নানা আয়োজনে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত



নানা আয়োজনে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
ঢাকা, জানুয়ারি ০৪ নানা আয়োজনে পালিত হলো দেশের অন্যতম প্রাচীন ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৬২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সোমবার রাতের প্রথম প্রহরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে ৩০ পাউন্ডের কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি শুরু হয়। এসময় বিভিন্ন শাখা থেকে আসা কর্মীদের মধ্যে ৬০ কেজি মিষ্টি বিতরণ করা হয়। (আরো তথ্যসহ) সকালে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে ছাত্রলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে শুরু হয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ। দেশাত্মবোধক গান, বক্তৃতা আর মুহুর্মুহু স্লোগানের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে জমে উঠতে থাকে সমাবেশস্থল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ডেন্টাল কলেজ, তেজগাঁও কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা থেকে নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় সংগঠনের এ কর্মসূচিতে যোগ দেয়। বেলা বারোটার দিকে সংগঠনের সাবেক নেতারা মঞ্চে আসেন। এরপর জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় ও দলীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা। ওড়ানো হয় বেলুন ও কবুতর। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন ঘোষণা করেন সংগঠনটির সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের। এরপর রঙ-বেরঙের প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, ব্যানার এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি নিয়ে শুরু হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। লালপেড়ে সবুজ শাড়ি পরে শোভাযাত্রার পুরোভাগে ছিল ছাত্রলীগের নারীকর্মীরা। শোভাযাত্রাটি অপরাজেয় বাংলা থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, কাকরাইল, বিজয় নগর, পল্টন মোড় হয়ে আওয়ামী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বিবাদ-বেদনা ভুলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, "১৬ কোটি মানুষের ভাগ্যবদল করতে নিজেদেরকে বদলে ফেলাই ছাত্রলীগের একমাত্র এজেন্ডা। "এজন্য অতীত দিনের দুর্নাম, জঞ্জাল মুছে, বিবাদ ও বেদনা ভুলে নতুন আশার মালা গেঁথে সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে। নিজেদের আচার-আচরণ, মন-মানসিকতা ও সংস্কৃতিতে আমূল বদলে যেতে হবে। মেধাবীদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করতে হবে।" তিনি বলেন, "আজকের ছাত্র রাজনীতি যদি মেধাশূন্য হয়ে যায়। তাহলে ভবিষ্যতে জাতীয় রাজনীতিও মেধাশূন্য হয়ে যাবে। ফলে দেশ সঠিক দিক নির্দেশনা থেকে বঞ্চিত হবে।" অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মাহবুবুল হক হানিফ, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এনামুল হক শামীম, লিয়াকত শিকদার, বাহাদুর ব্যাপারী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, অজয় কর খোকন, আব্দুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠালগ্নে নাইমউদ্দিন আহম্মেদকে আহ্বায়ক করে ১৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ১৯৪৯ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর রাজধানীর আরমানিটোলায় ছাত্রলীগের প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে দবিরুল ইসলাম সভাপতি ও মোহাম্মদ আলী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
৫২'র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬৬'র ছয়দফা আন্দোলন, ৬৯'র গণঅভ্যূত্থান ও মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির অধিকার আদায়ের বিভিন্ন সংগ্রাম এবং আশি দশকের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা ছিল ছাত্রলীগের। এদিকে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে ৬২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদ্যাপন করেছে জাসদ ছাত্রলীগ। ডাকসু ভবন চত্বরে এর আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর মতাদর্শগত দ্বন্দ্বের জেরে ছাত্রলীগের একটি অংশ বেরিয়ে গিয়ে জাসদ গঠন করে। তাদের স্লোগান ছিল 'বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র'। এ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন হাসানুল হক ইনু। এসময় উপস্থিত ছিলেন সাংসদ মইনুদ্দিন খান বাদল , শিরিন আখতার, সৈয়দ নুরুল আম্বিয়াসহ আরো অনেকে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ডাকসু চত্বর থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়।

Popular posts from this blog

THE CONSTITUTION OF THE BANGLADESH AWAMI LEAGUE

ইতিহাসবন্ধনী

Justice order of the day