গাছের প্রতি যত্নবান হয়ে সবুজের সমারোহ গড়ে তুলতে হবে -প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রোববার ঢাকায় জাতীয় বৃক্ষরোপণ আন্দোলন উপলক্ষে ঢাকায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে গাছের চারা রোপণ করেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব উষ্ণতার কারণে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ উপকূলীয় এলাকা সমুদ্রগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য দেশব্যাপী ব্যাপকহারে বৃক্ষ রোপণের আহবান জানিয়েছেন।গতকাল

রোববার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে �জাতীয় বৃক্ষরোপণ আন্দোলন ও বৃক্ষমেলা-২০০৯' এর উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমান সরকার বনজ সম্পদ বৃদ্ধির জন্য বন মহাপরিকল্পনানুযায়ী ২০১৫ সালের মধ্যে দেশের ভূখন্ডের ২০ ভাগ বনায়নে উন্নীত করার লক্ষ্যে ৪শ' ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এই প্রকল্প গরীব জনগণের আর্থিক উপকারের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় সহায়ক হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মিহির কান্তি মজুমদার এবং ধন্যবাদ জানান প্রধান বন-সংরক্ষক মোহাম্মদ আবদুল মোতালেব।অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বৃক্ষরোপণ জাতীয় পুরস্কার-২০০৮ প্রাপ্তদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। এছাড়া তিনি সামাজিক বনায়নে অর্জিত লভ্যাংশও বিতরণ করেন। পরে তিনি বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে একটি নাগেশ্বরী গাছের চারা রোপণ করেন।অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ৩ টাকা মূল্যের একটি স্মারক ডাকটিকিট ও ৬ টাকা মূল্যের উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন।অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, গাছপালা ঝড়-ঝঞ্ঝা, খরা, বন্যা ও জলোচ্ছবাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে সবুজকে রক্ষা করে। তাই আমাদের সবার জন্য গাছের প্রতি যত্নবান হয়ে দেশব্যাপী গড়ে তুলতে হবে সবুজের সমারোহ।তিনি বলেন, পরিবেশের অন্যতম উপাদান গাছপালা। ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশের জন্য একটি দেশে ২৫ ভাগ বন থাকা দরকার। কিন্তু বাংলাদেশে সেই বনভূমি রয়েছে ২৫ লাখ হেক্টর যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।তিনি বলেন, বাংলাদেশের জলবায়ু, মাটি, আবহাওয়া, বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রা গাছপালার জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এ বছরের বৃক্ষরোপণ আন্দোলনের প্রতিপাদ্য- �গাছ লাগিয়ে ভরবো দেশ, বদলে দেব বাংলাদেশ'র কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আসুন সবাই মিলে যেখানে সম্ভব সেখানে গাছ লাগিয়ে ও সংরক্ষণ করে দেশকে সবুজে সবুজে ভরে দেই। এ প্রসঙ্গে তিনি সবাইকে একটি ফলদ, একটি বনজ ও একটি ঔষধি গাছ লাগানোর পরামর্শ দেন।প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে বৃক্ষরোপণ আন্দোলনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, সাবেক রেসকোর্স ময়দান বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গাছ লাগিয়ে তিনি এ আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন।প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে তার সরকারের আমলে সারাদেশে ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা সারাদেশে গাছ লাগিয়েছি। আর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ব্যাপক হারে বৃক্ষ নিধন করেছে। এক্ষেত্রে আর কেউ যাতে এ ধরনের বৃক্ষ নিধন করতে না পারে সেজন্য জনগণকে সজাগ থাকার আহবান জানান।শেখ হাসিনা বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে সারাবিশ্ব আজ মারাত্মক হুমকির মুখে। ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে ঘূর্ণিঝড়ের মাত্রাও বাড়ছে। এ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে উপকূলীয় বনায়ন কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। বিশ্ব উষ্ণতায় জলবায়ু পরিবর্তন এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞরা আশংকা করছেন বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল সমুদ্রগর্ভে তলিয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, এ থেকে উপকূলীয় অঞ্চলকে রক্ষার লক্ষ্যে এ বছর তাঁর সরকার জনগণের অংশগ্রহণে �কমিউনিটি বেইজড এডাপটেশন টু ক্লাইমেট চেইঞ্জ থ্রো কোস্টাল এফরেস্টেশন ইন বাংলাদেশ' প্রকল্প গ্রহণ করেছে।প্রধানমন্ত্রী বেশি করে দেশীয় গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়ে বলেন, এক সময় হাজারও প্রজাতির লতাপাতা, গাছপালায় ভরপুর ছিল এদেশ। কিন্তু গাছপালা-বনজঙ্গল নিধনের ফলে এসব প্রাকৃতিক গাছপালা আজ বিলুপ্তির পথে।

Popular posts from this blog

THE CONSTITUTION OF THE BANGLADESH AWAMI LEAGUE

ইতিহাসবন্ধনী

ব্রিগেডিয়ার বারীর যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা