প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি

প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি
অরপি আহমেদ
বাঙালীর ইতিহাস হাজার বছরের ইতিহাস। হাজার বছর ধরেই আমরা বাঙালীরা কায়মনে বাঙালী। বাংলা, বাঙালী আর বাঙ্গালিয়ানা সংস্কৃতি আমরা হাজার বছর ধরে লালন করে আসছি। কিন্তু এই বাঙালীরা জন্ম থেকেই জ্বলছে। মানুষ হবার চেষ্টা করছে। কিন্ত এখনো মানুষ হতে পারেনি। ১৯৭২ সালে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করার পর বঙ্গবন্ধু কবি গুরুকে উদ্দেশ্য করে বলেছিল ” কবি আসো দেখে যাও। আমার বাঙালী আজ মানুষ হয়েছে। কবি গুরু তোমার কথা মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে।” বঙ্গবন্ধুর সেদিনের কথা সঠিক ছিলনা। সেদিন বাঙালী মানুষ হতে পারেনি। কবি গুরুর কথাই সঠিক ছিল। এখনো সঠিক আছে। কবি গুরু বলেছিল “সাড়ে ৭ কোটি বাঙালীকে রেখেছো বাঙালী করে মানুষ করোনি।” বাঙালীরা সেদিনও মানুষ ছিলনা। বাঙালীরা আজো মানুষ হয়ে উঠতে পারেনি। আর তাইত যুদ্ধ উত্তর শিশু বাংলাদেশকে সবাই যখন কাঁধে কাধঁ মিলিয়ে শক্ত হাতে দেশটিকে গড়ে তুলবার কথা ছিল তখন অমানুষ বাঙালীরা দেশ গড়ার কাজে লিপ্ত না হয়ে ব্যক্তিস্বার্থে লুটপাটে লিপ্ত হয়েছিল। নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত হয়েছিল। ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। যুদ্ধ বিধ্বস্থ একটি দেশের মানুষ যখন দেশটিকে সুন্দর করে গড়ে তুলবার বদলে চুরি ডাকাতি লুটতরাজের কাজে নামিয়া পড়ে তখন আর তারা মানুষ থাকেনা। তারা অমানুষে পরিনত হয়। হায়েনা হয়ে যায়। দেশের কথা কেউ আর তারা ভাবেনা। দেশ স্বাধীন হবার পরও বাঙ্গালী মানুষ হতে পারেনি। আমানুষ ছিল। হায়েনা ছিল। তাই সেদিনের সেই শিশু বিধ্বস্থ দেশটিকে আরো পঙ্গু করে দেয়ার লক্ষ্যে হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়েছিল দেশটির উপর। চুরি বাটপারি রাহাজানী খুন খারাবী ডাকাতি ইত্যাদি কাজে লিপ্ত হয়ে নিজেদের আখের গুছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। একদিকে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী আর তাদের বাংলাদেশী সহযোগী রাজাকার আলবদর আল শামস্‌ বাহিনীর সদস্যদের নীল নকশায় মেধাশূন্য যুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশ। বিধ্বস্থ বাংলাদেশ। রাস্তা ঘাট ব্রীজ ঘর বাড়ী অফিস আদালত যোগাযোগ ব্যবস্থা সবই ছিল বিধ্বস্থ। আর এই বিধ্বস্ত দেশের সন্তানেরা অমানুষের মত সেই ভাঙ্গাঁ দেশটিকে সেদিন মিলেমিশে গড়ে তুলবার কাজে ব্যস্ত না হয়ে লুটতরাজ আর খুন খারাবীতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আর তারই ধারাবাহিকতায় আসে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের কালরাত্রি।অমানুষ হায়েনা খুনকরা মুশতাক আর তারই মত গুটি কতেক হায়েনার ষড়যন্ত্রে সেদিন স্বপরিবারে নিহত হয়েছিল বাঙালীর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যে বীর বাঘা বাঙালীকে পাকিস্তানী শাষকগোষ্ঠী হত্যা করতে সাহষ পায়নি সেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান ও তার পরিবারের উপর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট রাতের অন্ধকারে অমানুষ বাঙালীরা হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। নৃশংস ভাবে হত্যা করেছে তাঁর পুরো পরিবারকে।বাঙালী এখনো মানুষ হয়নি। সংবিধান লংঘন করলে বিচার হয়না। আর তাই ১৯৭৫ সালের পটপরিবর্তনের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা সংবিধান লংঘন করেছে বারেবারে। বাঙালীর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর হত্যার বিচার বন্ধ করেছে। হত্যাকারীদেরকে পুরস্কৃত করেছে। বাঙালীর হাজার বছরের ঐতিহ্য কৃষ্টি ধ্বংস করার কাজে লিপ্ত হয়েছে। কায়মনে হাজার বছরের বাঙালীদেরকে বাংলাদেশী করে তুলেছে। বাংলাদেশের ইতিহাস বদলে দিয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদেরকে মুক্ত করেছে। যুদ্ধাপরাধীদেরকে দেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে। দেশদ্রোহী রাজাকার আলবদরদেরকে বাংলাদেশের শীর্ষ ক্ষমতায় বসিয়েছে। বাংলাদেশকে দূর্ণীতি সন্ত্রাস আর চাঁদাবাজের স্বর্গরাজ্য বানিয়ে ছেড়েছে। সিন্ডিকেট বানিয়ে দেশের কোটি কোটি টাকা আত্নসাত করেছে। সারা বাংলাদেশকে জঙ্গীবাদের আখঁড়ায় পরিনত করেছে। ধর্মের দোহাই দিয়ে দেশ গেল দেশ গেল ধর্ম গেল ধর্ম গেল বলে পাড়া মাতিয়ে বেড়াচ্ছে। দেশের আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দোররা মারা হচ্ছে।১৯৭৬ সালে জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায় তখন তিনি রেডিও বাংলাদেশের প্রিজার্ভ করা স্বাধীনতার ঘোষনা পাঠ সম্বলিত ক্যাসেটটি চেয়ে পাঠান। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদেশে সেদিন রেডিও বাংলাদেশের কর্মকর্তারা ক্যাসেটটি জিয়াউর রহমানের কাছে নিয়ে যায় এবং সেখানে শুনার ব্যবস্থা করে। জিয়াউর রহমান সেদিন সেই ক্যাসেটটি শুনতে গিয়ে যখন বারবার ক্যাসেট রিওয়াইন্ড করে তার স্বাধীনতার ঘোষনা পাঠের “অন বি হাফ অব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান” লাইনটি শুনেছিলেন তখন তৎকালীন রেডিও বাংলাদেশ এর মহাপরিচালক ইয়াহিয়া খান জিয়াউর রহমানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, - স্যার ইচ্ছে করলে “অন বি হাফ অব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান” লাইনটি ইরেজ করে দেয়া যায়। এই কথাটি শুনেই জিয়াউর রহমান বললেন - হোয়াট! এটাতো ইতিহাস। ইতিহাসকে কিভাবে এবং কেন ইরেজ করবেন। (সাপ্তাহিক ঠিকানা - শুক্রবার ১১ সেপ্টেম্বর ২০০৯)।জিয়াউর রহমান সেদিন বাংলাদেশের ইতিহাস মুছে দেয়ার সাহষ না করলেও তার মৃত্যুর পর তার অনুসারীরা হায়েনার মত বাংলাদেশ ও বাঙালীর হাজার বছরের ইতিহাসের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। বদলে দেয়ার চেষ্টা করছে দেশের হাজার বছরের ইতিহাস। বদলে দেয়ার চেষ্টা করছে একটি জাতির জন্মের ইতিহাস। ইতিহাস বিকৃতি, মৌলবাদ, জঙ্গীবাদ, ধর্মের দোহাই, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, হত্যা গুম ইত্যাদি যখন একেবারে শীর্ষ পর্যায়ে ঠিক তখন ১/১১ নামক একটি অত্যাশ্চার্য ঘটনা ঘটে যায় বাংলাদেশে। সাধারন মানুষ স্বস্তিতে নিঃশ্বাস ফেলে এবং তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের ইতিহাসের স্মরণকালের একটি সুষ্ঠ ও সুন্দর নির্বাচনের মাধ্যমে ২০০৯ সালে দিনবদলের সরকার ক্ষমতায় আসে।মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, আপনার নেতৃত্বাধীন জোট সরকার নির্বাচনে দিনবদলের অঙ্গীকার করেছেন। ভিশন ২০২১ ঘোষনা করেছেন। এই ঘোষনায় পাঁচটি বিষয়ের উপর প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। ১. অর্থনৈতিক সমস্যার মোকাবেলা, ২. দুর্ণীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন, ৩. বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদের সুষ্ঠ্য ব্যবস্থা, ৪. দারীদ্রতা দূরীকরন এবং ৫. গুড গর্ভান্যান্স গড়ে তোলা। এছাড়াও ভিশন ২০২১ এর মধ্যে আরো যা রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য গণতন্ত্র ও কার্যকরি সংসদী ব্যবস্থা গড়ে তোলা, ক্ষমতার বিকেনদ্রীকরন ও জনগনের অংশগ্রহন, রাজনৈতিক কালচারের পরিবর্তন, নারীর সম অধিকার, আর্থনৈতিক উন্নয়ন, জনসংখ্যা ও শ্রমশক্তি, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, পরিবেশ উন্নয়নে ভূমীকা ইত্যাদি ইত্যাদি।এছাড়া দনবদলের সরকারের ভিশন ২০২১ এর মধ্যে যে মুখ্য বিষয়গুলোর প্রস্তাবনা করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ হলঃ২০১০ সালের মধ্যে ১০০% শিক্ষার্থীকে প্রাইমারি শিক্ষায় শিক্ষীত করা।২০১১ সালের মধ্যে সমগ্র জাতির জন্য বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা।২০১২ সালের মধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন।২০১৩ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।২০১৩ সালের মধ্যে ৭ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন।২০১৩ সালের মধ্যে বিনামূল্যে ডিগ্রী পড়ার সুযোগ।২০১৪ সালের শিক্ষায় ক্ষেত্রে সাফল্য।২০১৫ সালের মধ্যে সমগ্র জাতির জন্য থাকার ব্যবস্থা করা।২০১৫ সালে ৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যু উৎপাদনএছাড়াও দিনবদলের সরকারের ঘোষিত ভিশন ২০২১ এর আরো উল্লেখযোগ্য, ডিজাটাল বাংলাদেশ গড়া, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদান, চাকুরি বৃদ্ধি, দারিদ্রতা দূরীকরন, টেকনোলজি, গরিব জনগনের জন্য খাদ্য, শিশু মৃত্যুর হার কমানোসহ নানাবিধ ঘোষনা।মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, ১৯৭৫ সালে বাঙালী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করার পর বাংলাদেশ একটি ভিন্ন ধারার রাজনৈতিক চর্চা শুরু হয়েছিল এবং এই রাজনৈতিক চর্চা ছিল আমাদের ইতিহাসের বিপরীত। এই রাজনৈতিক চর্চা আমাদের হাজার বছরের বাঙালী আর বাঙালীয়ানা সংস্কৃতির সম্পূর্ণ বিপরিত। এই রাজনৈতিক ধারা ধীরে ধীরে আমাদের জাতির ইতিহাসকে বিকৃতি করার প্রয়াস চালিয়েছে। আমাদের হাজার বছরের লালিত বাঙালী সংস্কৃতিকে বদলে দেয়ার চেষ্টা করেছে। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সাড়ে সাত কোটি বাঙালী যে জিয়াউর রহমানকে চিন্তনা জানতনা তারা জিয়াউর রহমানকে আমাদের মহান স্বাধীনতার মহা নায়ক বানাবার প্রয়াস চালিয়েছে। যে কাজটি খোদ জিয়াউর রহমান নিজে করতে সাহষ করেনি। তার অনুসারিরা রাজনৈতিক হীন মনমানুষীকতা নিয়ে সেই কাজটি করার প্রয়াস চালাচ্ছে। বাঙালী জাতির ইতিহাসকে বিকৃতি করার সাহষ যেখানে জিয়াউর রহমান খোদ নিজে করতে পারেনি বর্তমানে তারই অনুসারীরা তাই করার সাহষ দেখাচ্ছে। কিন্তু ইতিহাসকে কি কেউ বদলাতে পারে? না কেউ কোনদিন পেরেছে? ইতিহাস তার আপন গতিতেই চলে। ক্ষমতার দাপটে ইতিহাসকে কিছুদিন বাক্সবন্দী কেউ করার চেষ্টা করলেও অবশেষে তারা ব্যর্থ হয়েছে। জাতি এবং ইতিহাস তার দাঁত ভাঁঙ্গা জবাব দিয়েছে।মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, দিনবদলের সরকার ভিশন ২০২১ ঘোষনা করেছে। এই ঘোষনার মধ্যে দিয়ে আশা করছি দিনবদলের সরকার কমপক্ষে আগামী ২০২১ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের জন্য তৈরী হয়েছে মনে ও প্রানে। ভিশন ২০২১ বাস্তায়নের জন্য দিনবদলের সরকারকে জনগনের কল্যানে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হবে। জনগন পানি চায়, বিদ্যুৎ চায়, দুমুঠো ভাত পেট ভরে খেতে চায়। সন্ত্রাস চাদাঁবাজ আর চাঁদাবাজীর অবসান চায়। সাধারন মানুষের চাওয়া খুব একটা বেশি কিছু নয়। দিনবদলের সরকার যদি সত্যিকারে ভিশন ২০২১ এর বাস্তবায়ন দেখতে চায় তাহলে জনগনকে সাথে নিয়ে কমপক্ষে আগামী ২০২১ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাস কি তাই বলে? বাংলাদেশের কোন সরকার কি জনগনের মন রক্ষা করে পরপর দুবার ক্ষমতায় আসতে পেরেছিল? আর আসলেও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় তারা কতদিন ছিল?মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশে যখনই কোন সরকার বদল হয়েছে তখনই নতুন সরকার আগেকার সরকারের শুরু করা বা চালু করা ভাল মন্দ সকল কর্মকান্ডকে নিষিদ্ধ করেছে। নতুন সরকার আগেকার সরকারের নাম ও নিশানা মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে দেশের আর দেশের আপামর সাধারন জনগনের। আগামী নির্বাচনে যদি দিনবদলের সরকার রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে জনগনের ম্যান্ডেট না পায় তাহলে বর্তমান সরকারের ঘোষিত ভিশন ২০২১ বাস্তবায়িত হবেনা। নতুন একটি সরকার আসবে এবং তারা বর্তমান সরকারের শুরু করা সকল কর্মকান্ডকে বন্ধ করে দিবে। দেশের ইতিহাস বদলাবার প্রয়াস চালাবে। ভিশন ২০২১ এর বাস্তবায়ন রোধ করবে। দেশদ্রোহী রাজাকার আলবদরদেরকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় নিয়ে আসবে। বাংলাভাই সৃষ্টি করবে। সারাদেশে জঙ্গীবাদের রাজত্ব কায়েম করবে। ধর্মের দোহাই দিয়ে দোররা মারা শুরু করবে। গ্রেনেড হামলা চালাবে। এস এম কিবরিয়া, আহসান উল্ল্যাহ মাষ্টার, আইভী রহমানের মত নেতাদেরকে একেএকে হত্যা করবে। হুমায়ুন আজাদের মত আরো বহু সাংবাদিক বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করবে। সিন্ডকেট তৈরী করবে। দেশে তৈরী করা হবে হাজারো খাম্বা মামুন।মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, স্বাধীনতার ৩৮ বছর পেরিয়ে গেছে। এই ৩৮ বছরের প্রায় ৩০ বছরই দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে বাক্সবন্দী করে রাখা হয়েছে। দেশে জঙ্গীবাদের সৃষ্টি করা হয়েছে। রাজাকার আলবদরদেরকে ক্ষমতার শীর্ষে নিয়ে আসা হয়েছে। স্বাধীনতার ৩৮ বছর পেরিয়ে গেলেও স্বাধীনতার সত্যিকারের স্বাদ কি সাধারন জনগন পেয়েছে? জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা আজও অবহেলিত। অথচ রাজাকার আলবদররা রাজ করেছে স্বাধীন বাংলাদেশে। কি আশ্চার্য একটি দেশ! হায়রে আমার সোনার বাংলাদেশ। দেশের স্বাধীনতা বিরোধীরা দেশ পরিচালনা করে। ধীক্কার জাগে।মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, জনগন রায় দিয়েছে। জনগনকে সাথে নিয়ে দিনবদলের সরকারকে ইতিহাসকে আর যাতে কেউ বাক্সবন্দী করতে না পারে সেই দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। দেশের সত্যিকারের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দিতে হবে। দেশকে বিশ্বের কাছে একটি মর্য্যাদাশীল শিক্ষিত জাতি হিসাবে পরিচিতি দিতে হবে। দেশ হতে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজী আর চাঁদাবাজ নির্মূল করতে হবে। র্দূর্ণীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে। বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক নেতা আর যাতে দূর্ণীতি করার সাহষ না পায় সেজন্য সত্যিকারের রাজনৈতিক নেতা গড়ে তুলতে হবে। জনগনের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ পানি থাকা খাবার ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষার অধিকার, নারীর সম অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ধর্মের দোহাই দিয়ে কেউ যাতে আর জাতিকে বিভ্রান্ত না করতে পারে সেদিকে জোর রজর দিতে। দেশে আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, জনগন রায় দিয়েছে। দিনবদলের সরকারের উপর অনেক গুরু দায়িত্ব এসে পড়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে হবে। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের হত্যার বিচার করতে হবে। জাতীয় চারনেতার হত্যার বিচার করতে হবে। আহসান উল্ল্যাহ মাষ্টার, এস এম কিবরিয়া, আইভি রহমানসহ সকল হত্যাকান্ডের বিচার করতে হবে। সকল গ্রেনেড হামলাকারীদেরকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি প্রদান করতে হবে। দেশ থেকে জঙ্গীবাদের নাম ও নিশানা মুছে ফেলতে হবে। স্বাধীনতার স্বাদ জনগনের নিকট পৌছে দিতে হবে। দেশের ইতিহাসকে সঠিক ও সত্যের পথে প্রতিষ্ঠিত করে দেশকে একটি উন্নত বিশ্বে পরিনত করার গুরু দায়িত্ব বর্তমানের দিনবদলের সরাকারের কাঁধে এসে পড়েছে। বর্তমান সরকারকে সেই লক্ষ্যে কাজ করে যেতে হবে।মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, বর্তমান সরকারের অনেক দায়িত্ব। জনগন বর্তমান সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছে। সরকারকে জনগনের আশা আকাংখা পুরনে সচেষ্ট হতে হবে। আগামী ২০২০ সাল দিনবদলের সরকারের জন্য একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ সাল। আগামী ২০২০ সাল বাঙালী জাতির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী। জন্মদিনের উপহার হিসাবে বঙ্গবন্ধুর জন্য আগামী ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নে সোনার বাংলাদেশ হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। ২০২০ সালে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থেকে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী পালন করতে হবে। ভিশন ২০২১ বাস্তবায়ন করতে হবে। এই পথ বড় কঠিন কাজ। বর্তমান সরকারকে জনগনের জন্য কাজ করে জনগনকে সাথে নিয়ে আগামী নির্বাচনেও জনগনের ম্যান্ডেট নিয়ে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে হবে। ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী পালন করতে হবে। যড়যন্ত্র থেমে নেই। থেমে থাকবেওনা। বিডিআরের মত আরো নৃশংস কোন হত্যাযজ্ঞ ঘটবেনা কে বলতে পারে। আবারো কোন গ্রেনেড হামলা কাকে লক্ষ্য করে করা হয় কে জানে? বিরেধীরা থেমে নেই। এখন পর্যন্ত কোন মন্ত্রী এমপি‘র বিরুদ্ধে কোন দূর্ণীতির অভিযোগ উঠেনি এবং আর যাতে উঠতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে। যোগ্য নেতৃতৃ্‌ব গড়ে তুলতে হবে। আগামী নির্বাচনেও জনগনের রায় দিনবদলের সরকারের পক্ষে থাকতে হবে। মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, সত্যিকার অর্থেই বলতে চাই বাঙালী মানুষ হয়েছে। মনে প্রানে বিশ্বাস করতে চাই বাঙালী মানুষ হয়েছে। সত্যিকারের মানুষ হয়ে বাঙালীর মুন্সিয়ানা নিয়ে হাজার বছরের বাঙালীর ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতিকে সঠিক পথে লালন করতে চাই। আর কোন ইতিহাস বিকৃতি চাইনা। চাইনা কোন দূর্ণীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী। চাইনা কোন দূর্ণীতিগ্রস্থ অসৎ রাজনীতিবীদ। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা অনেক পিছিয়ে গিয়েছি। আমাদেরকে বারবার পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। আর পিছিয়ে পড়তে চাইনা। চাইনা আর একঘরে হয়ে থাকতে। বিশ্বায়নের এইযুগে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আর চাইনা কোন মৌলবাদ জঙ্গীবাদ, চাইনা কোন ধর্মের নামে হানাহানি কোন ষড়যন্ত্র। শিক্ষিত একটি জাতি চাই। চাইনা বাংলাদেশে আর কোন নারী দোররার শিকার হোক। আইনের শাষনের প্রতিষ্ঠা চাই এবং অবশেষে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে একটি সত্যিকারের সোনার বাংলাদেশ চাই। মহান রাব্বুল আলামীন দিনবদলের সরকারের সহায় হোক। আমীন।অরপি আহমেদ - যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।

Popular posts from this blog

THE CONSTITUTION OF THE BANGLADESH AWAMI LEAGUE

ইতিহাসবন্ধনী

ব্রিগেডিয়ার বারীর যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা