মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ
ড. মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী :মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি রাষ্ট্রীয় কাজে ভীষণ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। শুনেছি তারপরও আপনি প্রয়োজনীয় বই-পুস্তক ও পত্রপত্রিকা পড়ার চেষ্টা করেন। সেই ভরসাতেই আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমার আজকের লেখা। এতে আমার বিবেচনায় অন্তত ২টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমি আপনার দৃষ্টিতে আনতে সৰম হবো। আশা করি আপনি বিষয় দুটোর গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
১. বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ :বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ আমাদের জাতীয় ইতিহাসে কতোখানি গুরুত্ব বহন করে তা নতুন করে বলার অপেৰা রাখে না। কিন্তু এই ভাষণটি দীর্ঘদিন নানা অবহেলার শিকার হয়েছে। ভাষণটির গুরুত্ব উপলব্ধি করতে আমরা জাতীয়ভাবে অনেক আগেই ব্যর্থ হয়েছি। ১৯৮০-এর দশকের শেষ এবং ’৯০-এর দশকের শুরুর দিকে ৭ মার্চ উপলৰে পরপর কয়েক বছর এই ভাষণটির ঐতিহাসিক প্রেৰাপট এবং গুরুত্ব তুলে ধরে আমি দৈনিক সংবাদে কয়েকটি নিবন্ধ লিখেছিলাম। বলা চলে তখনো পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ অনেকটাই উপেৰিত ছিল। দেশে সামরিক শাসন এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রতি দায়বদ্ধহীন সরকার থাকার কারণেই এমনটি ঘটেছিল। কিন্তু এর ফলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার সুযোগ নিয়েছে একটি মহল। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি ইতিহাস বিকৃতকারীদের হাত থেকে মোটেও রেহাই পায়নি। আমি এ ভাষণটি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে জানতে পেরেছি যে, ১৯৭৫ সালেই বঙ্গবন্ধুর খুনিচক্র বিটিভি থেকে বঙ্গবন্ধুর বেশ কিছু ভাষণের কপি তুলে নিয়ে গেছে, সম্ভবত সেগুলো নষ্ট করা হয়েছে। জানি না এর সত্যতা কতোটুকু। তবে এবার পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংযোজন কমিটিতে কাজ করতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে তাতে বুঝতে পেরেছি যে, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের পূর্ণাঙ্গ ভাষণটি লিখিত বা অডিও-ভিডিওতে যথাযথভাবে নেই। প্রয়াত কবি হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত ১৬ খণ্ডের বাংলাদেশ স্বাধীনতাযুদ্ধ দলিলপত্র দ্বিতীয় খণ্ডে (পৃ. ৭০০-৭০২) যে ভাষণটি সংকলিত হয়েছে তা যথার্থ হয়নি, একই সঙ্গে রামেন্দু মজুমদার সম্পাদিত বঙ্গবন্ধুর নির্বাচিত বক্তৃতা ও বিবৃতি, বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ বই এবং মোনায়েম সরকার সম্পাদিত বঙ্গবন্ধুর জীবন ও রাজনীতি গ্রন্থে সংকলিত ভাষণেও বেশ কিছু অসম্পূর্ণতা এবং ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে। বিটিভিতে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের যে ভিডিও সংরৰিত আছে তা মাত্র ১০ মিনিটের, অপরদিকে বাংলাদেশ বেতারে উক্ত ভাষণের যে ক্যাসেটটি রয়েছে তা ১৮ মিনিটের। এতেই বেশ কিছু গরমিল পরিলৰিত হচ্ছে। তাছাড়া সচরাচর যে সব ক্যাসেটে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনা যাচ্ছে বা পাওয়া যাচ্ছে তাতেও কিছু অমিল ও বৈসাদৃশ্য লৰ্য করা যাচ্ছে। এতে শ্রোতা, দর্শক ও পাঠক সকলেই কিছুটা সমস্যা ও বিভ্রান্তিতে পড়ছেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের মতো ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ দলিলে এটি থাকা কোনোভাবেই উচিত নয়। এতো বছর ধরে ভাষণটি আমরা শুনে আসছি কিন্তু ক্যাসেটের ভিন্নতা, অসম্পূর্ণতা আমরা কীভাবে উপেৰা করলাম, লৰ করিনি- সেটিই বিস্ময়ে ভাবতে হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণটির অডিও-ভিডিও এবং অনুলিপি মেলাতে গিয়ে আমার কাছে সেগুলো ধরা পড়ে, আমি আমাদের কমিটির অন্য সদস্যদেরও তা শোনাই, মিলিয়ে দেখানোর উদ্যোগ নেই। কমিটির সকলেই একমত যে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের ক্যাসেট ও মুদ্রিত বিভিন্ন অংশের মধ্যে প্রায়ই মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত হয়েই কথাগুলো লিখছি। এমনটি আর চলতে দেয়া উচিত নয়। আমি মনে করি, অতি দ্রুত দেশের দৰ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি কমিটি করে দেয়া খুবই জরুরি। ভাষণের খণ্ডিত অংশগুলোকে একত্রিত করে এর একটি অভিন্ন অডিও, ভিডিও এবং লিখিত রূপ দেয়া প্রয়োজন। তা হলে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের পূর্ণাঙ্গ ভাষণ উদ্ধার, সংরৰণ ও প্রয়োগ নিশ্চিত হবে। যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সরকারি দলিল হিসেবে সেটিই ব্যবহার করবে, তাতে মূল ভাষণের ঐতিহাসিক চর্চা ও প্রয়োগ যথাযথভাবে হবে। এ কাজটি এতোদিন রাষ্ট্রীয় গুরুত্বের বাইরে যেভাবে ছিল তা কোনোভাবেই আর থাকা উচিত নয়। আশা করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণই শুধু নয়, বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অন্যান্য অডিও, ভিডিও এবং মুদ্রিত রূপটি যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নেবে, যেখানে বিষয় বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে জাতির ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ সংগ্রহ, সংরৰণ ও ব্যবহারের ৰেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি করা হলে ভবিষ্যতে কেউ আর ইতিহাস বিকৃত করার সুযোগ পাবে না, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এ পর্বের ইতিহাস ও রাজনৈতিক গবেষণায় নির্ভর করার মতো তথ্য, দলিল তথা উপকরণ হাতের কাছে পাবে।
২. তথ্য-উপাত্ত উদ্ধার ও ইতিহাস লেখার উদ্যোগ :মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সংসদের গত অধিবেশনে তথ্য অধিকার আইন পাস হয়েছে। এটি একটি যুগান্তকারী পদৰেপ নিঃসন্দেহে। তথ্য অধিকারের বিষয়টিকে শুধু সাংবাদিকতার অবস্থান ও দৃষ্টিতে দেখলে চলবে না। তথ্য-উপাত্তের ব্যবহার মৌলিক গবেষণাতেও বিশেষভাবে হয়ে থাকে। বিশেষত সরকারি দলিলপত্র, বিশেষ বাহিনী ও সংস্থার সংগৃহীত গোপন তথ্য ও প্রতিবেদন রাজনীতির অনেক সময়কে জানা, বোঝা ও উপস্থাপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমাদের দেশে গবেষণার ৰেত্রে বড় সমস্যাই হচ্ছে পত্রপত্রিকা ও ব্যক্তিগত স্মৃতিকথা ও লেখালেখির বাইরে কোনো সরকারি নথিপত্র ও দলিলপত্রের ব্যবহার বলতে গেলে নেই। এগুলো তেমনভাবে গুরুত্ব দিয়ে সংরৰণ করা হয় না। বিশেষত ব্রিটিশ ও পাকিস্তান কালের সরকারি দলিলপত্র উদ্ধার করা, আর্কাইভ, জাতীয় লাইব্রেরি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর লাইব্রেরিতে রৰণাবেৰণ করার গুরুত্ব দেখাতে পারিনি। ফলে অতীতের অনেক নির্ভরযোগ্য আমাদের দলিলপত্র, তথ্য-উপাত্ত হারিয়ে গেছে কিংবা যাচ্ছে। আমাদের দেশের ইতিহাস, রাজনীতি ও আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে মৌলিক গবেষণা করতে আমাদেরকে তাই ব্রিটিশ লাইব্রেরি, ভারতীয় লাইব্রেরিসহ বিভিন্ন দেশের আর্কাইভ ও লাইব্রেরির ওপরই বিশেষভাবে নির্ভর করতে হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে আমরা নিজেরা আমাদের তথ্য-উপাত্ত সম্পর্কে ততোটা সচেতন নই, অবহিতও নই, এগুলোর সংরৰণ ও প্রয়োগের গুরুত্ব নিয়েও তেমন একটা জানি না। অতীতের অনেক তথ্য-উপাত্ত আমাদের থাকা সত্ত্বেও এগুলোর বেশির ভাগ চলে গেছে বিদেশীদের হাতে। সে কারণে এখন আমাদের দেশের গবেষকদেরকে মৌলিক গবেষণা করতে হলে বিদেশে যেতে হচ্ছে। ব্রিটিশ ও পাকিস্তান কালের পুলিশ ফাইলসমূহ এখনো উদ্ধার করার উদ্যোগ নেয়া হয়নি। পুলিশ সদর দপ্তর, বিভাগীয় বা জেলা পর্যায়ের দপ্তরগুলোর গুদামখানায় এসব তথ্য-উপাত্ত-দলিলপত্র একসময় পড়ে ছিল। সরকারের কাছ থেকে এগুলো সংরৰণ করার উদ্যোগ না নেয়ায় বেশ কিছু ফাইল হারিয়ে যেতে পারে, নষ্ট করেও ফেলা হতে পারে। তারপরও আমি মনে করি আমাদের ডিবি-পুলিশ দপ্তরে পাকিস্তান কালের অনেক পুলিশ ফাইলই এখনো বিৰিপ্ত বিচ্ছিন্নভাবে পড়ে আছে, সেগুলোতে আমাদের তৎকালীন রাজনৈতিক নেতাদের সম্পর্কে সরকারের কড়া নজরদারির পাশাপাশি নানা প্রতিবেদন ও তথ্য সংযোজিত রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জীবনী রচনা করতে গিয়ে আমি এ ধরনের ১২টি ফাইলে সংরৰিত তথ্যের ব্যবহার করেছি (বঙ্গবন্ধুর জীবন ও রাজনীতির ১ম পর্বে) যা বঙ্গবন্ধুকে নতুনভাবে জানতে কিছুটা হলেও সাহায্য করেছে। আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি, ডিবি পুলিশ দপ্তরে পাকিস্তান আমলে সোহরাওয়ার্দী, ভাসানী, তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মনিসিংহ, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতার নামেই আলাদা আলাদা পুলিশ ফাইল সংরৰিত রয়েছে। এই ফাইলগুলো এখন সরকার একটি মাত্র আদেশ প্রদান করেই ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে পারে, এসব ফাইলকে ফটোকপি করে জাতীয় আর্কাইভসহ উচ্চতর গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর লাইব্রেরিতে সংরৰণ করার উদ্যোগ নিতে পারে। একই সঙ্গে শুধু পাকিস্তান কালেরই নয়, স্বাধীনতা-উত্তর কালের অন্তত (১৯৭১-১৯৯১) ২০ বছরের পুলিশ ফাইল (রাজনৈতিক)সমূহ উন্মুক্ত করে দেয়া হলে দেশে গবেষণা ও লেখালেখির জগতে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন সূচিত হতে পারে । বর্তমান সরকার তথ্য অধিকার আইনের আওতায় এসব তথ্যকে উন্মুক্ত করে দিতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাসের একজন ছাত্র হিসেবে সরকারের কাছে অনুরোধ করবো প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত দিয়ে ১৯৪৭ সাল থেকে বর্তমান সময়ের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি বহুখণ্ড বিশিষ্ট গবেষণা গ্রন্থ রচনার উদ্যোগ নেয়া খুবই জরুরি। এর জন্য দেশের ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজতত্ত্বসহ বিভিন্ন বিষয়ের যোগ্য গবেষকদের কাজে লাগানো প্রয়োজন। ইতিপূর্বে এশিয়াটিক সোসাইটি তিন খণ্ডের বাংলাদেশের ইতিহাস রচনা করেছে। ব্রিটিশ যুগের তথ্য-উপাত্তের অভাব থাকার পরও গ্রন্থটি উভয় বাংলায় গবেষক ও পাঠক মহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। আমার ধারণা ১৯৪৭-পরবর্তী সময়ের ডিবি-পুলিশ ফাইলে যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত পাওয়া সম্ভব। স্বাধীনতা-উত্তর কালের তো বটেই। সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করলে ১৯৪৭ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রায় ষাট বছরের ১০-১২ খণ্ডের বাংলাদেশ ইতিহাস বিষয়ক একটি মৌলিক গ্রন্থ রচনা করা সম্ভব। সেটি করা হলে বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসের কোনো পর্ব নিয়েই ইতিহাস বিকৃত করার সুযোগ আর কারো থাকবে না। মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা-উত্তর কালের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসকে বিকৃতির হাত থেকে রৰা করতে হলে রাষ্ট্রীয় তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ রচনার কোনো বিকল্প নেই। কাজটি এখনই শুরু করা হলে আমার বিশ্বাস আগামী ৪/৫ বছরের মধ্যে এর প্রকাশ করা সম্ভব। সেটি করা গেলে বাংলাদেশ ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টা থেকে মুক্তি পাবে। তা করা না হলে ভবিষ্যতে আবার বিএনপি-জামাতের রাজনৈতিক সরকার ৰমতায় অধিষ্ঠিত হলে জাতীয় ইতিহাসের সব ক’টি পর্বকেই দখলের চেষ্টা করবে না তেমন কোনো নিশ্চয়তা আছে কি? নিকট অতীতের অভিজ্ঞতা আমাদের বলছে কিংবা এখনো বিএনপি জামাতের নেতাকর্মী, তাদের সমর্থক লেখক-শিৰক-বুদ্ধিজীবীদের কথাবার্তা শুনে মনে হয় না যে তারা ইতিহাস থেকে কোনো শিৰা গ্রহণ করেছে, কিংবা তারা ইতিহাস বিকৃতি করা থেকে নিজেদেরকে দূরে সরিয়ে রাখবে। সে কারণেই বিষয়টি আমি সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনার দৃষ্টিতে আনার চেষ্টা করেছি। এখন সিদ্ধান্ত গ্রহণের পালা আপনার এবং সরকারের ওপর।
ড. মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : অধ্যাপক, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।

Popular posts from this blog

THE CONSTITUTION OF THE BANGLADESH AWAMI LEAGUE

ইতিহাসবন্ধনী

Justice order of the day