জার্মানিতে হিটলার হত্যা প্রচেষ্টার ৬৫তম বার্ষিকী

জার্মানিতে হিটলার হত্যা প্রচেষ্টার ৬৫তম বার্ষিকী


৬৫ বছর আগে ঠিক এই দিনে আডলফ হিটলারকে হত্যা করার একটা প্রচেষ্টা হয়েছিল৷ প্রয়াসটি ব্যর্থ হওয়ায় হত্যা পরিকল্পনায় জড়িতদের সবাইকেই প্রাণ দিতে হয়েছিল৷

১৯৪৪ সালের ২০শে জুলাই আডলফ হিটলারকে হত্যার চেষ্টাটা ব্যর্থ হওয়ায় পৃথিবীকেও আরো কিছুদিন নিষ্ঠুরতা, নির্মমতার যাঁতাকলে পিষ্ট হতে হয়েছিল, কারণ হিটলার অবশেষে চিরবিদায় নিয়েছিলেন ১৯৪৫ সালের ৩০শে এপ্রিল৷ ওই ৯ মাসে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কলঙ্কের অধ্যায়ে আরো কত সহস্র কালো মুহুর্ত যোগ হয়েছিল সে হিসেব বের করা কঠিন, তবে প্রত্যক্ষ এবং তাৎক্ষণিক যে ফলাফল হয়েছিল, তা হলো, হত্যার পরিকল্পনাকারীদের জীবনাবসান৷ হিটলার তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে ব্যস্ত৷ তাকে থামানোর দুটো উপায়ই ছিল, এক, যুদ্ধে জার্মানির পরাজয় অথবা দেশের মাটিতেই তাকে হত্যা করা৷ জার্মান সেনাবাহিনীর এক কর্নেল দ্বিতীয় পথটাই বেছে নিয়েছিলেন৷ ৩৬ বছর বয়সী ওই কর্নেলের নাম কাউন্ট ক্লাউস ফন স্টাউফেনব্যার্গ৷ তার সঙ্গে অবশ্য আরো কয়েকজন ছিলেন৷ স্টাউফেনব্যার্গ আর তার সঙ্গীরা চেয়েছিলেন হিটলারকে হত্যা করে পশ্চিমা মিত্র শক্তির সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাতে করে বিশ্বযুদ্ধটা থামে৷ মহৎ উদ্দেশ্যে বড় বেশি ঝুঁকি নিয়ে ফেলেছিলেন স্টাউফেনব্যার্গ৷ তখনকার পূর্ব প্রাশিয়া, অর্থাৎ এখনকার পোল্যান্ডে জার্মানির যে সামরিক দপ্তর ছিল সেখানে হিটলার মাঝে মাঝে যেতেন৷ একটা কক্ষে তাঁর জন্য যে বিশেষ চেয়ার-টেবিল রাখা ছিল সেখানেই একটা ব্রিফকেসে করে বোমা রেখে এসেছিলেন স্টাউফেনব্যার্গ৷ ব্রিফকেসটা রেখেই চলে গিয়েছিলেন বার্লিন৷ সেখানে গিয়ে বোমাটা ফাটার খবরের অপেক্ষা করতে লাগলেন৷ এক সময় খবর এলো, ফুটেছে বোমা৷ স্টাউফেনব্যার্গ আর তার সঙ্গীরা ধরে নিলেন হিটলার-অধ্যায় শেষ৷ কিন্তু আসলে যা ঘটেছে, তা হলো, আরেক সামরিক কর্মকর্তা কিছু না বুঝেই ব্রিফকেসটা পাশের আরেকটা টেবিলের নিচে সরিয়ে রাখায় হিটলার সামান্য আহত হলেও মারা যাননি৷ একই কক্ষে তাঁর সঙ্গে বৈঠকে বসা ২৪ জনের মধ্যে ৪ জন মারা গেলেও হিটলারের বেঁচে যাওয়া মানে তো পরিকল্পনাকারীদের মৃত্যু অবধারিত৷ তাই হয়েছিল৷ ধরে এনে স্টাউফেনব্যার্গ আর জেনারেল ফ্রিডরিখ ওলব্রিখটসহ চারজনকে ঝোলানা হয় ফাঁসিতে৷ হত্যা-পরিকল্পনায় জড়িতদের আরেকজনকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়৷
স্টাউফেনব্যার্গদের হিটলার হত্যা পরিকল্পনা ভেস্তে গেলেও তাঁদের এই মহতী প্রয়াসকে সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করছে জার্মানি৷ সোমবার বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে দিনটিকে স্মরণ করা হয়৷
প্রতিবেদক: আশীষ চক্রবর্ত্তী

Popular posts from this blog

THE CONSTITUTION OF THE BANGLADESH AWAMI LEAGUE

ইতিহাসবন্ধনী

ব্রিগেডিয়ার বারীর যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা