মহাজোট সরকার কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী
মহাজোট সরকার কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসীঃ আব্দুস সোবহান গোলাপ
নিউইয়র্ক থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুস সোবহান গোলাপ বলেছেন, মহাজোট সরকার কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। সেভাবেই নিবাচনী অঙ্গিকার পালনের কাজ চলছে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সংকল্পে সবকিছু করা হচ্ছে সারা বাংলাদেশে। এজন্যে প্রবাসীদের আনতরিক সহায়তা কামনা করা হচ্ছে। নিজেদের মেধা খাটিয়ে যারা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের উন্নয়নে অবদান রাখছেন, তারা সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই মাতৃভূমির জন্যে আরো বেশী অবদান রাখতে সক্ষম হবেন। জনাব গোলাপ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এজন্যে প্রবাসীদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন এবং এ উদ্দেশ্যে উচ্চ শিক্ষার্থে বিদেশে আসতে ইচ্ছুকদের সার্বিক সহায়তার পরিধি আরো ব্যাপক করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, সাড়ে ৩ সপ্তাহের ছুটিতে নিউইয়র্কে এসেছেন আব্দুস সোবহান গোলাপ। তিনি বহু বছর নিউইয়র্কে বসবাস করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে পোস্ট মাস্টার্স প্রোগ্রামে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। নিউইয়র্ক সিটি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ২০০০ সাল পর্যনত দায়িত্ব পালনকালেই ফিরে যান বাংলাদেশে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আনতর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন কয়েক বছর। এরপর সভানেত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গি হিসেবে বেশ কয়েকটি দেশ ভ্রমণ করেছেন মাদারীপুরের সনতান জনাব গোলাপ। গত ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে মহাজোট সরকার জয়ী হওয়ার পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার গঠিত হয়। তারপর দলের নিবেদিতপ্রাণ সংগঠক হিসেবে জনাব গোলাপের অভিজ্ঞতাকে রাষ্ট্রের কাজে ব্যবহারের জন্যে সচিব মর্যাদায় প্রধানিমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী হিসেবে তাকে নিয়োগ করা হয়েছে। নিউইয়র্কে তার স্ত্রী ও সনতানেরা বাস করেন। উত্তর আমেরিকায় বাংলা ভাষায় সর্বাধিক জনপ্রিয় সাপ্তাহিক ঠিকানাকে প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে (১২ জুন সংখ্যায়) বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘ কথা বলেছেন মুক্তিযোদ্ধা জনাব গোলাপ।তিনি বলেছেন, দিন বদলের সনদপ্রাপ্ত বর্তমান সরকারের কার্যক্রমকে দেশপ্রেমিক প্রতিটি নাগরিক সমর্থন দিচ্ছেন। সমর্থনের এ ধারাকে দায়িত্বের প্রতিটি ধারায় বিসতৃত দেখতে চান জননেত্রী শেখ হাসিনার সহযোগীরা। এজন্যে সকলেই আনতরিকতার সাথে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে চলেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে এমএসএস করার পর নরওয়ের ট্রনঢেইম ইউনিভার্সিটি থেকে লিঙ্গুইশটিক্স ডিপ্লোমা এবং নরওয়ে ভাষায় উচ্চতর ডিগ্রি গ্রহণকারী জনাব গোলাপ বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গণে ছাত্রলীগের ব্যানারে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু অঘটন ঘটানো হয়েছে সরকারকে বিব্রত করার জন্যে। কিন্তু সরকার শক্তহাতে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছে। জনাব গোলাপ বলেন, ঐসব অপকর্মে বাইরের লোকজনের ইন্ধন ছিল। সত্যিকার অর্থে যারা ছাত্রলীগ করেন তারা কখনোই অমন হীনকর্মে লিপ্ত হতে পারেন না। কেননা আমরাও ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত ছিলাম সুদীর্ঘ সময়। জনাব গোলাপ বলেন, প্রকৃত অর্থে যারা ছাত্র তাদের নিয়ে ছাত্রলীগ পুনর্গঠিত হবে এটাই চান আমাদের নেত্রী। মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে ছাত্রলীগের কর্মকান্ডে ওতপ্রোতভাবে জড়িত হন সে ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট সকলে সজাগ রয়েছেন।জনাব গোলাপ বলেন, মহাজোট সরকার গঠনের পর প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল দ্রব্যমূল্য হ্রাস করে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনা। ইনশাআল্লাহ সকলের সমিমলিত প্রচেষ্ঠায় জননেত্রী শেখ হাসিনার সে চেষ্টা সফল হয়েছে। কৃষককে অর্ধেক মূল্যে সার দেয়া হচ্ছে। ডিজেলের দামও কমানোর হয়েছে। বিদ্যুৎ ঘাটতি প্রসঙ্গে জনাব গোলাপ বলেন, ১৯৯৬ সালে দায়িত্ব গ্রহণের সময় বাংরাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হতো ৪ হাজার মেগাওয়াট। সে সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক তত্ত্বাবধানে ২০০১ সাল নাগাদ ঐ ৪ হাজারের সাথে ১৬০০ মেগাওয়াট যোগ করা হয়। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যনত বিএনপি-জামাত জোট সরকার এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎও যোগ করতে পারেনি ঐ ৫৬০০ মেগাওয়াটের সাথে। তারপর ডঃ ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন কেয়ারটেকার সরকারও পারেনি দু’বছরে। জনাব গোলাপ বলেন, এই ৭ বছরে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে, কিন্তু উৎপাদন বাড়েনি। বর্তমান সরকার সার্বিক উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে। তবে রাতারাতি সম্ভব হবে না। ৫/৬ মাসের মধ্যেই এর একটি সুফল দেখতে পাবে সমগ্র জাতি। তিনি বলেন, কওমী মাদ্রাসায় আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফলে মাদ্রাসা থেকে পাশ করা ছেলে-মেয়েদের কর্মসংস্থানে কোন সমস্যা হবে না। গত ৫ মাসে বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতিও অনুকূলে এসেছে। বিনিয়োগে আগ্রহীরা যাতে কোন ধরনের গাফিলতির শিকার না হন সে ব্যাপারে সরকার সজাগ রয়েছে। জনাব গোলাপ বলেন, দুর্নীতির অপবাদ নিয়ে যাতে মহাজোট সরকারকে বিদায় নিতে না হয় সে ব্যাপারে সজাগ রয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। দুর্র্নীতির অভিযোগ উঠলেই প্রধানমন্ত্রীর কঠোর দৃষ্টি পড়ে সেদিকে। এ ব্যাপারটি সচিবালয় থেকে সকল পর্যায়ে সকলেই অবগত রয়েছেন। জনাব গোলাপ বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনাকে সফল করতে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারী-বেসরকারী অফিস, ভূমি ব্যবস্থাপনা থেকে রাজস্ব অফিস, ট্যাক্স-ব্যাংক-বীমা সবকিছুকে কম্প্যুটারের আওতায় আনা হচ্ছে। এ কাজটি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত আগ্রহে। কেননা বাংলাদেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কথা ও কাজে ইতিপূর্বে মিল পেয়েছেন বলেই গত নির্বাচনেও ব্যাপকভাবে সমর্থন দিয়েছেন। সে সমর্থনকে জিইয়ে রাখতে হলে নির্বাচনী অঙ্গিকারগুলো প্রতিপালনে সর্বাতক প্রচেষ্টার বিকল্প নেই বলে আমরা সকলে মনে করছি। জনাব গোলাপ বলেন, টুয়েন্টি টুয়েন্টি ওয়ান ভিশনের পরিপূরক একটি সামাজিক ব্যবস্থা গড়তে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে সংহত করতে হবে। তাই বিরোধী দলের সহায়তার ক্ষেত্রেও সরকারের মনোভাব অত্যনত উদার। দেশপ্রেমিক প্রতিটি বাংলাদেশী আজ বদ্ধ পরিকর বিশ্বায়নের পুরো সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে।