জাতি কলঙ্কমুক্ত হলো: আওয়ামী লীগ

'Justice must not only be done, it must be seen to be done'..........true after waiting fo long 34 years Bangladeshi Nation get justice. It's a historical judgement. The country is relieved from black history forever and justice is restored"


জাতি কলঙ্কমুক্ত হলো: আওয়ামী লীগ

ঢাকা, নভেম্বর ১৯ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- বঙ্গবন্ধু মামলার আপিলের রায়কে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগ বলেছে, এর মধ্য দিয়ে জাতি কলঙ্কমুক্ত হলো। বৃহস্পতিবার বিকালে আওয়ামী লীগ তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়। এর আগে দুপুরেই আপিল বিভাগ পাঁচ আসামির আপিল আবেদন খারিজ করে ১২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে দেওয়া হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে। ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, "আমরা এ রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। দীর্ঘ ৩৪ বছর প্রতীক্ষার পর বাঙালি জাতি এক কলঙ্ক কালিমা থেকে রক্ষা পেলো। প্রমাণিত হলো- যত শক্তিধরই হোক, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।" বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মদদ দেওয়ার জন্য সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের পাশাপাশি বর্তমান রাজনৈতিক জোট শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদেরও সমালোচনা করেন আশরাফ। তিনি বলেন, "আত্মস্বীকৃত খুনিরা যেমন জাতির জনককে শারীরিকভাবে হত্যা করে, তেমনি জিয়াউর রহমান সামরিক ফরমান বলে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও আমাদের পবিত্র সংবিধানকে। "জেনারেল এরশাদ ১৯৮৬ সালে খুনি ফারুককে তথাকথিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী করেন। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের প্রথমে 'প্রগস' এবং পরে ১৯৮৭ সালে ফারুক-রশিদকে দিয়ে ফ্রিডম পার্টি নামে একটি ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দল গঠন করান। খালেদা জিয়া তার স্বামীর পথ অনুসরণ করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের কেবল আশ্রয়-প্রশ্রয়ই দেননি, তাদের রাজনৈতিকভাবেও পুনর্বাসিত করেন।" আওয়ামী লীগ শুক্রবার সারাদেশে সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনার কর্মসূচি দিয়েছে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদে মিলাদ, দোয়া ও শোকরানা নামাজ আদায় করা হবে বলে আশরাফ জানান। রায়ের খবর পেয়ে শেখ হাসিনা কেঁদেছেন জানিয়ে আশরাফ বলেন, "সে সময় আমরা তার পাশে ছিলান। তিনি (হাসিনা) বিশ্বাস করেন, সব হত্যাকাণ্ডের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে।" রায়ের বিষয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আশরাফ বলেন, "উনি (শেখ হাসিনা) প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন না। ন্যায়বিচার চেয়েছিলেন, উনি ন্যায়বিচার পেয়েছেন।" বঙ্গবন্ধু হত্যার পর মোশতাক সরকার ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করায় এর বিচারের পথ রুদ্ধ ছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে ওই অধ্যাদেশ বাতিল করে। আশরাফ বলেন, "শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের অন্য সব নাগরিকের মতো পিতা, মাতা, ভাই হত্যার বিচারের অধিকারও পাননি। "অধিকার বঞ্চিত দুই বোন বাংলাদেশের মানুষের কাছে তো বটেই, বিশ্বের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন; ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক স�প্রদায়ের সহানুভূতি ও সমর্থন চেয়েছেন।" আশরাফ বলেন, জেল হত্যাকাণ্ডের পুনর্বিচার, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচারসহ চারদলীয় জোট সরকারের সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যার বিচার করা হবে। বর্তমান সরকার জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের বিচার করবে কিনা- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, "তার স্ত্রী (খালেদা) তো বলেছেনই, তারা বিচার পেয়ে গেছেন।" বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ছয় ফাঁসির আসামি বিদেশে পালিয়ে আছেন। তাদের ফেরত আনার বিষয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী আশরাফ বলেন, "পলাতক আসামিরা যেখানেই থাকুক না কেন, যত সময়ই লাগুক না কেন, তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে। তাদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আগ্রগতি হচ্ছে।" "বিশ্ব রাজনীতির যে পরিস্থিতি তাতে এ আসামিদের চিহ্নিত করে আইনের মুখোমুখি দাঁড় করানো সহজ হবে। কারণ, এ বিচার ছিলো, স্বচ্ছ ও স্বাভাবিক। এই বিচারে বিশ্ববাসী সন্তুষ্ট", বলেন তিনি। রায় কত দিনের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে- জানতে চাওয়া হলে আশরাফ সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলেন, "আমরা ৩৪ বছর অপেক্ষা করেছি। আরো ৩৪ বছর অপেক্ষা করতে রাজি আছি। তবুও ন্যায়বিচার চাই।" দলীয় নেতা-কর্মীদের ধৈর্য ধরে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, "এটা (রায়) কোনো উল্লাসের বিষয় নয়। কেননা, আমরা তো আর বঙ্গবন্ধুকে ফিরে পাবো না। "আমরা মনে করি, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সর্বোত্তম প্রতিশোধ হবে জাতির জনকের আদর্শ প্রতিষ্ঠা এবং তার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্য-শোষণ-বঞ্চনা-বৈষম্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা।" সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মতিয়া চৌধুরী, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, মাহবুব-উল-হক হানিফ, আব্দুল মান্নান খান, আসাদুজ্জামান নূর, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, আখতারুজ্জামান, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আহম্মদ হোসেন, মৃণাল কান্তি দাস প্রমুখ। ছাত্রলীগের মিলাদ বঙ্গবন্ধু মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে ছাত্রলীগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকও এতে যোগ দেন। ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "এই রায়ের মাধ্যমে বাঙালি জাতি পাপমুক্ত হলো। তাই পুরো জাতির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে আমরাও তা স্বাগত জানাই।" ছাত্রলীগের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী মিলাদে অংশ নেয়।

Popular posts from this blog

THE CONSTITUTION OF THE BANGLADESH AWAMI LEAGUE

ইতিহাসবন্ধনী

ব্রিগেডিয়ার বারীর যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা