আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বাণী
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা ‘মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন
‘‘মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষীসহ সকল ভাষা ও সংস্কৃতির জনগণকে আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।মহান একুশে ফেব্রুয়ারী বাঙালীর জীবনে শোক, শক্তি ও গৌরবের প্রতীক। ১৯৫২ সালের এ দিনে ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে অকাতরে প্রাণ দিয়েছিলেন রফিক, শফিক, জব্বার, বরকত, শফিউদ্দিন, সালামসহ আরও অনেকে।আজকের এই দিনে আমি ভাষা শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর গ্রদ্ধা জানাই। গ্রদ্ধা জানাই বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী সর্বকালের সর্বগ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সকল ভাষা সৈনিকের প্রতি।ঔপনিবেশিক পাকিস্তানী শাসকদের ভাষা-দাসত্ব চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিরোধে ১৯৪৮ সাল থেকেই রুখে দাঁড়িয়েছিল বাংলার দামাল সন্তানেরা। সর্বস্তরের জনগণের আন্দোলনকে বেগবান করতে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে কারাবরণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কারাগার থেকেই তাঁর অবিচল ও দৃপ্ত দিকনির্দেশনা জনতার আন্দোলনে এনেছিল গতিময় উদ্দীপনা। সেই দুর্বার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী শাসকগোষ্ঠীর জারি করা ১৪৪ ধারা ভাঙতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন ভাষা শহীদরা।মহান একুশে ফেব্রুয়ারীর সেই রক্তাক্ত গৌরবের সুর বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে আজ বিশ্বের ১৮৯টি দেশের মানুষের প্রাণে অনুরণিত হয়। বিশ্বের সকল নাগরিকের সত্য ও ন্যায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রেরণার উৎস আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগে এবং কানাডা প্রবাসী কয়েকজন তরুণের সহায়তায় ইউনেস্কো এই দিনকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আরও উচ্চতর মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছে।বিশ্বের ২৫ কোটি মানুষের মুখের ভাষা বাংলাকে জাতিসংঘের অন্যতম সরকারী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতিদানের জন্য আমি ইতোমধ্যে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দাবী উত্থাপন করেছি।বিশ্বের সকল ভাষা সংক্রান্ত গবেষণা এবং ভাষা সংরক্ষণের জন্য আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি।অমর একুশে আমাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, বাঙালী জাতীয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতীক। ক্ষুধা, দারিদ্র্য, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা এবং নিরক্ষরতামুক্ত আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে বর্তমান সরকার যাত্রা শুরু করেছিল। গত দুই বছরে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই কাক্সিক্ষত অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।আসুন সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার শপথ নেই।আমি ভাষা শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।