দিল্লিতে হাসিনা-মনমোহন সফল বৈঠক বাংলাদেশী পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে : বিদ্যুৎ আমদানি ও সাংস্কৃতিক বিনিময় সমঝোতা স্মারক

দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা-মনমোহন সফল বৈঠক বাংলাদেশী পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে : বিদ্যুৎ আমদানি ও সাংস্কৃতিক বিনিময় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর : নদী খনন, রেল ও সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে ১শ’ কোটি ডলার দেয়ার অঙ্গীকার : ট্রানজিট দিতে সম্মত ভারত মাসুদ করিম, নয়াদিল্লি থেকে সন্ত্রাস দমনে ঢাকা ও দিল্লি একযোগে কাজ করবে- এই মর্মে দৃঢ় অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লির ঐতিহ্যবাহী হায়দরাবাদ হাউসে বহু প্রতীক্ষিত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের মধ্যে শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকের পর সন্ত্রাস দমন তথা নিরাপত্তা সংক্রান্ত তিনটি চুক্তি সই হয়। এ তিনটি চুক্তি হল- ১. অপরাধ দমনে পারস্পরিক আইনগত সহযোগিতা চুক্তি, ২. সাজাপ্রাপ্ত আসামি হস্তান্তর চুক্তি এবং ৩. আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস দমন ও মাদক পাচার প্রতিরোধ চুক্তি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে বলেছেন, বাংলাদেশের ভূখণ্ড কোন দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং আশ্বাস দিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে অধিক সংখ্যক পণ্য ভারতে প্রবেশাধিকার দেয়া হবে। অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি বলেছেন, বাংলাদেশ যত বেশি পণ্য ভারতের বাজারে পাঠাতে পারবে, তাকে অবশ্যই স্বাগত জানাব। অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়াকে সন্ত্রাস ও দারিদ্র্যমুক্ত শান্তির আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনুষ্ঠিত এ শীর্ষ বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে অমীমাংসিত সব ইস্যুতে আলোচনা হয়। বৈঠকে টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং আবারও আশ্বস্ত করেন, বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর কিছু করবে না ভারত। সমুদ্রসীমা নির্ধারণের ইস্যু জাতিসংঘে নিয়ে যাওয়ায় বৈঠকে ভারত অস্বস্তি প্রকাশ করে ইস্যুটি সালিশ আদালত থেকে প্রত্যাহার করে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির প্রস্তাব করে ভারতীয় পক্ষ। বাংলাদেশ এ বিষয়ে কিছুই বলেনি। শীর্ষ বৈঠকে ঐকমত্য হয়েছে, সীমান্ত ব্যবস্থাপনার বিষয়ে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপকে সক্রিয় করা হবে। এদিকে, ভারত বাংলাদেশকে নদী খনন, রেল ও সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে একশ’ কোটি ডলার দেয়ার অঙ্গীকার করেছে। কর্মকর্তারা বলছেন, আজকের মধ্যে এ বিষয়টি চূড়ান্ত করার পর যৌথ ঘোষণা দেয়া হবে। অপরদিকে, দিল্লিতে একজন ভারতীয় কূটনীতিক বলেছেন, এ সফরের সময় যে ক’টি চুক্তি হওয়ার কথা ছিল তার সবই হয়েছে। বিশেষ করে ট্রানজিট তথা কানেকটিভিটি ও তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়গুলোর জন্য চুক্তির প্রয়োজন হলে সেগুলোই হবে। এসব চুক্তি সম্পাদনের বিষয়ে প্রক্রিয়া সম্পাদন করা হবে দ্রুত। এখন যে বিলম্ব মনে হচ্ছে, সেটা প্রক্রিয়া সম্পাদন করার বিলম্ব। তবে তিনি এও বলেন যে, প্রক্রিয়াটা কিভাবে সম্পন্ন হবে তার বিস্তারিত যৌথ ঘোষণায় উল্লেখ করা হবে। এসব কারণেই যৌথ ঘোষণা দিতে বিলম্ব হচ্ছে। বৈঠক সূত্র জানায়, ভারতের বাজারে বাংলাদেশের আরও ৪৭টি পণ্য শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার করার অনুমতি দিয়েছে। বৈঠকে ভারতের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ত্রিপুরার পালাতনা বিদ্যুৎ কেন্দে র জন্য ভারি সরঞ্জাম (ওভার ডাইমেনশনাল কনসাইনমেন্ট-ওডিসি) পাঠাতে আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে ভারত বলেছে, আশুগঞ্জ বন্দর কেবল ত্রিপুরায় বিদ্যুৎ কেন্দ নির্মাণ সরঞ্জাম নেয়ার কাজেই নয় বরং স্থায়ীভাবে ভারতকে ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হোক। এক্ষেত্রে ভারত আশুগঞ্জ বন্দরকে মডেল বন্দরে উন্নীত করতে সহায়তা দেবে বলে জানিয়েছে। কানেকটিভিটি ইস্যুতে সহযোগিতার বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনায় বেশ অগ্রগতি হয়েছে। বিশেষ করে নেপাল ও ভুটানে সংযোগ সৃষ্টি করতে বাংলাদেশকে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হবে মর্মে একমত হয়েছে দু’দেশ। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি ও সংস্কৃতি বিনিময়েও সহযোগিতার বিষয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। তবে এবারের বৈঠকে তিস্তার পানি বণ্টনে কোন চুক্তি সই হয়নি। খুব শিগগিরই ‘যৌথ নদী কমিশন’ (জেআরসি) বৈঠক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনা হবে। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী কোন কিছুই করা হবে না। জনগণের ভাগ্যের উন্নয়নে যা করা প্রয়োজন তাই করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত সাহায্য-সহযোগিতা করেছে। ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সময় ভারত এসেছিলেন। ঢাকা ও দিল্লির কর্মকর্তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের কোন এক সময়ে যৌথ বিবৃতি দেয়া হবে। এদিকে, আজও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় যোগ দেবেন। স্থানীয় সময় রাত ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের জানান, দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে হূদ্যতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক হয়েছে। মঙ্গলবার একটি যৌথ ইশতেহার আসতে পারে। আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার দিল্লিতে নানা আনুষ্ঠানিকতায় ব্যস্ত দিন অতিবাহিত করেছেন। সকালে দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগদানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিল ও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একে একে সাক্ষাৎ করেন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসএম কৃষ্ণা ও বিরোধীদলীয় নেত্রী সুষমা স্বরাজ। এসব বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বোন শেখ রেহানা, প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পানিসম্পদ মন্ত্রী রমেশ চন্দ সেন, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম ও ড. মশিউর রহমান, ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার আহমেদ তারেক করিম, এম্বেসেডর এট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, ধীরেন্দ নাথ শম্ভু এমপি, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এমএ করিম, স্বরাষ্ট্র সচিব আবদুস সোবহান শিকদার, পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজঘাটে গিয়ে ভারতের জাতির জনক মহাৱা গান্ধীর সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। রাষ্ট্রপতি ভবনে সংবর্ধনা : সোমবার সকালে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা জানানোর মাধ্যমে দিনের কর্মসূচির সূচনা হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি ভবনে পৌঁছলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং স্বাগত জানান। একটি অশ্বারোহী দল শেখ হাসিনাকে স্কট করে নিয়ে যায়। তারপর একটি সুসজ্জিত সামরিক দল প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার জানায়। প্রধানমন্ত্রী গার্ড পরিদর্শন করেন এবং সালাম গ্রহণ করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি ভবনে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, তিনি বাংলাদেশের জনগণের শুভেচ্ছা নিয়ে ভারতে এসেছেন। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত কেবল বাংলাদেশকে সহযোগিতাই করেনি, গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্যই দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান শত্রু। দারিদ্র্যমুক্ত দক্ষিণ এশিয়া চাই। রাষ্ট্রপতি ও সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় তারা দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন। বিকাল ৪টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যান ১০, জনপথের কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর বাসভবনে। সেখানে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রণব, কৃষ্ণা, সুষমার সাক্ষাৎ : ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসএম কৃষ্ণা বেলা সোয়া ১১টায় হোটেল মৌর্য শেরাটনে প্রধানমন্ত্রীর স্যুটে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বিকাল ৩টায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে হোটেল স্যুটে সাক্ষাৎ করেন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি। বেঠকের পর প্রণব মুখার্জি সাংবাদিকদের বলেন, খুবই ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এটা একটা ঐতিহাসিক সফর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করায় অভিনন্দন জানিয়েছি। প্রণব মুখার্জি বলেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে যত বেশি পণ্য শুল্কমুক্তভাবে আসবে তত বেশি পণ্যকেই স্বাগত জানাব। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত পরস্পরের উদ্বেগগুলো উপলব্ধি করতে পেরেছে। তারপর বিরোধীদলীয় নেত্রী সুষমা স্বরাজ হোটেলে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সুষমা স্বরাজ পরে সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তারা আলোচনা করেন। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক খুবই ভালো বলে তিনি মন্তব্য করেন। রাজঘাটে শ্রদ্ধা নিবেদন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজঘাটে গিয়ে ভারতের জাতির জনক মহাৱা গান্ধীর সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন। শোক বইয়ে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, মহাৱা গান্ধী এবং শান্তি ও অহিংসতার প্রতি তার যে বাণী তা বিশ্বজুড়ে শান্তিকামী মানুষের জন্য চিরকাল প্রেরণার উৎস হয়ে আছে। বিশেষ করে মানুষের নিরাপত্তার জন্য বিশ্ববাসী যখন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, সেই সময়ে আমরা মহাৱা গান্ধীর প্রচারিত মহৎ বাণীগুলোতে আশ্রয় খুঁজে পাই। মহান এ মানুষটির আৱার প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই।

স্মৃতিবিজড়িত দিল্লির সেই বাড়িটি
যুগান্তর ডেস্কআটপৌরে শাড়িপরা এক বঙ্গবধূর স্মৃতিময় নয়াদিল্লির পান্দারা পার্কের সেই বাড়িটি এখন কেবলই ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী। জনশূন্য নির্জনতা এবং কার্যত নির্বাসিত জীবন থেকে অনেক দূরে সরে এসেছেন এক সময়কার ওই বাড়ির বাসিন্দা বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে বর্ণময় রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বসে হয়তো তার মনে পড়েছে ওই বাড়িটির নানা স্মৃতির কথা। ১৯৭৫ সালে ধানমণ্ডিতে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের পর দিল্লির যে বাড়িতে প্রায় ৬ বছর কাটিয়েছেন, সেই সময়ের নানা স্মৃতি এখনও হয়তো তাকে তাড়া করে বেড়াবে, সেটাই স্বাভাবিক। শীতের কুয়াশায় আচ্ছন্ন এ বাড়িটি এখন কিছুটা অযত্নে দাঁড়িয়ে রয়েছে অর্জুন, পেয়ারা ও নারকেল গাছের আড়ালে।১৯৭৬-৮১ সাল পর্যন্ত দিল্লিতেই নির্বাসিত জীবনে ছিলেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা, তার স্বামী এমএ ওয়াজেদ এবং দুই সন্তান সজীব ও সায়মা পুতুল একসময় এ শহরের লাজপাত নগরের ৫৬ রিং রোডে থাকতেন। পরে তারা ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বরে উঠেছিলেন পান্দারা পার্কের সি-ব্লকের এই বাড়িটিতে। পরে ৫৬ রিং রোডের এ বাড়ি নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কার্যালয়ে পরিণত হয় এবং চানক্যপুরীর কূটনৈতিকপাড়ায় যাওয়ার আগ পর্যন্ত দূতাবাসের কার্যালয় বেশ কিছুদিন এ বাড়িতেই ছিল।বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয় সে সময় শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা জার্মানিতে ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পর শেখ হাসিনা প্রথমে যুক্তরাজ্যে এবং পরে ভারতে আশ্রয় চান। বাংলাদেশে ফেরার আগ পর্যন্ত (১৯৮১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত) শেখ হাসিনা দিল্লির এ বাড়িতেই ছিলেন।

Popular posts from this blog

THE CONSTITUTION OF THE BANGLADESH AWAMI LEAGUE

ইতিহাসবন্ধনী

ব্রিগেডিয়ার বারীর যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা