প্রকৃতির পালাবদলে স্নিগ্ধ পরশের ছোঁয়ায় এলো বর্ষা
প্রকৃতির পালাবদলে স্নিগ্ধ পরশের ছোঁয়ায় এলো বর্ষা
শ্যামল মেঘের চঞ্চলতায় প্রকৃতির পালাবদলে এলো বর্ষা। গ্রীষ্মের তপ্ত দাহে যখন জনজীবন অস্থির তখন বর্ষার আগমন যেন প্রকৃতির সেই অবস্থাকে স্নাত করবার জন্য। চোখের পলকে বিজলীর ঝলকানিতে মেঘমেদুর বর্ষা রিমঝিম বৃষ্টি ঝরিয়ে প্রকৃতিকে করে সজীব।ঋতুভিত্তিক উৎসবসমূহ কোনো বিশেষ সমপ্রদায়ের নয়, এটি ঐতিহ্যগতভাবে অসামপ্রদায়িক। আবহমানকাল ধরে পহেলা বৈশাখ, নবান্ন উৎসব, বসন্ত উৎসব ইত্যাদির সঙ্গে সামপ্রতিক বছরগুলোতে নানা আয়োজনে বর্ষা উৎসব বাংলাদেশের অসামপ্রদায়িক মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।গতকাল সোমবার আষাঢ়ের প্রথম দিনে সত্যেন সেন শিল্পী সংঘের পৰ থেকে ঢাকা বিশ্বাবদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার হাকিম চত্বর প্রাঙ্গণে ‘বর্ষা উৎসব-১৪১৬’ উদযাপন করা হয়। স্নিগ্ধ সকালের ছোঁয়ায় প্রিয়াংকা গোপের ‘মিয়া মলস্নার রাগ’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বর্ষাবরণের মধ্য দিয়ে অনুভূত হয় বাংলাদেশের সংস্কৃতি কতো অভিজাত, বৈচিত্র্যময়। এদেশের গান, কবিতা, নাচ, নাটক- সাংস্কৃতিক উপকরণের মধ্যে বর্ষা। বর্ষা প্রকৃতির আশীর্বাদ আবার অভিশাপ যদি এর প্রতি আমরা বিরূপ আচরণ করি। অবশ্য এর ফল আমরা ভোগও করছি। তাই নতুন প্রজন্মকে যদি বৃৰপ্রেমিক করা যায় তাহলে তারা প্রকৃতি প্রেমিক হয়ে পৃথিবীকে রৰা করবে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কুদ্দুছ বলেন, গ্রামবাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্যের সংস্কৃতি বর্ষার গান যা গড়ে উঠেছে নদীকে কেন্দ্র করে। কিন্তু এখন নদী শুকিয়ে যা"েছ মানুষের অযাচিত হস্তৰেপের কারণে। আর টিপাইমুখ বাঁধ নির্মিত হলে এ অবস্থা আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। অনুষ্ঠানে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন ফেরদৌস আরা, শ্যামা রহমান, অদিতি মহসিন, বাপ্পা মজুমদার এবং দলীয় সঙ্গীতে সত্যেন সেন শিল্পী সংস্থা, ধ্র"বতান, বহ্নিশিখা, তালিম, ক্রান্তি, সুর সপ্তক ও নিবেদন। দলীয় নৃত্যতে অংশগ্রহণ করে কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, সুকন্যা, স্পন্দন ও নৃত্যম। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, গ্র"প থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল ঝুনা চৌধুরী, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ড. হায়াৎ মাহমুদ। অনুষ্ঠান শেষে ধরিত্রিকে সবুজ করার লৰ্যে শিল্পী, অতিথি ও সুধীদের মাঝে চারাগাছ বিতরণ করা হয়।এদিকে উদীচীর আয়োজনে প্রতি বছরের মতো চার"কলা ইনস্টিটিউটের লিচুতলায় বর্ষাকে বরণ করা হয়। বর্ষা আবাহন পর্বে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুর"ল ইসলাম, উৎসবের ঘোষণা পাঠ করেন উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন। রবীন্দ্র ও নজর"ল সঙ্গীতের প্রতি চরণে বর্ষার স্তবগীত করা হয়। আবৃত্তি, নৃত্য, আধুনিক লোকসঙ্গীত এবং জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে এ আয়োজন শেষ হয়।