জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবেলায় বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমে স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নিন : রাষ্ট্রপতির আহ্বান
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবেলায় বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমে স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নিন : রাষ্ট্রপতির আহ্বান ঢাকা, বাংলাদেশ, ২৫ জুন (বাসস) : রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় চলমান বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে দেশকে সবুজ শ্যামলিমায় ভরে তুলতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।রাষ্ট্রপতি আজ বঙ্গভবনে বৃক্ষরোপণ অভিযান-২০০৯ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে এ আহ্বান জানান।তিনি বলেন, বৃক্ষ আমাদের জীবন ও জীবিকার অবিচ্ছেদ্য অংশ। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস'ান, চিকিৎসা ও কর্মসংস্থানের মত মৌলিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষের অবদান অপরিসীম। তাই এই সম্পদের সংরক্ষণ ও উন্নয়নে আমাদের আরো আন্তরিক হতে হবে।অনুষ্ঠানে বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মোন্স্তাফিজুর রহমান বক্তৃতা করেন। এ সময় গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট আবদুল মান্নান খান উপস্থত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান বলেন, তিন মাসব্যাপী জাতীয় বৃক্ষরোপণ আন্দোলন ও বৃক্ষমেলা ২০০৯-এর ধারাবাহিকতায় বঙ্গভবনে আজ বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।বঙ্গভবনের ছায়াঘেরা সবুজ ও নির্মল পরিবেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য তিনি সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এ কর্মসূচি দেশব্যাপী সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হবে।সবুজ শ্যামলিমায় ঘেরা পাখ-পাখালির কল-কোলাহলে ভরা এ অপূর্ব বাংলাদেশ একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অবকাঠামো ও বসতবাড়ি নির্মাণ, অপরিকল্পিত নগরায়ন, শিল্প-কলকারখানা স্থাপন ও নদী ভাঙ্গন ইত্যাদি কারণে দেশে দেশে বনভূমির পরিমাণ আশংকাজনকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে মূল্যবান জীববৈচিত্র্য।তিনি বলেন, হারানো পরিবেশকে ফিরিয়ে আনতে আমাদের ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণ করতে হবে। বাংলাদেশকে পুনরায় ভরে তুলতে হবে সবুজের সমারোহে।
তিনি বলেন, এবারের জাতীয় বৃক্ষরোপণ আন্দোলন ও বৃক্ষমেলা ২০০৯-এর প্রতিপাদ্য ‘গাছ লাগিয়ে ভরব দেশ, বদলে দেব বাংলাদেশ’ যথার্থ হয়েছে। তিনি দেশ ও জাতির স্বার্থে বৃক্ষরোপণ আন্দোলনে এগিয়ে আসার জন্য সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।রাষ্ট্রপতি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বে একটি বড় সমস্যা। বাংলাদেশেও এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিনি বলেন, পরিবেশ বিজ্ঞানীরা আশংকা করছেন বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে এবং বাংলাদেশসহ উপকূলীয় দেশসমূহের িনম্নাঞ্চল সমুদ্রগর্ভে তলিয়ে যাবে।তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দেশকে রক্ষার জন্য কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। সরকার এলক্ষ্যে ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্রাটেজি এন্ড একশন প্লান’ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। ২০০৯-’১০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এর প্রতিফলন ঘটেছে।বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস থেকে উপকূলীয় বাঁধ ও নদীর পাড় রক্ষার জন্য সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, সারাদেশে প্রায় ৪ কোটি চারা রোপণের যে কার্যক্রম সরকার হাতে নিয়েছে তা এলক্ষ্য পূরণে অবদান রাখবে। তিনি রোপিত চারার যথাযথ সংরক্ষণ ও পরিচর্যার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।বৃক্ষরোপণ বাংলাদেশের আবহমান সংস্কৃতির অংশ একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ধারা অব্যাহত রাখতে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, বৃক্ষরোপণ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বন বিভাগ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বৃক্ষমেলার আয়োজন করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বনায়ন কার্যক্রম জোরদার করতে সবাই এসব মেলা থেকে উন্নতজাতের চারা সংগ্রহ করে বৃক্ষরোপণে ব্রতী হবেন। এবারের বৃক্ষরোপণ আন্দোলন বর্ষা মৌসুমে ৩ মাসব্যাপী চলবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ২০০৯-এর উদ্বোধন ঘোষণা করেন। পরে তিনি বঙ্গভবনের বাগানে একটি গাছের চারা রোপণ করেন।অনুষ্ঠানে পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, বৈশ্বিক ঊষ্ণতার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দেশকে রক্ষা করতে ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণ করতে হবে।