বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন


বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯১তম জন্মদিন বৃহস্পতিবার। এ দিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। এদিন সরকারি ছুটি। চলতি বছর এ দিবসের প্রতিপাদ্য- 'বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নদেশ, দিন বদলের বাংলাদেশ'। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান ও মোসাম্মৎ সায়রা বেগমের সংসারে জন্ম নেন শেখ মুজিবুর রহমান। চার মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে মুজিব ছিলেন তৃতীয়। কালক্রমে মুজিব পরিণত হন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতায়। রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আত্মত্যাগ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে তিনি পরিচিত হন 'বঙ্গবন্ধু' হিসেবে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে হয়তো বাংলাদেশের জন্ম হতো না। বাঙালি জাতির ইতিহাসে তার অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর বাণীতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিশ্বের শোষিত মানুষের অধিকার আদায় ও মুক্তির প্রতিভূ। প্রকৃত ইতিহাস জানতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বাঙালির স্বার্থের ব্যাপারে আপসহীন এই নেতা সহকর্মীদের নিয়ে ১৯৪৮ সালে গঠন করেন ছাত্রলীগ। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন তৎকালীন মুসলিম লীগ সরকারের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দল আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হলে তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান নবগঠিত দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হন। পরে অসা¤প্রদায়িক চেতনায় আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে 'মুসলিম' শব্দটি বাদ দিয়ে দলের নামকরণ হয় আওয়ামী লীগ। তার নেতৃত্বে স্বাধীনতার মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয় বাঙালি। এ জাতির অধিকার আদায়ের আন্দোলনের দীর্ঘ পরিক্রমায় বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে এই নেতাকে। ১৯৬৯ এর ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ছাত্র-জনতা তাকে 'বঙ্গবন্ধু' উপাধি দেয়। ১৯৭০ এর নির্বাচনে বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর ছয় দফার পক্ষে অকুণ্ঠ সমর্থন জানায়। আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দলের ম্যান্ডেট পায়। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে নির্বাচনে বাঙালির এ বিজয়কে মেনে নেয়নি। এরপর স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবিতে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালির আন্দোলন নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনের রূপ নেয়। ১৯৭১ এর মার্চে শুরু হয় অসহযোগ।

ওই বছর ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসমুদ্রে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, 'এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম'। ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ শুরু করলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুকে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর রোডের বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। একাত্তরে নয় মাস যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম হয়। ১৯৭২ এর ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফেরেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিজ বাসভবনে ঘাতকদের হাতে সপরিবারে নিহত হন তিনি।

Popular posts from this blog

THE CONSTITUTION OF THE BANGLADESH AWAMI LEAGUE

ইতিহাসবন্ধনী

ব্রিগেডিয়ার বারীর যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা