আন্তর্জাতিক চাপের মুখেও নতি স্বীকার করবে না ইরান

আন্তর্জাতিক চাপের মুখেও নতি স্বীকার করবে না ইরান

ইরানে বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ দমনে কট্টরপন্থী সরকারের কঠোর অবস্থানের মুখেও, এবার আইনী লড়াইয়ের অঙ্গীকার করতে প্রস্তুত বিরোধী নেতা মীর হোসেইন মুসাভি৷
ওদিকে, বিক্ষোভকারীদের সমর্থন করেছে জার্মানি সহ পশ্চিমা বিশ্ব৷
বৃহস্পতিবার ইরানের অভ্যন্তরে আন্দোলনকারীদের ওপর দমন পীড়নের তীব্রতা আরও বাড়ানো হয়েছে৷ মুসাভিপন্থীদের ওপর বেধড়ক মারধর চালানোর বিভিন্ন মর্মবিদারক দৃশ্য দেখা গেছে বেশ কিছু টিভি চ্যানেলে৷ এরপরেও মুসাভির স্ত্রী ইরানিদের অধিকার রক্ষায় বৈধ বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়াটা অন্যতম কর্তব্য বলে মন্তব্য করেছেন৷ আর তাঁর ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে, আবারও বিক্ষোভের আহ্বান জানিয়েছেন মুসাভি৷


ইরানের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ্ হোসেইন আলী মোন্তাজেরি এদিন সে দেশের সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, বিরোধীদের ওপর দমন-নিপীড়ন চালিয়ে গেলে সরকারের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে৷ তিনি বলেন, ইরানীরা যদি সমবেত হয়ে, শান্তিপূর্ণভাবে তাদের যৌক্তিক দাবির কথা বলতে না পারে, অথবা বলতে গিয়ে তাদের যদি দমন-পীড়নের শিকার হতে হয়, তাহলে জনমনে হতাশার সৃষ্টি হতে পারে৷ আর সে হতাশা ব্যাপক ক্ষোভে রূপ নিলে, সেই বিক্ষোভ সরকারকেও হঠিয়ে দিতে পারে৷ তাই ইরানের নতুন সরকারকে 'অবৈধ' আখ্যা দিয়েছেন দেশটির অপর সংস্কারবাদী ধর্মীয় নেতা মেহদি কারুবি৷
এদিকে, ব্রাসেলসে নির্বাচন বিরোধী বিক্ষোভকারীদের ইউরোপীয় ইউনিয়ন সমর্থন দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বেলজিয়ামে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আলী আজঘা খাজি৷ তিনি বলেন, ইইউ-র উচিৎ ইসলামী প্রজাতন্ত্রটির অভ্যন্তরীন বিষয়ে নাক না গলানো৷ এছাড়া, শান্তিপূর্ণভাবে যারা বিক্ষোভ করছেন, জার্মানি তাদের পাশে আছে বলে মন্তব্য করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷
তবে শুধু পশ্চিমা বিশ্ব নয়, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত মুসাভিকে সমর্থন দিচ্ছেন ইরানের প্রভাবশালী সাবেক প্রেসিডেন্ট আকবর হাসেমি রাফসানজানিও৷ শোনা যাচ্ছে, গত সপ্তাহে বিক্ষোভে নিহত এক নারীর স্মরণে শুক্রবার কয়েক হাজার বেলুন ওড়ানোর পরিকল্পনা করেছে মুসাভির সমর্থকরা৷
অন্যদিকে, মুসাভি নির্বাচন বাতিলের দাবি করলেও, এ সম্ভাবনা একেবারে নাকচ করে দিয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ তত্ত্বাবধায়ক পরিষদ৷ বিক্ষোভকারীদের সমর্থন করেছে জার্মানি সহ পশ্চিমা বিশ্বতাদের কথায়, নির্বাচন নিয়ে সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখার পরও তাতে কোন বড় ধরনের জালিয়াতি খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ শুধু তাই নয়, এবারের নির্বাচনকে ইসলামিক বিপ্লবের পর ইরানের সবচেয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন বলে দাবি করেছেন পরিষদের এক মুখপাত্র৷
আর মেক্সিকোতে ইরানি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হাসান ঘাদিরি বলেছেন যে, বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা ইরানি জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ মাত্র৷
তাই ইরানের চরমপন্থী নেতৃত্ব দেশের অভ্যন্তরের বিক্ষোভ আন্দোলনের দায় চাপিয়ে চলেছে বিদেশী শক্তি এবং পশ্চিমাবিশ্বের ঘাড়ে৷ কিন্তু এখানেই শেষ নয়৷ ইরানের প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাঁর পূর্বসূরির মতোই আচরণ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ৷ বৃহস্পতিবার ইরানের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাক গলানোর জন্য ওবামাকে ক্ষমা চাইতেও বলেছেন তিনি৷ প্রসঙ্গত, ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যানকারীদের যেভাবে দমন করা হয়েছে তাতে তিনি 'ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত' বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন ওবামা৷

Popular posts from this blog

THE CONSTITUTION OF THE BANGLADESH AWAMI LEAGUE

ইতিহাসবন্ধনী

ব্রিগেডিয়ার বারীর যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা