এশিয়ান হাইওয়েতে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায়

এশিয়ান হাইওয়েতে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায়

ঢাকা, জুন ১৫ ( টোয়েন্টিফোর ডটকম)- এশিয়ান হাইওয়েতে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, "বাংলাদেশকে এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কের পক্ষভূক্ত করার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। "ইতিমধ্যেই ২৮টি দেশ এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এশিয়া-ইউরোপ মহাদেশের মধ্যে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি ও বিভিন্ন দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা, পরিবহন অবকাঠামোর উন্নয়নের লক্ষ্যে ইউএন এসকাপ ১৯৫৯ সালে এশিয়ান হাইওয়ের কার্যক্রম শুরু করে। বাংলাদেশ তখন থেকেই এর সদস্য।" আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেছেন, "আমরা এ বিশ্বায়নের যুগে বিচ্ছিন্ন থাকতে পারি না। থাকাটা কোনও শুভবুদ্ধির লক্ষণ হবে না। জনগণের কল্যাণ যদি সুনিশ্চিত করতে চাই, জনগণের ভাগ্য উন্নয়ন করতে চাই, তাহলে সবার সঙ্গে থাকতে হবে। এটাতো আমরা সবাই জানি এশিয়ান হাইওয়ে থেকে যদি বিচ্ছিন্ন থাকি, তাহলে আমরা মোটামুটি একঘরে হয়ে থাকবো। এটি নিশ্চয় কারও কাম্য নয়।" প্রেস সচিব বলেন, ১৯৯২ সালের এপ্রিলে বেইজিংয়ে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে স্থল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠায় এশিয়ান ল্যান্ড ট্রান্সপোর্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট গঠনের বিষয় অনুমোদিত হয়। ২০০৩ সালের নভেম্বরে এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে ইন্টার-গভর্নমেন্টাল এগ্রিমেন্ট অন দি এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্ক প্রণয়ন করা হয়। চুক্তিটি কার্যকর হয় ২০০৫ সালের ৪ জুলাই থেকে। চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য উন্মুক্ত ছিল একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তিনি বলেন, নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশ চুক্তি স্বাক্ষর করেনি। চুক্তির মধ্যে বাংলাদেশের তিনটি রুট আন্তর্ভুক্ত আছে। বেনাপোল-যশোর-ঢাকা-কাঁচপুর-সিলেট-তামাবিল (এশিয়ান হাইওয়ে-১)। বাংলাবান্ধা-হাটিকুমরুল-ঢাকা-কাঁচপুর-সিলেট-তামাবিল (এশিয়ান হাইওয়ে রুট-২)। মংলা-যশোর-হাটিকুমরুল-ঢাকা-কাঁচপুর-চট্টগ্রাম কক্সবাজার-টেকনাফ মায়ানমার সীমান্ত (এশিয়ান হাইওয়ে-৪১)। আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাংলাদেশ এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কে যুক্ত হলে মহাদেশব্যাপী মানুষ ও পণ্য চলাচলের সুযোগ সুগম হবে। চুক্তির বাইরে থাকলে চুক্তি পরিবর্তন বা সংশোধনের কোনও সুযোগ থাকবে না। ১ লাখ ৪১ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ এ এশিয়ান হাইওয়ে ইউরোপের সঙ্গে যুক্ত। ১৯৬০ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত এর প্রথম পর্যায়ের কাজ সম্পন্ন হয়। আর্থিক সহায়তা স্থগিত হয়ে যাওয়ার ১৯৭৫ সালের দিকে এর অগ্রগতি স্তিমিত হয়ে পড়ে। তবে গত শতকের ৮০ ও ৯০ দশকে আঞ্চলিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন এর কাজে নতুন গতির সঞ্চার করে। ১৯৯২ সালের ৪৮তম অধিবেশনের পর এটি এসকাপের ল্যান্ড ট্রান্সপোর্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের অন্যতম একটি বিষয়ে পরিণত হয়। ইতোমধ্যে এশিয়ান হাইওয়ের উন্নয়নের জন্য ২৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে। এরপরও ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি রয়েছে। এসকাপ সদস্যদেশগুলোকে নিয়ে অর্থের উৎস চিহ্নিত করার কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব জানান, সোমবারের মন্ত্রীসভার বৈঠকে এশিয়ান হাইওয়েতে যুক্ত হওয়া ছাড়াও সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতি ২০০৯ অনুমোদন করা হয়। দেশে ২৮ হাজার ৮৭৯ টি সরকারি জলমহাল আছে। এর মধ্যে ২০ একর আয়তনের জলমহালের সংখ্যা ২৫ হাজার ৬৭৪টি। তিনি বলেন, এ জন্য সব বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের লিখিত মতামত নেওয়া হয়েছে। এ মতামতের ভিত্তিতে এসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০ একরের বেশি আয়তনের জলমহাল বিষয়ে জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি এবং ২০ একরের কম আয়তনের জলমহাল নিয়ে উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। এ ছাড়া বৈঠকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধন) আইন ২০০৯ এর নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

Popular posts from this blog

THE CONSTITUTION OF THE BANGLADESH AWAMI LEAGUE

ইতিহাসবন্ধনী

Justice order of the day