প্রথম সরকার প্রতিষ্ঠার দিন
প্রথম সরকার প্রতিষ্ঠার দিন
১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনটিতে তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার নিভৃত এক আমবাগানে শপথ নিয়েছিল স্বাধীন বাংলা অস্থায়ী বিপ্লবী সরকার। এ আমবাগানকে পরে 'মুজিবনগর' নামকরণ করে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী ঘোষণা করা হয়েছিল। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর দেশের বিভিন্ন জেলা একের পর এক পাক সেনাদের দখলে চলে যাওয়ায় বিপ্লবী সরকার গঠনের জন্য সীমান্তের নিকটবর্তী এ আম্রকাননকেই নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় বৈদ্যনাথ বাবুর সেই আমবাগানের নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। মুজিবনগরকে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাজধানী হিসেবেও ঘোষণা করা হয়। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে বিপ্লবী সরকারের মন্ত্রিপরিষদের আনুষ্ঠানিক শপথ ছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ ও মুক্তিবাহিনীর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি ও সর্বাধিনায়ক, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দিন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে গঠিত হয়েছিলো বাংলাদেশের প্রথম সরকার। পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে করা হয় অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি। সেদিনের ঐতিহাসিক মুহূর্তে দেশ-বিদেশের শত শত সাংবাদিকের উপস্থিতিতে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ এবং শপথ অনুষ্ঠান সফলভাবে শেষ হয়েছিলো মেহেরপুর ও মুজিবনগরের এক ঝাঁক নিবেদিতপ্রাণ কর্মীর সহযোগিতায়। 'মুজিবনগর সরকার' খ্যাত এ বিপ্লবী সরকারের দক্ষ নেতৃত্ব ও পরিচালনায় নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের সফল পরিণতিতে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ^ মানচিত্রে বাঙালির নিজস্ব আবাসভূমি স্বাধীন-সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়। নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বিপ্লবী সরকার অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা, বিশ^ জনমত গঠন এবং ভারতে আশ্রয় নেওয়া প্রায় এক কোটি শরণার্থীর পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, "মুজিবনগর সরকার গঠিত হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাসহ বিশ্ব দরবারে স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে জনমত সৃষ্টি এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সরকার পরিচালনায় এ সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তাই মুজিবনগর সরকারের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।" পৃথক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "১৭ এপ্রিল মুজিব নগর সরকার শপথ নেওয়ার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও সরকার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। মুক্তিকামী সব রাজনৈতিক দল ও শ্রেণী-পেশাসহ সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে এই সরকার দীর্ঘ নয় মাস দক্ষতার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে এবং ১৬ ডিসেম্বর মিত্রশক্তির সহায়তায় চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে।" ঐতিহাসিক এ দিবসের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে একযোগে কাজ করারও আহ্বান জানান তিনি। মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচী পালন করবে। এর মধ্যে রয়েছে, ভোর ছয়টায় বঙ্গবন্ধু ভবনসহ দলের কেন্দ্রীয় ও সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল সাতটায় বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং সোয়া সাতটায় শহীদ জাতীয় চার নেতার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন। এছাড়া আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এদিন বিকেল তিনটায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে মুজিবনগরে কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ১০টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সোয়া ১০টায় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সাড়ে ১০টায় গার্ড অব অনার এবং ১১টায় মুজিবনগর দিবসের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে শেখ হাসিনা মঞ্চে আলোচনা সভা।
Fri, Apr 17th, 2009 1:33
১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনটিতে তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার নিভৃত এক আমবাগানে শপথ নিয়েছিল স্বাধীন বাংলা অস্থায়ী বিপ্লবী সরকার। এ আমবাগানকে পরে 'মুজিবনগর' নামকরণ করে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী ঘোষণা করা হয়েছিল। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর দেশের বিভিন্ন জেলা একের পর এক পাক সেনাদের দখলে চলে যাওয়ায় বিপ্লবী সরকার গঠনের জন্য সীমান্তের নিকটবর্তী এ আম্রকাননকেই নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় বৈদ্যনাথ বাবুর সেই আমবাগানের নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। মুজিবনগরকে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাজধানী হিসেবেও ঘোষণা করা হয়। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে বিপ্লবী সরকারের মন্ত্রিপরিষদের আনুষ্ঠানিক শপথ ছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ ও মুক্তিবাহিনীর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি ও সর্বাধিনায়ক, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দিন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে গঠিত হয়েছিলো বাংলাদেশের প্রথম সরকার। পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে করা হয় অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি। সেদিনের ঐতিহাসিক মুহূর্তে দেশ-বিদেশের শত শত সাংবাদিকের উপস্থিতিতে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ এবং শপথ অনুষ্ঠান সফলভাবে শেষ হয়েছিলো মেহেরপুর ও মুজিবনগরের এক ঝাঁক নিবেদিতপ্রাণ কর্মীর সহযোগিতায়। 'মুজিবনগর সরকার' খ্যাত এ বিপ্লবী সরকারের দক্ষ নেতৃত্ব ও পরিচালনায় নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের সফল পরিণতিতে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ^ মানচিত্রে বাঙালির নিজস্ব আবাসভূমি স্বাধীন-সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়। নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বিপ্লবী সরকার অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা, বিশ^ জনমত গঠন এবং ভারতে আশ্রয় নেওয়া প্রায় এক কোটি শরণার্থীর পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, "মুজিবনগর সরকার গঠিত হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাসহ বিশ্ব দরবারে স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে জনমত সৃষ্টি এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সরকার পরিচালনায় এ সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তাই মুজিবনগর সরকারের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।" পৃথক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "১৭ এপ্রিল মুজিব নগর সরকার শপথ নেওয়ার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও সরকার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। মুক্তিকামী সব রাজনৈতিক দল ও শ্রেণী-পেশাসহ সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে এই সরকার দীর্ঘ নয় মাস দক্ষতার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে এবং ১৬ ডিসেম্বর মিত্রশক্তির সহায়তায় চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে।" ঐতিহাসিক এ দিবসের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে একযোগে কাজ করারও আহ্বান জানান তিনি। মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচী পালন করবে। এর মধ্যে রয়েছে, ভোর ছয়টায় বঙ্গবন্ধু ভবনসহ দলের কেন্দ্রীয় ও সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল সাতটায় বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং সোয়া সাতটায় শহীদ জাতীয় চার নেতার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন। এছাড়া আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এদিন বিকেল তিনটায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে মুজিবনগরে কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ১০টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সোয়া ১০টায় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সাড়ে ১০টায় গার্ড অব অনার এবং ১১টায় মুজিবনগর দিবসের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে শেখ হাসিনা মঞ্চে আলোচনা সভা।
Fri, Apr 17th, 2009 1:33