শেখ হাসিনাই ৬ দফার পক্ষে প্রথম গণরায় নিয়ে আসেন

শেখ হাসিনাই ৬ দফার পক্ষে প্রথম গণরায় নিয়ে আসেন
সৈয়দ বোরহান কবীর:
গত ১০ জুলাই শুক্রবার ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। এই উপলক্ষে আয়োজিত পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে তিনি এক স্মৃতিতাড়ানিয়া বক্তৃতায় ’৬০-এর দশকে মেডিক্যাল কলেজের পাশেই বর্তমানে বেগম বদরুন্নেসা কলেজের (তৎকালীন সরকারি ইন্টারমিডিয়েট কলেজে) ছাত্রী সংসদ নির্বাচনের স্মৃতিচারণ করেন। এই স্মৃতিচারণের সূত্র ধরে এ সম্পর্কে পাওয়া গেছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। যে তথ্য প্রমাণ করে ’৬৬-তে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ৬ দফা ঘোষণা করেছিলেন, তার পক্ষে প্রথম গণরায় নিয়ে আসেন তার কন্যা শেখ হাসিনা।
১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তির সনদ হিসেবে ৬ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এই ৬ দফাকে পাকিসৱানি শাসকরা ‘পাকিসৱান ভাঙার ষড়যন্ত্র’ হিসেবে ঘোষণা করেন। ৬ দফার ভিত্তিতে যেন কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারে এজন্য মোনায়েম খান দমন-পীড়ন-নিপীড়নসহ সবধরনের পন্থা গ্রহণ করতে থাকেন। এরকমই একটি সময়ে বেগম বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রী সংসদ নির্বাচন ডাকা হয়। এসময় মেয়েদের ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে ছাত্র ইউনিয়ন ছিল শক্তিশালী। ছাত্রলীগ ছিল দুর্বল।
এই নির্বাচনে কলেজের ছাত্রলীগ শেখ হাসিনাকে সহ-সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনীত করেন। এসময় মোনায়েম খান ঘোষণা করেন যেকোনো মূল্যে শেখ হাসিনাকে পরাজিত করতে হবে। মহিলা ছাত্রলীগের দুর্বল সাংগঠনিক ভিত্তির কারণে তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতারাও শেখ হাসিনার বিজয় সম্পর্কে সন্দিহান ছিলেন। মোনায়েম খানের অবস্থানের বিপরীতে অবস্থান নেন ঐ কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মোনায়েম খানপন্থিরা মনে করে, এই নির্বাচনে শেখ হাসিনার বিজয় হবে ৬ দফার পক্ষে ম্যান্ডেট। অন্যদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই নির্বাচনকে ৬ দফার পক্ষে গণভোট বিবেচনা করে।
এই সময় শেখ হাসিনা দৃঢ়তার সঙ্গে নির্বাচনি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন। শেখ হাসিনা তার ব্যক্তিগত ক্যারিশমা এবং সাংগঠনিক দক্ষতাবলে ছাত্রীদের মধ্যে একটি দক্ষ কর্মীবাহিনী গঠন করেন। নির্বাচনে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পোস্টার লেখা থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। এই নির্বাচনের দিকে দৃষ্টি নিবন্ধিত হয় গোটা দেশের।
নির্বাচনে শেখ হাসিনা দু-তৃতীয়াংশের বেশি ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন। উলেস্নখ্য, বঙ্গবন্ধু ৬ দফা ঘোষণার পর এটিই ছিল প্রথম কোনো নির্বাচন। তাই এই নির্বাচনের মাধ্যমে ৬ দফার পক্ষে প্রথম গণরায় এনেছিলেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর দৃঢ়তা, সাধারণ মানুষের প্রতি আস্থা এবং জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করার অদম্য আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ শেখ হাসিনার মধ্যে প্রথম যে সময় স্ফুরিত হয়েছিল, আজ তার নেতৃত্বেই জাতি নতুন দিনের স্বপ্ন বাসৱবায়নের জন্য কাজ করছে।

Popular posts from this blog

THE CONSTITUTION OF THE BANGLADESH AWAMI LEAGUE

ইতিহাসবন্ধনী

ব্রিগেডিয়ার বারীর যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা