বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশে সেই ঐতিহাসিক মানপত্র


বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশে সেই ঐতিহাসিক মানপত্র বিপস্নব সরকার : ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় চ্যান্সেলর হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে আপনার এই প্রথম শুভাগমনে আমরা আনন্দিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪ বছরের ইতিহাসে আপনিই প্রথম চ্যান্সেলর, যিনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে এসেছেন - সেজন্য আমরা বিশেষভাবে গৌরবান্বিত। আপনাকে সর্বান্তকরণে স্বাগত জানাই।’ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আগমন উপলৰে বিশ্ববিদ্যালয়ের পৰ থেকে এভাবেই স্বাগত জানিয়ে মানপত্র রচনা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জাতির জনককে স্বাগত জানানোর সৌভাগ্য আর হয়ে ওঠেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের। তার আগেই ১৫ আগস্ট ভোরে রচিত হয়ে যায় বাংলার ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায়। সপরিবারে হত্যা করা হয় জাতির জনককে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর বুধবার পাওয়া গেছে অপঠিত সেই মানপত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের সে সময়ের উপাচার্য আব্দুল মতিন চৌধুরীর সব শিৰক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, ও শিৰার্থীদের পৰ থেকে ওই মানপত্র পাঠ করার কথা ছিল। ওই মানপত্রের পাশাপাশি পাওয়া গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সংবলিত ক্রেস্ট, বাসকেট, পেস্নট ও চামড়ার রুমাল। যেগুলো প্রস্তুত করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে উপহার হিসেবে দেয়ার জন্য।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক জানান, বুধবার তিনি হাতে পান স্মৃতিবিজড়িত সেই মানপত্রটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত উপ-রেজিস্ট্রার এ কে এম আমির হোসেন তার কাছে মানপত্রটি হস্তান্তর করেন। কাউন্সিল শাখায় কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র খুঁজতে এসে ওই মানপত্রটি হাতে পান ওই কর্মকর্তা। উপাচার্য জানান, তারপর খোঁজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাস্টডিতে বঙ্গবন্ধুকে দেয়ার জন্য যেসব উপহার প্রস্তুত করা হয়েছিল সেসব হাতে পান।তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও স্মৃতিবিজড়িত এ মানপত্র ও উপহারসামগ্রী পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার এসব স্মৃতিচিহ্ন যত্নসহকারে সংরৰণ করবে। এছাড়া বিভিন্ন জাদুঘরে রেপিস্নকা সরবরাহ করবে।হাতে লেখা মানপত্রে সে সময়ের রাষ্ট্রপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক অভিহিত করে বলা হয়, ‘আজ আপনার আহ্বানে সমস্ত দেশে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় বিপস্নবের শুভ কর্ম উদ্দীপনা। এই যুগান্তকারী দ্বিতীয় বিপস্নবের কর্মসূচি গ্রহণের জন্য আপনাকে অভিনন্দন জানাই। এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম বিপস্নবের মতো, এবারো আপনার ডাকে সারা দিয়ে দ্বিতীয় বিপস্নবের সকল কর্মসূচিকে সফল ও সার্থক করে তুলবে।’ এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে বলা হয়, ‘এদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীববনধারা কিভাবে গড়ে ওঠবে তা অতীতের মতো ভবিষ্যতেও বহুলাংশে নির্ণীত হবে এই বিশ্ববিদ্যালয়েই। তাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আপনার, আপনার সরকারের ও বাংলাদেশের জনগণের সুদৃষ্টি ও সহানুভুতি আমরা আশা করি।’ দ্বিতীয় বিপস্নবের সফলতা কামনা করে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বলে শেষ করা হয় মানপত্রের বক্তব্য।

Popular posts from this blog

THE CONSTITUTION OF THE BANGLADESH AWAMI LEAGUE

ইতিহাসবন্ধনী

ব্রিগেডিয়ার বারীর যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা