বিদায় ২০০৯
বিদায় ২০০৯
উত্তম চক্রবর্তিঃ আজ আলোড়িত বর্ষ বিদায়ের দিন। বহু ঘটনার জন্ম দিয়ে মহাকালের পরিক্রমায় বিদায় নিল আরও একটি বছর। বাংলাদেশের ৩৮ বছরের অনেক ইতিহাস বদলে দিয়েছে বিদায়ী বছরটি। সূচনা করেছে জাতীয় জীবনে ও রাজনীতির ইতিহাসে এক অভিনব অধ্যায়ের।
দুই বছরের অগণতান্ত্রিক শাসনের অবসান, গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবনের মাধ্যমে ২০০৯ সালের যাত্রা শুরম্ন। এরপর অনেক ঘটনা-অঘটন, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, চড়াই-উতরাই, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আনন্দ-বেদনার সাক্ষী হয়ে কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে এই বছরটি। আজ রাতটুকু পেরোলেই কাল পূর্বাকাশে উঠবে যে নতুন সূর্য, সে সূর্য নতুন বছরের। নতুন আশায় বুক বেঁধে আরও একটি নতুন বছরের দিনলিপি পড়ে থাকবে পেছনে। নতুন বছরে নতুন সূর্যের অসীম প্রতীৰা মানুষের। উতসব আয়োজনের মধ্য দিয়েই মানুষ স্বাগত জানাবে ইংরেজী নতুন বছর ২০১০ সালকে। ইংরেজী পঞ্জিকার সর্বজনীনতায় কাল বিশ্ববাসীও মেতে উঠবে নতুন বছরের আগমনী আনন্দ-উলস্নাসে।
মহাকালের আবর্তে হারিয়ে গেলেও বিদায়ী বছরটি দেশের মানুষের মনে দাগ কেটে থাকবে বহুকাল, বহু বছর। কারণ বিদায়ী এ বছরটি পাল্টে দিয়েছে অনেক ইতিহাস। কারণ বাঙালী জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শাণিত দেশের মানুষকে এক অবিস্মরণীয় গণতন্ত্রের শাসনকাল উপহার দিয়ে চিরবিদায় নিচ্ছে ঘটনাবহুল এ বছরটি। বছরজুড়েই ছিল মুক্তিযুদ্ধের পৰের শক্তির গণজোয়ার, আর অন্ধকার শক্তির গোপন ষড়যন্ত্র-চক্রানত্ম।
দীর্ঘ দু'বছরের অন্ধকারাচ্ছন্ন, অনিশ্চয়তার অগণতান্ত্রিক-অসাংবিধানিক শাসনের নিগড় থেকে গণতন্ত্রের নবযাত্রা শুরম্ন করা বিদায়ী বছরটিতে দেশের মানুষ মুক্ত ও স্বাধীনভাবে পথ চললেও দেশকে অস্থিতিশীল ও গৃহযুদ্ধ বাধাতে একটি চিহ্নিত অপশক্তির নানা ষড়যন্ত্র-চক্রানত্মের ঘৃণ্য চেষ্টাও প্রত্যৰ করেছে দেশের মানুষ। ব্যক্তিজীবন থেকে শুরম্ন করে সমাজ, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ছিল নানা ঘটনা-দুর্ঘটনার দোলাচল।
অনেক অনিশ্চয়তার বেড়াজাল ছিন্ন করে গণতন্ত্রের এই বিদায়ী বছরের পুরোটা সময়ই আলোচনা-সমালোচনার শীর্ষে ছিল মহাবিজয় নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের ক্ষমতা গ্রহণ, মন্ত্রী ও নেতৃত্বে চমক, গণতন্ত্রকে পুনরায় হত্যার নীলনক্সা অনুযায়ী বিডিআর বিদ্রোহের নামে নির্বিচারে সামরিক কর্মকর্তা হত্যাযজ্ঞ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকান্ডের বিচার সম্পন্ন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, নানা কারসাজির মাধ্যমে বাজার পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করা, বিশ্বমন্দার মাঝেও অর্থনীতি সচল রাখা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আইলার আঘাত, টিপাইমুখ বাঁধ, বিরোধীদলীয় নেত্রীর বাড়ির বরাদ্দ বাতিল, কঠোর হসত্মে জঙ্গীবাদ দমন, গার্মেন্টস শিল্পে অস্থিতিশীলতা, সার সঙ্কটবিহীন বাম্পার ফলন ইত্যাদি ইসু্য। তবে বিডিআর বিদ্রোহ আর বড় রাজনৈতিক দলগুলোতে তারকা নেতাদের পতন ইসু্যটি বছরজুড়েই ছিল আলোচনার শীর্ষে।
বিদায়ী বছরের শুরুটাই ছিল দুরাশার রাত কেটে মানুষের জীবনে আলো ফিরিয়ে দেয়া। সামরিক নিয়ন্ত্রিত অগণতান্ত্রিক সরকারের পরিবর্তে গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে জানুয়ারি মাসের প্রথমেই রেকর্ড সংখ্যক তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি আসনে বিজয়ী করে ক্ষমতায় বসায় গণতান্ত্রিক আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারকে। দুনীতি-দুঃশাসন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিরম্নদ্ধে ঐতিহাসিক গণরায় দেয় দেশের মানুষ। রেকর্ড সংখ্যক আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণ করে। ১৯৭০ সালের পর জাতি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আর কখনই এভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়নি।অগণতান্ত্রিক শাসন থেকে আনুষ্ঠানিক গণতান্ত্রিক শাসনে রূপ নেয় ৬ জানুয়ারি। বিদায়ী বছরের এ দিন দেশের মানুষের আকাশচুম্বী প্রত্যাশা পূরণের অঙ্গীকার নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার শপথ গ্রহণ করেন। দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণের পর পরই মন্ত্রিসভা গঠনে বছরের শুরম্নতেই বড় ধরনের চমক দিয়ে সারাদেশে রীতিমতো আলোচনার ঝড় তোলেন। দুনীতির বিরম্নদ্ধে জিহাদ
দুই বছরের অগণতান্ত্রিক শাসনের অবসান, গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবনের মাধ্যমে ২০০৯ সালের যাত্রা শুরম্ন। এরপর অনেক ঘটনা-অঘটন, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, চড়াই-উতরাই, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আনন্দ-বেদনার সাক্ষী হয়ে কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে এই বছরটি। আজ রাতটুকু পেরোলেই কাল পূর্বাকাশে উঠবে যে নতুন সূর্য, সে সূর্য নতুন বছরের। নতুন আশায় বুক বেঁধে আরও একটি নতুন বছরের দিনলিপি পড়ে থাকবে পেছনে। নতুন বছরে নতুন সূর্যের অসীম প্রতীৰা মানুষের। উতসব আয়োজনের মধ্য দিয়েই মানুষ স্বাগত জানাবে ইংরেজী নতুন বছর ২০১০ সালকে। ইংরেজী পঞ্জিকার সর্বজনীনতায় কাল বিশ্ববাসীও মেতে উঠবে নতুন বছরের আগমনী আনন্দ-উলস্নাসে।
মহাকালের আবর্তে হারিয়ে গেলেও বিদায়ী বছরটি দেশের মানুষের মনে দাগ কেটে থাকবে বহুকাল, বহু বছর। কারণ বিদায়ী এ বছরটি পাল্টে দিয়েছে অনেক ইতিহাস। কারণ বাঙালী জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শাণিত দেশের মানুষকে এক অবিস্মরণীয় গণতন্ত্রের শাসনকাল উপহার দিয়ে চিরবিদায় নিচ্ছে ঘটনাবহুল এ বছরটি। বছরজুড়েই ছিল মুক্তিযুদ্ধের পৰের শক্তির গণজোয়ার, আর অন্ধকার শক্তির গোপন ষড়যন্ত্র-চক্রানত্ম।
দীর্ঘ দু'বছরের অন্ধকারাচ্ছন্ন, অনিশ্চয়তার অগণতান্ত্রিক-অসাংবিধানিক শাসনের নিগড় থেকে গণতন্ত্রের নবযাত্রা শুরম্ন করা বিদায়ী বছরটিতে দেশের মানুষ মুক্ত ও স্বাধীনভাবে পথ চললেও দেশকে অস্থিতিশীল ও গৃহযুদ্ধ বাধাতে একটি চিহ্নিত অপশক্তির নানা ষড়যন্ত্র-চক্রানত্মের ঘৃণ্য চেষ্টাও প্রত্যৰ করেছে দেশের মানুষ। ব্যক্তিজীবন থেকে শুরম্ন করে সমাজ, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ছিল নানা ঘটনা-দুর্ঘটনার দোলাচল।
অনেক অনিশ্চয়তার বেড়াজাল ছিন্ন করে গণতন্ত্রের এই বিদায়ী বছরের পুরোটা সময়ই আলোচনা-সমালোচনার শীর্ষে ছিল মহাবিজয় নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের ক্ষমতা গ্রহণ, মন্ত্রী ও নেতৃত্বে চমক, গণতন্ত্রকে পুনরায় হত্যার নীলনক্সা অনুযায়ী বিডিআর বিদ্রোহের নামে নির্বিচারে সামরিক কর্মকর্তা হত্যাযজ্ঞ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকান্ডের বিচার সম্পন্ন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, নানা কারসাজির মাধ্যমে বাজার পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করা, বিশ্বমন্দার মাঝেও অর্থনীতি সচল রাখা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আইলার আঘাত, টিপাইমুখ বাঁধ, বিরোধীদলীয় নেত্রীর বাড়ির বরাদ্দ বাতিল, কঠোর হসত্মে জঙ্গীবাদ দমন, গার্মেন্টস শিল্পে অস্থিতিশীলতা, সার সঙ্কটবিহীন বাম্পার ফলন ইত্যাদি ইসু্য। তবে বিডিআর বিদ্রোহ আর বড় রাজনৈতিক দলগুলোতে তারকা নেতাদের পতন ইসু্যটি বছরজুড়েই ছিল আলোচনার শীর্ষে।
বিদায়ী বছরের শুরুটাই ছিল দুরাশার রাত কেটে মানুষের জীবনে আলো ফিরিয়ে দেয়া। সামরিক নিয়ন্ত্রিত অগণতান্ত্রিক সরকারের পরিবর্তে গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে জানুয়ারি মাসের প্রথমেই রেকর্ড সংখ্যক তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি আসনে বিজয়ী করে ক্ষমতায় বসায় গণতান্ত্রিক আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারকে। দুনীতি-দুঃশাসন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিরম্নদ্ধে ঐতিহাসিক গণরায় দেয় দেশের মানুষ। রেকর্ড সংখ্যক আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণ করে। ১৯৭০ সালের পর জাতি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আর কখনই এভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়নি।অগণতান্ত্রিক শাসন থেকে আনুষ্ঠানিক গণতান্ত্রিক শাসনে রূপ নেয় ৬ জানুয়ারি। বিদায়ী বছরের এ দিন দেশের মানুষের আকাশচুম্বী প্রত্যাশা পূরণের অঙ্গীকার নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার শপথ গ্রহণ করেন। দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণের পর পরই মন্ত্রিসভা গঠনে বছরের শুরম্নতেই বড় ধরনের চমক দিয়ে সারাদেশে রীতিমতো আলোচনার ঝড় তোলেন। দুনীতির বিরম্নদ্ধে জিহাদ
ঘোষণা করে ক্ষমতায় আসা মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভায় স্থান পায়না সংস্কারবাদীরা। আওয়ামী লীগের ১/১১ পরব সংস্কারপন্থীরা বাদ পড়েন মন্ত্রিসভা থেকে, স্থান পান অধিকাংশই নতুন মুখ। জাতীয় রাজনীতিতে অনেকটাই কমপরিচিত মধ্যম সারির নেতাদের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে 'দিনবদলের সনদ' বাস্তবায়নের বিরাট চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে সরকারের যাত্রা শুরম্ন করেন তিনি। দলের দুঃসময়ের কান্ডারি জিল্লুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত করেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা।
নতুন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী নিয়ে বিশাল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কতটুকু সফল হবেন_ এ নিয়ে প্রথম দিকে নানা আলোচনা-সমালোচনা চললেও বিদায়ী বছরের সালতামামিতে প্রমাণ হয়েছে তিনি ভুল করেননি। এই একটি বছর দক্ষতা-বিচক্ষণতা বিচারে অনেকের বিরম্নদ্ধে প্রশ্ন উঠলেও মহাজোট সরকারের একজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুনীতির সামান্যতম অভিযোগ আনতে পারেননি কেউ-ই। এছাড়া বিদায়ী বছরের মাঝামাঝিতে দলের কাউন্সিলেও বড় নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন প্রজন্মের নেতাদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আনার শেখ হাসিনার চমকটিও ছিল আলোচনার খবর।
তবে বিদায়ী বছরের যাত্রাপথেও গণতন্ত্রের ওপর মারাত্মক আঘাত আসে। মহাজোট সরকারের মাত্র ৪৯ দিনের মাথায় দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়ে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের মারণাস্ত্র হানে অন্ধকারের অপশক্তিরা। কিন্তু অত্যনত্ম দৰতার সঙ্গেই গভীর এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। বিদায়ী বছরের শুরুতেই ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত হয় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা। দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করে সদ্য দায়িত্বগ্রহণকারী মহাজোট সরকারের পতন ঘটাতে এ দু'দিন বিডিআর বিদ্রোহের নামে অত্যনত্ম নিষ্ঠুর কায়দায় ৭০ জনেরও বেশি সিনিয়র, মেধাবী সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়। গৃহযুদ্ধ বাধাতে সারাদেশেই বিডিআর বিদ্রোহ উস্কে দেয়া হয়।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা দিয়ে এই চূড়ান্ত ষড়যন্ত্র ঠেকাতে সক্ষম হন। অনিবার্য রক্তৰরণ ছাড়াই বিডিআর বিদ্রোহ দমন করেন। শেখ হাসিনা এই প্রায় অসম্ভব কাজটি ধৈর্য-সহিঞ্চুতা ও দৃঢ় সাহসিকতা এবং সর্বোপরি দূরদর্শিতা ও দৰতার সঙ্গে সামাল দিয়ে সারাবিশ্বেই প্রশংসিত হয়েছেন। দেশ ধ্বংসের গভীর এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলাই নয়, বিদায়ী বছরের শেষ প্রানত্মে এসে বিডিআর বিদ্রোহের সঙ্গে জড়িতদের উপযুক্ত বিচার নিশ্চিত করতে বিচার কাজও শুরম্ন করেছে এই সরকার।
শুধু মানুষসৃষ্ট দুর্যোগ নয়, মহাজোট সরকারকে এই এক বছরে আইলার মতো ধ্বংসকারী প্রাকৃতিক দুর্যোগও মোকাবেলা করতে হয়েছে। অতীতে সব সরকার বিশ্বের কাছ থেকে সাহায্য এনে এমন দুর্যোগ মোকাবেলা করলেও শেখ হাসিনা বহির্বিশ্বের সাহায্য না নিয়ে নিজের সম্পদ দিয়েই দৰভাবে আইলা মোকাবেলা করে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছেন। এছাড়া বছরজুড়েই সাম্প্রদায়িক উগ্র জঙ্গীগোষ্ঠী ও আনত্মর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর হসত্মে দমন করায় বিদায়ী বছরে বড় ধরনের কোন নাশকতা চালাতে পারেনি ঘৃণ্য এসব অপশক্তি।
বিদায়ী-২০০৯ সালে আলোচিত ঘটনা ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের কাজ সম্পন্ন করার ঘটনা। বর্তমান সরকারের প্রধান নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিই ছিল এটি। ৰমতা গ্রহণের পরই মহাজোট সরকার বিচারের পথ উন্মুক্ত করে, চাহিদা অনুযায়ী আপীল বিভাগে বিচারপতি নিয়োগ দেয়। এরপর শুনানি শেষে দীর্ঘ ৩৪ বছর পর ১৯ নবেম্বর জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়। সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ আত্মস্বীকৃত খুনীদের আপীল খারিজ করে ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করে। হাইকোর্টে মৃতু্যদ-প্রাপ্ত সব খুনীর ফাঁসির রায় কার্যকর দেখার জন্য এখন অধীর অপেৰায় গোটা দেশবাসী। নতুন বছরের প্রথম ভাগেই বঙ্গবন্ধুর খুনীদের ফাঁসির রায় কার্যকর হবে বলেই প্রত্যাশা আইনজ্ঞদের।তবে বছরজুড়েই আলোচনার শীর্ষে ছিল দ্রব্যমূল্যের অস্থিতিশীলতা। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অগি্নমূল্যে নিয়ে ৰমতায় এসেই শক্তহাতে নাগাল টেনে ধরতে সৰম হয় সরকার। বাজার সিন্ডিকেট, চিনি সিন্ডিকেটসহ নানা সিন্ডিকেটের ষড়যন্ত্র-চক্রানত্ম মোকাবেলা করতে হয়েছে বছরজুড়েই। মহাজোট সরকারের ইশতেহারে প্রথম অগ্রাধিকার ছিল দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধ এবং বিশ্বমন্দা মোকাবিলায় সার্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। এ ৰেত্রে বিদায়ী বছরে মহাজোট সরকার সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে নিঃসন্দেহে। বিশ্ববাজারে দ্রব্যমূল্য ছিল স্থিতিশীল। আর তাই বছরজুড়েই দ্রব্যমূল্য ছিল মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে। বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসেও দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল থাকাটা ছিল বিদায়ী
নতুন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী নিয়ে বিশাল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কতটুকু সফল হবেন_ এ নিয়ে প্রথম দিকে নানা আলোচনা-সমালোচনা চললেও বিদায়ী বছরের সালতামামিতে প্রমাণ হয়েছে তিনি ভুল করেননি। এই একটি বছর দক্ষতা-বিচক্ষণতা বিচারে অনেকের বিরম্নদ্ধে প্রশ্ন উঠলেও মহাজোট সরকারের একজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুনীতির সামান্যতম অভিযোগ আনতে পারেননি কেউ-ই। এছাড়া বিদায়ী বছরের মাঝামাঝিতে দলের কাউন্সিলেও বড় নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন প্রজন্মের নেতাদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আনার শেখ হাসিনার চমকটিও ছিল আলোচনার খবর।
তবে বিদায়ী বছরের যাত্রাপথেও গণতন্ত্রের ওপর মারাত্মক আঘাত আসে। মহাজোট সরকারের মাত্র ৪৯ দিনের মাথায় দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়ে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের মারণাস্ত্র হানে অন্ধকারের অপশক্তিরা। কিন্তু অত্যনত্ম দৰতার সঙ্গেই গভীর এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। বিদায়ী বছরের শুরুতেই ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত হয় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা। দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করে সদ্য দায়িত্বগ্রহণকারী মহাজোট সরকারের পতন ঘটাতে এ দু'দিন বিডিআর বিদ্রোহের নামে অত্যনত্ম নিষ্ঠুর কায়দায় ৭০ জনেরও বেশি সিনিয়র, মেধাবী সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়। গৃহযুদ্ধ বাধাতে সারাদেশেই বিডিআর বিদ্রোহ উস্কে দেয়া হয়।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা দিয়ে এই চূড়ান্ত ষড়যন্ত্র ঠেকাতে সক্ষম হন। অনিবার্য রক্তৰরণ ছাড়াই বিডিআর বিদ্রোহ দমন করেন। শেখ হাসিনা এই প্রায় অসম্ভব কাজটি ধৈর্য-সহিঞ্চুতা ও দৃঢ় সাহসিকতা এবং সর্বোপরি দূরদর্শিতা ও দৰতার সঙ্গে সামাল দিয়ে সারাবিশ্বেই প্রশংসিত হয়েছেন। দেশ ধ্বংসের গভীর এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলাই নয়, বিদায়ী বছরের শেষ প্রানত্মে এসে বিডিআর বিদ্রোহের সঙ্গে জড়িতদের উপযুক্ত বিচার নিশ্চিত করতে বিচার কাজও শুরম্ন করেছে এই সরকার।
শুধু মানুষসৃষ্ট দুর্যোগ নয়, মহাজোট সরকারকে এই এক বছরে আইলার মতো ধ্বংসকারী প্রাকৃতিক দুর্যোগও মোকাবেলা করতে হয়েছে। অতীতে সব সরকার বিশ্বের কাছ থেকে সাহায্য এনে এমন দুর্যোগ মোকাবেলা করলেও শেখ হাসিনা বহির্বিশ্বের সাহায্য না নিয়ে নিজের সম্পদ দিয়েই দৰভাবে আইলা মোকাবেলা করে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছেন। এছাড়া বছরজুড়েই সাম্প্রদায়িক উগ্র জঙ্গীগোষ্ঠী ও আনত্মর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর হসত্মে দমন করায় বিদায়ী বছরে বড় ধরনের কোন নাশকতা চালাতে পারেনি ঘৃণ্য এসব অপশক্তি।
বিদায়ী-২০০৯ সালে আলোচিত ঘটনা ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের কাজ সম্পন্ন করার ঘটনা। বর্তমান সরকারের প্রধান নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিই ছিল এটি। ৰমতা গ্রহণের পরই মহাজোট সরকার বিচারের পথ উন্মুক্ত করে, চাহিদা অনুযায়ী আপীল বিভাগে বিচারপতি নিয়োগ দেয়। এরপর শুনানি শেষে দীর্ঘ ৩৪ বছর পর ১৯ নবেম্বর জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়। সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ আত্মস্বীকৃত খুনীদের আপীল খারিজ করে ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করে। হাইকোর্টে মৃতু্যদ-প্রাপ্ত সব খুনীর ফাঁসির রায় কার্যকর দেখার জন্য এখন অধীর অপেৰায় গোটা দেশবাসী। নতুন বছরের প্রথম ভাগেই বঙ্গবন্ধুর খুনীদের ফাঁসির রায় কার্যকর হবে বলেই প্রত্যাশা আইনজ্ঞদের।তবে বছরজুড়েই আলোচনার শীর্ষে ছিল দ্রব্যমূল্যের অস্থিতিশীলতা। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অগি্নমূল্যে নিয়ে ৰমতায় এসেই শক্তহাতে নাগাল টেনে ধরতে সৰম হয় সরকার। বাজার সিন্ডিকেট, চিনি সিন্ডিকেটসহ নানা সিন্ডিকেটের ষড়যন্ত্র-চক্রানত্ম মোকাবেলা করতে হয়েছে বছরজুড়েই। মহাজোট সরকারের ইশতেহারে প্রথম অগ্রাধিকার ছিল দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধ এবং বিশ্বমন্দা মোকাবিলায় সার্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। এ ৰেত্রে বিদায়ী বছরে মহাজোট সরকার সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে নিঃসন্দেহে। বিশ্ববাজারে দ্রব্যমূল্য ছিল স্থিতিশীল। আর তাই বছরজুড়েই দ্রব্যমূল্য ছিল মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে। বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসেও দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল থাকাটা ছিল বিদায়ী
বছরের আরেকটি ইতিবাচক ঘটনা। ধান-চাল-গম সরবরাহ পর্যাপ্ত এবং দাম মধ্যবিত্তদের আয়ত্তের মধ্যে রাখাটাও ছিল বিদায়ী বছরে আলোচিত ঘটনা। তবে বিশ্বমন্দার প্রভাবে বিদায়ী বছরে বিদেশী বিনিয়োগ হ্রাস পেয়েছে অনেকটাই।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পাঁচ বছরে সারের দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা। কিন্তু মহাজোট সরকার ৰমতায় এসেই সারের মূল্য অর্ধেকেরও নিচে নামিয়ে আনে। ডিজেলের দামও কমিয়ে দেয়। আগে কৃষক সারের পেছনে ছুটলেও বিদায়ী বছরে পরিস্থিতি ছিল উল্টো। পর্যাপ্ত সরবরাহ ও দাম কমানোর কারণে বছরজুড়েই সারই বরং ছুটেছে কৃষকদের পেছনে। সারের সঙ্কট না থাকায় বিদায়ী বছরে বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম প্রত্যেক কৃষককে পরিচয়পত্র দিয়ে সরকার থেকে ভতর্ুকি দামে সার-ডিজেল-কৃষি উপকরণ সরবরাহ ও কৃষি ঋণ প্রদানের ঘটনাটি ২০০৯ সালে ছিল আরেকটি আলোচিত ঘটনা। এছাড়া বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার পাট শিল্প ধ্বংস করতে আদমজী জুট মিল ধ্বংস করলেও বিদায়ী বছরে গণতান্ত্রিক সরকারের আমলে পাটের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। দাম না পাওয়ায় উৎপাদন ছেড়ে দেয়া কৃষকরা নতুন উদ্যমে পাট উতপাদন করছে এবং বেশ ভাল দামে বিক্রি করতে পেরেছে বিদায়ী বছরে।
তবে বিদায়ী ২০০৯ সালে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া সর্বত্র সোচ্চার দাবি ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। বছর জুড়ে সভা, সমাবেশ, সেমিনার, বিজয় দিবস কিংবা স্বাধীনতা দিবসে এই দাবিটি প্রতিধ্বনিত হয়েছে কোটি কোটি মানুষের মুখে। ৰমতাসীন সরকারের নির্বাচনী ওয়াদাও ছিল এটি। তা বাসত্মবায়নে বছরের প্রথমেই ২৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসত্মাব পাস হলে জনগণ আশায় বুক বাঁধে। তবে বিদায়ী বছরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি বড় কোন অগ্রগতি না হলেও নতুন বছরের শুরম্নতেই আনুষ্ঠানিক বিচার কাজ শুরম্ন হবে বলে প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে সরকার।
এছাড়া বিদায়ী বছরে দেশের ইতিহাসে প্রথম কোন বর্তমান ও সাবেক স্পীকার, সাবেক ডেপুটি স্পীকার ও চীফ হুইপের বিরম্নদ্ধে দুনর্ীতি তদনত্মে সংসদীয় কমিটি গঠন, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সংসদে উপস্থাপন, সাবেক স্পীকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ডেপুটি স্পীকার আখতার হামিদ সিদ্দিকী ও চীফ হুইপ বিএনপির মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের বিরম্নদ্ধে কোটি কোটি টাকা দুনীতির প্রমাণপত্র উপস্থাপনের ঘটনাটিও রীতিমতো তোলপাড়ের সৃষ্টি করেছিল। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে বিদায়ী বছরে উপজেলা পরিষদকে পুনরম্নজ্জীবিত করা হলেও এমপিদের কতর্ৃত্ব প্রতিষ্ঠা নিয়ে সৃষ্ট আলোচনা-সমালোচনার রেশ এখনও কাটেনি। বিদায়ী বছরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হলেও অস্বাভাবিক অবনতি হয়নি। বিদু্যত সাশ্রয়ে বিদায়ী বছরের শুরু এবং শেষে ঘড়ির কাঁটা এক ঘণ্টা এগুনো ও পেছানোর ঘটনাটিও ছিল আলোচনার শীর্ষে। শুধুমাত্র কাউন্সিল অনুষ্ঠান ছাড়া বড় দু'টি রাজনৈতিক দলেরই সাংগঠনিক কোন ততপরতা ছিল না বললেই চলে।
সব মিলিয়ে বিদায়ী বছরটি ছিল বৈচিত্র্যময়। আজকের গোধূলি বেলায় রক্তিম সূর্য অসত্ম যাওয়ার মধ্য দিয়ে হারিয়ে যাবে ঘটনাবহুল এ বছরটি। এখন নতুন বছর আর নতুন সূর্যের অপেৰায় দেশবাসী। এখন অপেৰা কেবল মানুষের খাদ্যের নিশ্চয়তা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের রায় কার্যকর, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বিনির্মাণ ও সংঘাতময় রাজনীতি পরিহার করে সৌহাদর-সম্প্রীতির দেশের। ৰমতায় থাকা মহাজোট সরকারের কাছে এ প্রত্যাশা রেখেই আগামীকাল থেকে নতুন বছরে, নতুন জীবনে যাত্রা করবে এ দেশের মানুষ। কাল শুরম্ন হবে আরও একটি নতুন বছর ২০১০। বিদায় ২০০৯
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পাঁচ বছরে সারের দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা। কিন্তু মহাজোট সরকার ৰমতায় এসেই সারের মূল্য অর্ধেকেরও নিচে নামিয়ে আনে। ডিজেলের দামও কমিয়ে দেয়। আগে কৃষক সারের পেছনে ছুটলেও বিদায়ী বছরে পরিস্থিতি ছিল উল্টো। পর্যাপ্ত সরবরাহ ও দাম কমানোর কারণে বছরজুড়েই সারই বরং ছুটেছে কৃষকদের পেছনে। সারের সঙ্কট না থাকায় বিদায়ী বছরে বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম প্রত্যেক কৃষককে পরিচয়পত্র দিয়ে সরকার থেকে ভতর্ুকি দামে সার-ডিজেল-কৃষি উপকরণ সরবরাহ ও কৃষি ঋণ প্রদানের ঘটনাটি ২০০৯ সালে ছিল আরেকটি আলোচিত ঘটনা। এছাড়া বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার পাট শিল্প ধ্বংস করতে আদমজী জুট মিল ধ্বংস করলেও বিদায়ী বছরে গণতান্ত্রিক সরকারের আমলে পাটের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। দাম না পাওয়ায় উৎপাদন ছেড়ে দেয়া কৃষকরা নতুন উদ্যমে পাট উতপাদন করছে এবং বেশ ভাল দামে বিক্রি করতে পেরেছে বিদায়ী বছরে।
তবে বিদায়ী ২০০৯ সালে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া সর্বত্র সোচ্চার দাবি ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। বছর জুড়ে সভা, সমাবেশ, সেমিনার, বিজয় দিবস কিংবা স্বাধীনতা দিবসে এই দাবিটি প্রতিধ্বনিত হয়েছে কোটি কোটি মানুষের মুখে। ৰমতাসীন সরকারের নির্বাচনী ওয়াদাও ছিল এটি। তা বাসত্মবায়নে বছরের প্রথমেই ২৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসত্মাব পাস হলে জনগণ আশায় বুক বাঁধে। তবে বিদায়ী বছরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি বড় কোন অগ্রগতি না হলেও নতুন বছরের শুরম্নতেই আনুষ্ঠানিক বিচার কাজ শুরম্ন হবে বলে প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে সরকার।
এছাড়া বিদায়ী বছরে দেশের ইতিহাসে প্রথম কোন বর্তমান ও সাবেক স্পীকার, সাবেক ডেপুটি স্পীকার ও চীফ হুইপের বিরম্নদ্ধে দুনর্ীতি তদনত্মে সংসদীয় কমিটি গঠন, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সংসদে উপস্থাপন, সাবেক স্পীকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ডেপুটি স্পীকার আখতার হামিদ সিদ্দিকী ও চীফ হুইপ বিএনপির মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের বিরম্নদ্ধে কোটি কোটি টাকা দুনীতির প্রমাণপত্র উপস্থাপনের ঘটনাটিও রীতিমতো তোলপাড়ের সৃষ্টি করেছিল। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে বিদায়ী বছরে উপজেলা পরিষদকে পুনরম্নজ্জীবিত করা হলেও এমপিদের কতর্ৃত্ব প্রতিষ্ঠা নিয়ে সৃষ্ট আলোচনা-সমালোচনার রেশ এখনও কাটেনি। বিদায়ী বছরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হলেও অস্বাভাবিক অবনতি হয়নি। বিদু্যত সাশ্রয়ে বিদায়ী বছরের শুরু এবং শেষে ঘড়ির কাঁটা এক ঘণ্টা এগুনো ও পেছানোর ঘটনাটিও ছিল আলোচনার শীর্ষে। শুধুমাত্র কাউন্সিল অনুষ্ঠান ছাড়া বড় দু'টি রাজনৈতিক দলেরই সাংগঠনিক কোন ততপরতা ছিল না বললেই চলে।
সব মিলিয়ে বিদায়ী বছরটি ছিল বৈচিত্র্যময়। আজকের গোধূলি বেলায় রক্তিম সূর্য অসত্ম যাওয়ার মধ্য দিয়ে হারিয়ে যাবে ঘটনাবহুল এ বছরটি। এখন নতুন বছর আর নতুন সূর্যের অপেৰায় দেশবাসী। এখন অপেৰা কেবল মানুষের খাদ্যের নিশ্চয়তা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের রায় কার্যকর, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বিনির্মাণ ও সংঘাতময় রাজনীতি পরিহার করে সৌহাদর-সম্প্রীতির দেশের। ৰমতায় থাকা মহাজোট সরকারের কাছে এ প্রত্যাশা রেখেই আগামীকাল থেকে নতুন বছরে, নতুন জীবনে যাত্রা করবে এ দেশের মানুষ। কাল শুরম্ন হবে আরও একটি নতুন বছর ২০১০। বিদায় ২০০৯