্জ এলাকার সিদ্দিক মিয়া (৩৫) নামের একজন নিখোঁজ হয়েছেন। জেলা প্রশাসক মো. নুরুল আমিন বলেন, জেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতির খোঁজ-খবর নিচ্ছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে জেলা প্রশাসন থেকে তাৎক্ষণিকভাবে ২৩ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বান্দরবান: সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার মাঝেরপাড়া, কাইছতলী, রাজবিলা, কুহালং, সুলতানপুর এবং সদরের আর্মিপাড়া, শেরেবাংলা নগর, ইসলামপুসহ নিম্নাঞ্চলে পানি উঠতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার ভোর থেকে প্রবল বর্ষণ শুরু হয়। জেলার লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে পানি উঠেছে। লামা সদরের সঙ্গে দু'টি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। লামার সাংবাদিক কামালুদ্দিন জানিয়েছেন, লামা-সুয়ালক সড়কের ডলুঝিড়ি ও গজালিয়ার ৩টি স্থানে পাহাড় ধসে পড়ায় লামা সদরের সঙ্গে গজালিয়া ও সরই ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বুধবার সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে। লামার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ সচিব জাকির হোসেন জানিয়েছেন, ইয়াংছা খালে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইয়াংছা বাজারে অস্থায়ী ইউপি কার্যালয় পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া আশপাশের অনেক বাড়ি-ঘরও তলিয়ে গেছে বলে তিনি জানান। সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বেড়েছে ২০ সেন্টিমিটার। বুধবার জেলায় ১০৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলার বেশিরভাগ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বহু গ্রামবাসী পানি বন্দি হয়ে পড়েছে বলে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়। বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল মান্নান খান জানান, ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জের বিভিন্ন নদীর পানি বাড়ছে। আরও দু'দিন বৃষ্টি হলে বন্যা দেখা দিতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। লালমনিরহাট: তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলায় প্রায় দেড় হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে কয়েক শ' একর ফসলী জমি। প্লাবিত এলাকাগুলো হলো হাতিবান্ধা উপজেলার বড়খাতা, গড্ডিমারী, সিঙ্গীমারী, সিন্দুনা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন। হাতিবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুজ্জামান জানান, তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে হাতিবান্ধার ৪টি ইউনিয়নে বন্যার পানি ঢুকেছে। জেলা প্রশাসক মো. আলাউদ্দিন ফকির জরুরি কাজে ঢাকা রয়েছেন। তবে তিনি খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে জানান।

Popular posts from this blog

THE CONSTITUTION OF THE BANGLADESH AWAMI LEAGUE

ইতিহাসবন্ধনী

Justice order of the day