আলোচনার মাধ্যমেই টিপাইমুখ বাঁধ সমস্যার সমাধান করব : প্রধানমন্ত্রী
আলোচনার মাধ্যমেই টিপাইমুখ বাঁধ সমস্যার সমাধান করব : প্রধানমন্ত্রী
রিপোর্ট
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার জাতীয় সংসদে বলেছেন, বাজেটে গৃহীত পদৰেপ সঠিকভাবে বাসৱবায়ন করতে পারলে গ্রামে হাহাকার থাকবে না। তিনি বাজেট বাসৱবায়নের জন্য সংসদ সদস্যদের নিজ নিজ এলাকায় সঠিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, টিপাইমুখের কথা বলে বিরোধীদল কি ইস্যু খোঁজার চেষ্টা করছে? আমরা দ্বিপাৰিক আলোচনার মাধ্যমে টিপাইমুখ বাঁধ সমস্যার সমাধান করব। বিরোধীদলীয় সদস্যদের নাম দিতে চাইলে তাদেরকেও প্রতিনিধিদলে অনৱর্ভুক্ত করা হবে। তিনি ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি স্বে"ছায় ছেড়ে দেয়ার জন্য বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশকে দৰিণ এশিয়ার একটি উন্নত আধুনিক ও শানিৱময় দেশ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, তার সরকারের লৰ্য হলো ৰমতার বিকেন্দ্রীকরণ করা, এটা গ্রাম পর্যায়ে বাসৱবায়ন করে সার্বিক উন্নয়ন সাধন করা। নির্বাচনী ইশতেহারেই ছিল উ"চাভিলাষী। তাই জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য উ"চাভিলাষী বাজেট দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, হাজারো চেষ্টা করেও বিরোধী দল এবারের বাজেটকে গরীব মারার বাজেট বলতে পারেননি। এবারেই প্রথম বাজেট ঘোষণার পরে জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি, বাজারে কোন আতঙ্ক ছড়ায়নি। আছরের নামাজের বিরতির পরে ৬টা ২৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতা শুরম্ন করেন। ১ ঘন্টা ৩৫ মিনিটের বক্তৃতায় তিনি ছিলেন প্রাণবনৱ। বাজেটের প্রায় সব অধ্যায় উঠে এসেছে তার ভাষণে। এসময় বিরোধী দলের আসন ছাড়া সংসদ ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। এমনকি ভিআইপি গ্যালারীসহ দর্শক গ্যালারীও ছিল পরিপূর্ণ।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে প্রসৱাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক প্রত্যাহারের প্রসৱাব করেন। এর মধ্যে রয়েছে এলমুনিয়ামের তৈরি জিনিসপত্রের ওপর মূষক প্রত্যাহার, জনশক্তি রপ্তানি প্রতিষ্ঠানের ওপর অতিরিক্ত মূসক, বিড়ি শিল্পের ওপর থেকে মূসক, আসবাবপত্রের ওপর মূসক, নিউজপ্রিন্ট আমদানির ওপর শুল্ক, পনের শ’ সিসি পর্যনৱ গাড়ি ও ২ হাজার সিসি পর্যনৱ মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলের ওপর থেকে শুল্ক, কম দামের মোবাইল ফোনের ওপর থেকে শুল্ক পুনর্বিবেচনার জন্য অর্থমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানান।
শিৰা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি সম্পর্কে সংসদ সদস্যদের দাবির প্রেৰিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শিৰকদের জন্য পৃথক বেতন কমিশন, চাকরি কমিশন গঠন করা হবে। সম্ভব হলে স্নাতক পর্যনৱ অবৈতনিক শিৰা ব্যবস'া চালু করা হবে। তাই এমপিওভুক্তির পুরনো ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভা চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিজ এলাকার শিৰা প্রতিষ্ঠানের মান উন্নয়নে জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহবান জানান।
সরকারী দলের সদস্যদের বাজেট আলোচনায় বেশ কয়েকজন সদস্যের আলোচিত বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারী দলের সদস্য যেভাবে বাজেটের ওপরে তাদের স্বাধীন মত প্রকাশ করেছেন তাতে মনে হয়নি বিরোধী দল অনুপসি'ত। একেই বলে গণতন্ত্রের চর্চা।
বিরোধী দলের সংসদ বর্জনের কঠোর সমালোচনা করে সংসদ নেতা বলেন, তারা উপসি'ত থেকে বাজেটের সমালোচনা করলে অথবা পরামর্শ দিলে খুশী হতাম। কি কারণে তারা সংসদ বর্জন করেছেন তা বোধগম্য নয়। জনস্বার্থে কোন ইস্যু থাকলে একটা কথা থাকতো। প্রথম ইস্যু করলেন বাড়ি। ক্যান্টনমেন্টের সম্পত্তিতে ১৮০ কাঠা ও গুলশানে ৩৮ কাঠার দুইটি বাড়ি তিনি দখল করে আছেন। গুলশানের বাড়ির ভাড়া ভোগ করেন তিনি অথচ এর পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল দিতে হয় সরকারকে। আমি ওনাকে অুনরোধ করবো সেনানিবাসের বাড়িটি ছেড়ে দিন। সেনাবাহিনীর সম্পত্তি তাদের বুঝিয়ে দিন।
এরপরে ইস্যু আনা হলো সংসদের আসন। বিধি অনুযায়ী তারা যা পান, তার চেয়েও বেশি স্পিকার তাদেরকে দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, অর্থমন্ত্রী অত্যনৱ চমৎকারভাবে বাজেট উপস'াপন করেছেন। এই বাজেট আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিফলন। দেশের জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস'া বিবেচনা করে আমরা নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করেছি। কোন্টা মানুষের জন্য ও দেশের জন্য কল্যাণকর তাই দেখা হয়েছে। একবছরের জন্য বাজেট ঘোষণা করা হলেও এতে ৫ বছরের পরিকল্পনার প্রতিফলন রয়েছে। তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী এতো সুন্দরভাবে এতো সময় ধরে এতটা প্রাণনৱকরভাবে বাজেট উপস'াপন করেছেন, মনে হ"েছ তার বয়স ৭৬ নয়, ২৬ বছর।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি আমাদের কুরে কুরে খা"েছ। এটা কিভাবে দূর করা যায় তার ব্যবস'া নিতে হবে। দুদক স্বাধীনভাবে কাজ করবে। তাদের যা যা পদৰেপ নেয়া দরকার তা তারা করবে। সরকার কোন হসৱৰেপ করবে না। মানিলন্ডারিং বন্ধ করতে হবে। যেই এর সঙ্গে জড়িত হয় তার বিরম্নদ্ধে ব্যবস'া নিতে হবে।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা ছিল আমাদের প্রধান নির্বাচনী অঙ্গীকার, তা আমরা পূরণ করতে সৰম হয়েছি। তেল চাল ডাল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস মানুষের ধরার্ছোঁয়ার বাইরে ছিল। প্রত্যেকটা জিনিসের দাম আমরা কমিয়েছি। মূল্যস্ফীতি কমিয়ে এনেছি। কৃষকরা যাতে উৎপাদন করতে পারে আমরা সারের দাম কমিয়ে এনেছি। কৃষকদের সেচ মওসুমে বিদ্যুৎ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লৰ্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ও খাদ্য নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা। গৃহীত পদৰেপ সঠিকভাবে বাসৱবায়ন করতে পারলে গরিব মানুষের হাহাকার থাকবে না। গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। নারীর ৰমতায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মহাজোটের মন্ত্রিসভায় ৪ জন নারী সদস্য রয়েছে। ভবিষ্যতে আরো বাড়ানোর ইঙ্গিত দেন তিনি। কৃষিকে অর্থনীতির প্রাণ হিসাবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, অতীতের মতো এই খাতে সাফল্য ধরে রাখা হবে। মানুষ যাতে দুবেলা দু’মুঠো খেতে পায় তা নিশ্চিত করা হবে। পেনশন পাওয়ার বিষয়ে হয়রানি বন্ধ করে পেনশন প্রাপ্তি সহজকরণ হবে। তিনি বলেন, যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিৰকদের বেতন বৈষম্য দূরীকরণের ব্যবস'া নেয়া হ"েছ । তেলে মাথায় তেল দেয়া আমাদের কাজ নয়। আমরা গরিবের বন্ধু।
বার বার সামরিক স্বৈর শাসকরা ৰমতা দখল করে তা কেন্দ্রীভূত করতে চেয়েছে। দেশে নিরব"িছন্ন গণতন্ত্র নিশ্চিত করা যায়নি। বর্তমান ব্যবস'ায় সবকিছুই রাজধানীমুখী। আমাদের লৰ্য, ৰমতার বিকেন্দ্রীকরণ করা, উন্নয়নমুখী করা। উপজেলা, গ্রাম, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিজ্ঞান চর্চার ব্যবস'া করা হবে। ঘরে বসে যেন তারা টাকা আয় করতে পারে সে ব্যবস'া করা হবে। গ্রামীণ জনপদের জন্য তিনি ৰুদ্র ঋণের ব্যবস'ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, সুদ দিতে পারবে না এমনভাবে ঋণ দেয়া হবে না। ঋণের ভার থেকে গ্রামের মানুষকে মুক্তি দিতে হবে।
টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে বিরোধী দলের হৈ চৈ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের এই আওয়াজ ৰমতায় থাকতে শুনতে পারলে ভাল হত। এটা কি তারা সমাধানের জন্য করছেন, না-কি ইস্যু খোঁজার চেষ্টা করছেন। বিরোধী দলীয় নেত্রী আমাকে একটি চিঠি দিয়েছেন। জানি না তাতে কি বার্তা রয়েছে। তবে এই বার্তা অবশ্যই আমি সবাইকে জানাব।
কালো টাকা সাদা করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যাদের টাকা সাদা করা হয়ে গেছে তারা এখন এর সমালোচনা করছেন। এই টাকা দেশে বিনিয়োগ হোক-এটাই আমরা চাই। একারণে এই সুযোগ রাখা হয়েছে।
এর আগে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট শামসুল হক টুকু বিদ্যুৎ সমস্যা প্রসঙ্গে বলেন, হতাশার কিছু নেই। সাত বছর অপেৰা করেছেন। আর একটু অপেৰা করম্নন। আমরা ইতিমধ্যে সর্বো"চ ৪ হাজার ১৪৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সৰম হয়েছি। বিগত সময়ে কয়লা উত্তোলনের কোন ব্যবস'া করে যাননি। আমরা এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে কয়লা উত্তোলনের ব্যবস'া করেছি। কয়লা নীতি শীঘ্রই আমরা বাসৱবায়ন করব। আমাদের সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে সফল হবে।
বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার, চীফ হুইপ উপাধ্যৰ আবদুস শহীদ, নাজমুল হাসান, আমান উল্যাহ, রম্নবি রহমান প্রমুখ।
সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশের ভূখণ্ড
ব্যবহার করতে দেয়া হবে না
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সন্ত্রাসী তৎপরতা চালানোর জন্য কাউকেই বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। সফররত ব্রিটিশ নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস বিরোধী মন্ত্রী লর্ড ওয়েস্টের সঙ্গে গতকাল সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন যমুনায় আলোচনাকালে শেখ হাসিনা এ কথা জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনা ও ব্রিটিশ মন্ত্রী সন্ত্রাস দমনসহ পারস্পরিক স্বার্থ-সংশিস্নষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। সন্ত্রাস দমনে সম্মিলিত প্রয়াস গ্রহণের উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসীদের দেশ, কাল, দল বা কোন ধর্ম নেই। তাদের একমাত্র পরিচয় তারা সন্ত্রাসী। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের সন্ত্রাসীদের মধ্যে একটি যোগসূত্র রয়েছে। সন্ত্রাস প্রতিরোধে তাদের এই যোগসূত্রকে অবশ্যই ভেঙ্গে দিতে হবে। এজন্য সম্মিলিত প্রয়াসের খুবই প্রয়োজন। সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে বাংলাদেশের আইন-শৃংখলা বাহিনীকে বিশেষ প্রশিৰণ দেয়ার জন্য অনুরোধ জানালে ব্রিটিশ মন্ত্রী তাতে ইতিবাচক সাড়া দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার জাতীয় সংসদে বলেছেন, বাজেটে গৃহীত পদৰেপ সঠিকভাবে বাসৱবায়ন করতে পারলে গ্রামে হাহাকার থাকবে না। তিনি বাজেট বাসৱবায়নের জন্য সংসদ সদস্যদের নিজ নিজ এলাকায় সঠিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, টিপাইমুখের কথা বলে বিরোধীদল কি ইস্যু খোঁজার চেষ্টা করছে? আমরা দ্বিপাৰিক আলোচনার মাধ্যমে টিপাইমুখ বাঁধ সমস্যার সমাধান করব। বিরোধীদলীয় সদস্যদের নাম দিতে চাইলে তাদেরকেও প্রতিনিধিদলে অনৱর্ভুক্ত করা হবে। তিনি ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি স্বে"ছায় ছেড়ে দেয়ার জন্য বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশকে দৰিণ এশিয়ার একটি উন্নত আধুনিক ও শানিৱময় দেশ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, তার সরকারের লৰ্য হলো ৰমতার বিকেন্দ্রীকরণ করা, এটা গ্রাম পর্যায়ে বাসৱবায়ন করে সার্বিক উন্নয়ন সাধন করা। নির্বাচনী ইশতেহারেই ছিল উ"চাভিলাষী। তাই জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য উ"চাভিলাষী বাজেট দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, হাজারো চেষ্টা করেও বিরোধী দল এবারের বাজেটকে গরীব মারার বাজেট বলতে পারেননি। এবারেই প্রথম বাজেট ঘোষণার পরে জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি, বাজারে কোন আতঙ্ক ছড়ায়নি। আছরের নামাজের বিরতির পরে ৬টা ২৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতা শুরম্ন করেন। ১ ঘন্টা ৩৫ মিনিটের বক্তৃতায় তিনি ছিলেন প্রাণবনৱ। বাজেটের প্রায় সব অধ্যায় উঠে এসেছে তার ভাষণে। এসময় বিরোধী দলের আসন ছাড়া সংসদ ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। এমনকি ভিআইপি গ্যালারীসহ দর্শক গ্যালারীও ছিল পরিপূর্ণ।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে প্রসৱাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক প্রত্যাহারের প্রসৱাব করেন। এর মধ্যে রয়েছে এলমুনিয়ামের তৈরি জিনিসপত্রের ওপর মূষক প্রত্যাহার, জনশক্তি রপ্তানি প্রতিষ্ঠানের ওপর অতিরিক্ত মূসক, বিড়ি শিল্পের ওপর থেকে মূসক, আসবাবপত্রের ওপর মূসক, নিউজপ্রিন্ট আমদানির ওপর শুল্ক, পনের শ’ সিসি পর্যনৱ গাড়ি ও ২ হাজার সিসি পর্যনৱ মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলের ওপর থেকে শুল্ক, কম দামের মোবাইল ফোনের ওপর থেকে শুল্ক পুনর্বিবেচনার জন্য অর্থমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানান।
শিৰা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি সম্পর্কে সংসদ সদস্যদের দাবির প্রেৰিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শিৰকদের জন্য পৃথক বেতন কমিশন, চাকরি কমিশন গঠন করা হবে। সম্ভব হলে স্নাতক পর্যনৱ অবৈতনিক শিৰা ব্যবস'া চালু করা হবে। তাই এমপিওভুক্তির পুরনো ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভা চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিজ এলাকার শিৰা প্রতিষ্ঠানের মান উন্নয়নে জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহবান জানান।
সরকারী দলের সদস্যদের বাজেট আলোচনায় বেশ কয়েকজন সদস্যের আলোচিত বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারী দলের সদস্য যেভাবে বাজেটের ওপরে তাদের স্বাধীন মত প্রকাশ করেছেন তাতে মনে হয়নি বিরোধী দল অনুপসি'ত। একেই বলে গণতন্ত্রের চর্চা।
বিরোধী দলের সংসদ বর্জনের কঠোর সমালোচনা করে সংসদ নেতা বলেন, তারা উপসি'ত থেকে বাজেটের সমালোচনা করলে অথবা পরামর্শ দিলে খুশী হতাম। কি কারণে তারা সংসদ বর্জন করেছেন তা বোধগম্য নয়। জনস্বার্থে কোন ইস্যু থাকলে একটা কথা থাকতো। প্রথম ইস্যু করলেন বাড়ি। ক্যান্টনমেন্টের সম্পত্তিতে ১৮০ কাঠা ও গুলশানে ৩৮ কাঠার দুইটি বাড়ি তিনি দখল করে আছেন। গুলশানের বাড়ির ভাড়া ভোগ করেন তিনি অথচ এর পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল দিতে হয় সরকারকে। আমি ওনাকে অুনরোধ করবো সেনানিবাসের বাড়িটি ছেড়ে দিন। সেনাবাহিনীর সম্পত্তি তাদের বুঝিয়ে দিন।
এরপরে ইস্যু আনা হলো সংসদের আসন। বিধি অনুযায়ী তারা যা পান, তার চেয়েও বেশি স্পিকার তাদেরকে দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, অর্থমন্ত্রী অত্যনৱ চমৎকারভাবে বাজেট উপস'াপন করেছেন। এই বাজেট আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিফলন। দেশের জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস'া বিবেচনা করে আমরা নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করেছি। কোন্টা মানুষের জন্য ও দেশের জন্য কল্যাণকর তাই দেখা হয়েছে। একবছরের জন্য বাজেট ঘোষণা করা হলেও এতে ৫ বছরের পরিকল্পনার প্রতিফলন রয়েছে। তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী এতো সুন্দরভাবে এতো সময় ধরে এতটা প্রাণনৱকরভাবে বাজেট উপস'াপন করেছেন, মনে হ"েছ তার বয়স ৭৬ নয়, ২৬ বছর।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি আমাদের কুরে কুরে খা"েছ। এটা কিভাবে দূর করা যায় তার ব্যবস'া নিতে হবে। দুদক স্বাধীনভাবে কাজ করবে। তাদের যা যা পদৰেপ নেয়া দরকার তা তারা করবে। সরকার কোন হসৱৰেপ করবে না। মানিলন্ডারিং বন্ধ করতে হবে। যেই এর সঙ্গে জড়িত হয় তার বিরম্নদ্ধে ব্যবস'া নিতে হবে।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা ছিল আমাদের প্রধান নির্বাচনী অঙ্গীকার, তা আমরা পূরণ করতে সৰম হয়েছি। তেল চাল ডাল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস মানুষের ধরার্ছোঁয়ার বাইরে ছিল। প্রত্যেকটা জিনিসের দাম আমরা কমিয়েছি। মূল্যস্ফীতি কমিয়ে এনেছি। কৃষকরা যাতে উৎপাদন করতে পারে আমরা সারের দাম কমিয়ে এনেছি। কৃষকদের সেচ মওসুমে বিদ্যুৎ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লৰ্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ও খাদ্য নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা। গৃহীত পদৰেপ সঠিকভাবে বাসৱবায়ন করতে পারলে গরিব মানুষের হাহাকার থাকবে না। গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। নারীর ৰমতায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মহাজোটের মন্ত্রিসভায় ৪ জন নারী সদস্য রয়েছে। ভবিষ্যতে আরো বাড়ানোর ইঙ্গিত দেন তিনি। কৃষিকে অর্থনীতির প্রাণ হিসাবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, অতীতের মতো এই খাতে সাফল্য ধরে রাখা হবে। মানুষ যাতে দুবেলা দু’মুঠো খেতে পায় তা নিশ্চিত করা হবে। পেনশন পাওয়ার বিষয়ে হয়রানি বন্ধ করে পেনশন প্রাপ্তি সহজকরণ হবে। তিনি বলেন, যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিৰকদের বেতন বৈষম্য দূরীকরণের ব্যবস'া নেয়া হ"েছ । তেলে মাথায় তেল দেয়া আমাদের কাজ নয়। আমরা গরিবের বন্ধু।
বার বার সামরিক স্বৈর শাসকরা ৰমতা দখল করে তা কেন্দ্রীভূত করতে চেয়েছে। দেশে নিরব"িছন্ন গণতন্ত্র নিশ্চিত করা যায়নি। বর্তমান ব্যবস'ায় সবকিছুই রাজধানীমুখী। আমাদের লৰ্য, ৰমতার বিকেন্দ্রীকরণ করা, উন্নয়নমুখী করা। উপজেলা, গ্রাম, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিজ্ঞান চর্চার ব্যবস'া করা হবে। ঘরে বসে যেন তারা টাকা আয় করতে পারে সে ব্যবস'া করা হবে। গ্রামীণ জনপদের জন্য তিনি ৰুদ্র ঋণের ব্যবস'ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, সুদ দিতে পারবে না এমনভাবে ঋণ দেয়া হবে না। ঋণের ভার থেকে গ্রামের মানুষকে মুক্তি দিতে হবে।
টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে বিরোধী দলের হৈ চৈ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের এই আওয়াজ ৰমতায় থাকতে শুনতে পারলে ভাল হত। এটা কি তারা সমাধানের জন্য করছেন, না-কি ইস্যু খোঁজার চেষ্টা করছেন। বিরোধী দলীয় নেত্রী আমাকে একটি চিঠি দিয়েছেন। জানি না তাতে কি বার্তা রয়েছে। তবে এই বার্তা অবশ্যই আমি সবাইকে জানাব।
কালো টাকা সাদা করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যাদের টাকা সাদা করা হয়ে গেছে তারা এখন এর সমালোচনা করছেন। এই টাকা দেশে বিনিয়োগ হোক-এটাই আমরা চাই। একারণে এই সুযোগ রাখা হয়েছে।
এর আগে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট শামসুল হক টুকু বিদ্যুৎ সমস্যা প্রসঙ্গে বলেন, হতাশার কিছু নেই। সাত বছর অপেৰা করেছেন। আর একটু অপেৰা করম্নন। আমরা ইতিমধ্যে সর্বো"চ ৪ হাজার ১৪৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সৰম হয়েছি। বিগত সময়ে কয়লা উত্তোলনের কোন ব্যবস'া করে যাননি। আমরা এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে কয়লা উত্তোলনের ব্যবস'া করেছি। কয়লা নীতি শীঘ্রই আমরা বাসৱবায়ন করব। আমাদের সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে সফল হবে।
বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার, চীফ হুইপ উপাধ্যৰ আবদুস শহীদ, নাজমুল হাসান, আমান উল্যাহ, রম্নবি রহমান প্রমুখ।
সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশের ভূখণ্ড
ব্যবহার করতে দেয়া হবে না
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সন্ত্রাসী তৎপরতা চালানোর জন্য কাউকেই বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। সফররত ব্রিটিশ নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস বিরোধী মন্ত্রী লর্ড ওয়েস্টের সঙ্গে গতকাল সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন যমুনায় আলোচনাকালে শেখ হাসিনা এ কথা জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনা ও ব্রিটিশ মন্ত্রী সন্ত্রাস দমনসহ পারস্পরিক স্বার্থ-সংশিস্নষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। সন্ত্রাস দমনে সম্মিলিত প্রয়াস গ্রহণের উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসীদের দেশ, কাল, দল বা কোন ধর্ম নেই। তাদের একমাত্র পরিচয় তারা সন্ত্রাসী। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের সন্ত্রাসীদের মধ্যে একটি যোগসূত্র রয়েছে। সন্ত্রাস প্রতিরোধে তাদের এই যোগসূত্রকে অবশ্যই ভেঙ্গে দিতে হবে। এজন্য সম্মিলিত প্রয়াসের খুবই প্রয়োজন। সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে বাংলাদেশের আইন-শৃংখলা বাহিনীকে বিশেষ প্রশিৰণ দেয়ার জন্য অনুরোধ জানালে ব্রিটিশ মন্ত্রী তাতে ইতিবাচক সাড়া দেন।