গৌরনদীতে গুঞ্জন : বন্দুকযুদ্ধে নিহত সর্বহারা বাবুলের স'লাভিষিক্ত হ"েছ কে?
গৌরনদীতে গুঞ্জন : বন্দুকযুদ্ধে নিহত সর্বহারা বাবুলের স'লাভিষিক্ত হচছে কে?
কাগজ প্রতিবেদক, বরিশাল ও গৌরনদী প্রতিনিধি : বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের হরহর এলাকায় কাটা গাছতলা এলাকায় র্যাব-পুলিশের যৌথ টহল দলের সঙ্গে চরমপন্থি সন্ত্রাসীদের বন্দুকযুদ্ধে সর্বহারা জিয়া গ্র"পের আঞ্চলিক কমান্ডার বাবুল সরদার শামীম (৪০) নিহত হওয়ার পর তার সাম্রাজ্য ও অস্ত্র ভাণ্ডারের দায়িত্ব নিয়ে এলাকায় চলছে নানা গুঞ্জন।গত ১০ বছরে নিহত বাবুল একাধিক বার গ্রেপ্তার হলেও তার অস্ত্র ভান্ডারের ধারে কাছেও যেতে পারেনি পুলিশ। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় এলাকায় ফিরে এসে বাবুল গোপনে বিএনপির পৰে নির্বাচনী প্রচারণা চালায়। মহাজোট ৰমতায় আসার পর সন্ত্রাসী বাবুল সরদার দল বদলের চেষ্টা করে। গত ৯, ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর বাবুল জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে প্রবেশ করেছিল। সংসদ ভবনে প্রবেশের তিনটি স্লিপ পুলিশ তার পকেট থেকে উদ্ধার করে। বাবুলের পথ ধরে তার ছোট ভাই মাছুম সর্বহারা সন্ত্রাসীর খাতায় নাম লেখায়। সে বাবুলের শূন্য স'ানে দল ও অস্ত্র ভাণ্ডারের দায়িত্ব নিতে পারে বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে।গৌরনদী পুলিশের দেয়া তথ্যে জানা গেছে, চরমপন'ীরা কোনো অভিযানে যাওয়ার সময় বাবুলের হাব-ভাব থাকতো মোড়লের মতো। এ সময় সে ছাপা গেঞ্জি এবং ক্যাপ পরতো। কাঁধে থাকতো অস্ত্র। সাধারণভাবে যখন সে চলতো তখন বেশির ভাগ সময়ই কালো রঙের পোশাক পরতো। এলাকাবাসীর মধ্যে গুঞ্জন, নিহত বাবুলের অস্ত্র ভাণ্ডার ও সাম্রাজ্যের দায়িত্ব কে পাচছেন? তার ভাই মাসুম সরদার ? না বেয়াই দেলোয়ার ? না ঘনিষ্ট সহযোগী আব্দুস সালাম অথবা নুর" সরদার ওরফে হাতকাটা নুর"?এলাকাবাসীর অভিযোগ মাহাজোট সরকার ৰমতায় আসার পর সর্বহারা কামর"ল গ্র"পের সদস্যরা রাতে এলাকায় সশস্ত্র মহড়া দি"েছ। সর্বহারা কামর"ল গ্র"পের আঞ্চলিক নেতা সুভাষ হালদার, আসলাম, কসাই সেলিম, সরিকল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এসে দিনের বেলা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে। পূর্ববাংলা সর্বহারার একটি গ্র"প সমপ্রতি ওইসব এলাকায় সংগঠনের নামে সরকারবিরোধী লিফলেট বিলি করে। এ ঘটনায় এলাকার জনমনে আতঙ্ক দেখা দেয়।১৯৯৮ সালে যুবদলের ক্যাডার হিসেবে রাজনীতিতে অভিষেক হয় বাবুলের। এর আগে ১৯৮৪/৮৫ সালের দিকে মাত্র ১ বছরের ব্যবধানে তার পিতা সোবাহান সরদার ও বড় ভাই শাহজাহান সরদার সাপের কামড়ে মারা যান। ৪ ভাই ও ১ বোনের সংসারে বাবুল ছিল মেঝ। বাবুলের সেঝ ভাই জাকির এলাকায় সান- এবং ভদ্র ছেলে হিসেবে পরিচিত। তিনি এলাকায় কাঠ ব্যবসায়ী হিসেবে জড়িত।নিহত বাবুলের রয়েছে এক পুত্র ও এক কন্যা সন-ান। পুত্র মনির"জ্জামান মনির (১৩) ও কন্যা ফাহিজা আক্তার বেবী (৮) তারা তাদের মা অজুফা আক্তার দিপার সঙ্গে রাজধানীর উত্তরা এলাকার একটি ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাস করে। ’৯৯ সালের শুর"তে সদ্য নিহত পার্শ্ববর্তী বাবুগঞ্জ উপজেলার এক প্রভাবশালী বিএনপি নেতার হাত ধরে সে সর্বহারা জিয়া গ্র"পে প্রবেশ করে। ১৯৯৯ সালের শেষ দিকে রাজধানী ঢাকার উত্তরা থানা পুলিশের কাছ থেকে অস্ত্র লুটের ঘটনায় জড়িত ডাকাত দলের সহযোগী ছিল সে। ২০০৪ সালে বরিশালের বাবুগঞ্জ ও উজিরপুর থানা এলাকায় কামর"ল গ্র"পের সঙ্গে জিয়া গ্র"পের বন্দুক যুদ্ধ হয়। ওই যুদ্ধে জিয়া গ্র"পের নেতৃত্ব দেয় বাবুল। এ সময় সাহসিকতার জন্য সে বরিশালের এক প্রভাবশালী রাজনীতিবিদের নজরে পড়ে। ২০০৪ সালে গৌরনদী উপজেলার হোসনাবাদে সর্বহারা জনযুদ্ধের এক নেতাকে হত্যা করে তার অস্ত্র ভাণ্ডার লুটে নেয় বাবুল। এর পরপরই বাবুল তার নেতৃত্বে গৌরনদীর সাকোকাঠি, শাহজিরা, বনকুরা, চন্দ্রহার, আধুনা, বছার, বাটজোর, কাণ্ডপাশা, বাসুদেবপাড়া, সৌলকর, নলচিড়া, সরিকল, বাবুগঞ্জের আগরপুর, ভুতুর দিয়া, ঠাকুর মলিস্নক, ব্রাহ্মণদিয়া, জাহাপুর, উজিরপুরের বামড়াইল, কালিহাতা, ব্রাহ্মণকাঠি গ্রামের বিশাল এলাকা নিয়ে তার সন্ত্রাসের সাম্রাজ্য গড়ে তোলে।২০০৩ সালে হোসনাবাদ এলাকায় ডাকাতিসহ একজন বিডিআর সদস্যকে হত্যা করে সে। একই বছর গৌরনদীর শাহজিরা এলাকার সিরাজ নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করে বাবুল ও তার সন্ত্রাসীরা। ২০০২ সালে বাবুগঞ্জের ব্রাহ্মণদিয়ায় জোড়া খুনের নেতৃত্ব দেয় সে। উজিরপুর উপজেলার ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা বাবুলাল শীল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়ও সে জড়িত ছিল। ২০০৩ সালে পটুয়াখালী জেলার দশমিনা থেকে এক কিশোরীকে অপহারণ করে তার নিজ এলাকা সাকোকাঠিতে এনে আটকে রেখে একমাস ধরে পাশবিক নির্যাতন চালায় সে। ওয়ান-ইলেভেনের পর বাবুল সরদার আত্মগোপন করে।