'বঙ্গবন্ধু-আওয়ামী লীগ-বাংলাদেশ' একই সূত্রে গাঁথা
'বঙ্গবন্ধু-আওয়ামী লীগ-বাংলাদেশ' একই সূত্রে গাঁথা
আজ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
বিশেষ প্রতিনিধি ॥ "...জীবন দানের প্রতিজ্ঞালয়ে লক্ষ সেনানী তব পাছে/তোমার হুকুম তামিলের লাগি সাথে তব চলিয়াছে।/রাজভয় আর কারা শৃংখল হেলায় করেছ জয়/ফাঁসির মঞ্চে মহত্ত্ব তব কখনো হয়নি ক্ষয়।/বাংলাদেশের মুকুটহীন তুমি প্রমর্ত রাজ/প্রতি বাঙালির হৃদয়ে তোমার তখত তাজ...।"'বঙ্গবন্ধু-আওয়ামী লীগ-বাংলাদেশ' ইতিহাসে এই তিনটি নাম একই সূত্রে গাথা।
আজ গণমানুষের প্রিয় দল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। আওয়ামী লীগ মানেই বাঙালী জাতীয়বাদের মূল ধারা। অতীতের মতো বাংলাদেশের ভবিষ্যতও আওয়ামী লীগের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত। বাঙালী জাতির মুক্তির মূলমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে গণতান্ত্রিকভাবে জন্ম নেয়া উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আজ ৬১ বছরে পা রাখল। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার বিখ্যাত রোজ গার্ডেনে জন্ম হয়েছিল এই প্রাচীন রাজনৈতিক দলটির। এই দলের জন্মলাভের মধ্য দিয়েই রোপিত হয়েছিল বাঙালীর হাজারও বছরের লালিত স্বপ্ন স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজ। জন্মলগ্ন থেকেই দেশের মাটি ও মানুষের প্রতি দলটির নেতাকর্মীদের অঙ্গীকার ও ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হয় পাকিস্তানী ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙালী জাতির গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামের ইতিহাস। জনগণের অকুণ্ঠ ভালবাসা ও সমর্থন নিয়েই এই দলটি বিকশিত হয়।যার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির ভূখণ্ডের সীমানা পেরিয়ে এই উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ এবং জনসমর্থনপুষ্ট অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, মানব কল্যাণকামী রাজনৈতিক দল হিসাবে নিজেদের পরিচিতি অর্জনে সৰম হয়েছে। বাঙালীর ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ভাষা, বাঙালীর আত্মনিয়ন্ত্রণ, স্বায়ত্তশাসন সর্বশেষ স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে গড়ে ওঠা আওয়ামী লীগ তার আদর্শ এবং উদ্দেশ্যে অটল থেকেও সময়ের বিবর্তনে বৈজ্ঞানিক কর্মসূচীর মাধ্যমে একটি আধুনিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে আজ প্রতিষ্ঠিত। এই দলের নেতাকর্মীদের ত্যাগ তিতিক্ষা ও অঙ্গীকারদীপ্ত সংগ্রামী ভূমিকা ইতিহাসবিদিত।রোজ গার্ডেনে দলটি প্রতিষ্ঠালাভ করেছিল 'পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ' নামে। ১৯৫৬ সালে ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত দলীয় কাউন্সিলে 'মুসলিম' শব্দটি বাদ দিয়ে 'বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ' নামকরণের মাধ্যমে দলটি অসাম্প্রদায়িক বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হয়। এক কথায় বলতে গেলে, বাঙালী জাতির সকল মহতী অর্জনের নেতৃত্বে ছিল জনগণের প্রাণপ্রিয় সংগঠন আওয়ামী লীগ, যার মহানায়ক ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।দীর্ঘ রাজনৈতিক পথপরিক্রমায় অনেক ঘাত-প্রতিঘাত, চড়াই-উৎরাই ও প্রাসাদষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দলটি আজ এ দেশের গণমানুষের ভাব-ভাবনার ধারক-বাহকে পরিণত হয়েছে। অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক ভাব-ধারার আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে দলটি। জন্মের পর থেকে অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে ঐতিহ্যবাহী দলটি বেঁচে আছে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসাবে। জন্মলাভের পর দ্বিতীয়বারের মতো তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি আসনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ এখন রাষ্ট্রৰমতায়। বঙ্গবন্ধু বাঙালী জাতিকে উপহার দিয়েছেন মহামূল্যবান স্বাধীনতা। এখন তাঁরই কন্যা শেখ হাসিনা ভূমিধ্বস বিজয় নিয়ে ৰমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।আওয়ামী লীগের জন্মলাভের পর মহান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরম্ন করে '৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন, '৬৬ সালের ঐতিহাসিক ছয়দফা, '৬৯ সালের গণঅভু্যত্থান এবং '৭০ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে এই দলের নেতৃত্বে বাঙালী জাতি ক্রমশ এগিয়ে যায় স্বাধীনতার দিকে। এই দলের নেতৃত্বেই ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ নিজেদের স্থান দখল করে। আর এসব আন্দোলনের পুরোধা ও একচ্ছত্র নায়ক ছিলেন ইতিহাসের মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।১৯৭৫ সালে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দীর্ঘ ২১ বছর বিরোধী দলে অবস্থান করে আওয়ামী লীগ। এরপর ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করেছিল। এর আগে এই দলের আন্দোলন সংগ্রামেই প্রতিষ্ঠিত হয় সংসদীয় গণতন্ত্র, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান অনুযায়ী পূর্ণ মেয়াদ শেষে ৰমতা হসত্মানত্মর করে নির্বাচনে অংশ নেয় আওয়ামী লীগ। ২০০১ সালের পহেলা অক্টোবর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পরাজয়ের পর বিরোধী দলে অবস্থানকালে আওয়ামী লীগকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন ও নেতৃত্বশূন্য করতে আসে বেশ কয়েকবার মারণাঘাত। ২১ আগস্ট ভয়াল গ্রেনেড হামলায় শেখ হাসিনাসহ দলের শীর্ষস্থানীয় সকল নেতা অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে গেলেও ঝরে যায় অসংখ্য তাজা প্রাণ। ওয়ান ইলেভেনের পর আবারও ঝড় আসে আওয়ামী লীগের ওপরে। দীর্ঘ ১১ মাস কারাপ্রকোষ্ঠে বন্দী রেখেও বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া আওয়ামী লীগকে ভাঙতে পারেনি নেপথ্যের কুশীলবরা। সর্বশেষ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি আসনে দেশের জনগণ ভোট দিয়ে ৰমতায় বসিয়েছে আওয়ামী লীগকে।আওয়ামী লীগ বাঙালী জাতীয়বাদের মূল ধারা। এটা বাঙালী জাতির গৌরবের যে দ্বিজাতিতত্ত্বেও চোরাবালি থেকে বাঙালী জাতিকে পুনরম্নদ্ধার করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর মতো একজন শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি যিনি হাজার বছরের বাঙালী জাতির সাধনা, ধ্যান, জ্ঞান তাঁর বিপুল সংস্কৃতির ভা-ারের অনত্মর্গত সত্যকে নিজের জীবনে ধারণ করে তা রূপ দিয়েছিলেন দীর্ঘ দু'শ বছরের ধর্ম ও রাজনীতির সংমিশ্রণে জাতীয়তাবাদের বিকৃতি থেকে আমাদের মুক্ত করে। আগামী দু'এক শতাব্দীর মধ্যেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মতো একজন মহামানব, যুগ সৃষ্টিকারী কোন ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটবে, তা কল্পনাও করা যায় না। তাই বাঙালী জাতি আওয়ামী লীগের শুভ জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী শেখ মুজিবুর রহমানকেও।একনজরে আওয়ামী লীগের ৬১ বছর আওয়ামী লীগের পথচলা শুরম্ন ১৯৪৯ সালে। ওই বছর ২৩-২৪ জুন পুরান ঢাকার কেএম দাস লেনে বশির সাহেবের রোজ গার্ডেনের বাসভবনে প্রগতিবাদী ও তরম্নণ মুসলিম লীগ নেতাদের উদ্যোগে রাজনৈতিক কর্মী সম্মেলনের ভেতর দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় পাকিসত্মানের প্রথম প্রধান বিরোধী দল পূর্ব পাকিসত্মান আওয়ামী মুসলিম লীগ। প্রথম কাউন্সিলে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন শামসুল হক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন প্রথম কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক। দলের দ্বিতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় ১৯৫৩ সালে ময়মনসিংহে। এতে সভাপতি হন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান।১৯৫৫ সালের ২১-২৩ অক্টোবর ঢাকার সদরঘাটের রূপমহল সিনেমা হলে দলের তৃতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে আওয়ামী লীগ অসাম্প্রদায়িক সংগঠনে পরিণত হয়। দলের নতুন নামকরণ হয় পূর্ব পাকিসত্মান আওয়ামী লীগ। নিখিল পাকিসত্মান আওয়ামী মুসলিম লীগের সভাপতি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এ প্রসত্মাবটি উত্থাপন করেন। পরে কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মাওলানা ভাসানী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বহাল থাকেন।'৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক নির্ণয়ে সোহরাওয়ার্দী-ভাসানীর মতপার্থক্যের কারণে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগ ভেঙ্গে যায়। ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত হয় ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)। আর মূল দল আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ ও সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান অপরিবর্তিত থাকেন। '৫৮ সালে পাকিসত্মানে সামরিক শাসন জারি হলে আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড স্থগিত করা হয়। দীর্ঘ ছয় বছর 'আন্ডারগ্রাউন্ড' রাজনীতি করার পর '৬৪ সালে দলটির কর্মকা- পুনরম্নজ্জীবিত করা হয়। এতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে তর্কবাগীশ-মুজিব অপরিবর্তিত থাকেন।১৯৬৬ সালের কাউন্সিলে দলের সভাপতি পদে নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তাজউদ্দীন আহমেদ। এর পরে '৬৮ ও '৭০ সালের কাউন্সিলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অপরিবর্তিত থাকেন। এই কমিটির মাধ্যমেই পরিচালিত হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ। দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭২ সালে ৰমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রথম কাউন্সিলে সভাপতি হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন বর্তমান মহামান্য রাষ্ট্রপতি জিলস্নুর রহমান। '৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু সভাপতির পদ ছেড়ে দিলে সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয় এএইচএম কামরম্নজ্জামানকে। সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল থাকেন জিলস্নুর রহমান।১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আসে আওয়ামী লীগের ওপর মারণাঘাত। বঙ্গবন্ধু সপরিবারে হত্যার পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি আবারও স্থগিত করা হয়। '৭৬ সালে ঘরোয়া রাজনীতি চালু হলে আওয়ামী লীগকেও পুনরম্নজ্জীবিত করা হয়। এতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয় মহিউদ্দিন আহমেদ ও বর্তমান সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে। '৭৭ সালে এই কমিটি ভেঙ্গে করা হয় আহ্বায়ক কমিটি। এতে দলের আহ্বায়ক করা হয় সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনকে। '৭৮ সালের কাউন্সিলে দলের সভাপতি করা হয় আবদুল মালেক উকিলকে এবং সাধারণ সম্পাদক হন আবদুর রাজ্জাক।এর পরেই শুরম্ন হয় আওয়ামী লীগের উত্থানপর্ব, উপমহাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসাবে গড়ে তোলার মূল প্রক্রিয়া। সঠিক নেতৃত্বের অভাবে দলের মধ্যে সমস্যা দেখা দিলে নির্বাসনে থাকা বঙ্গবন্ধুর কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। দেশে ফেরার আগেই '৮১ সালের কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল রাখা হয় আবদুর রাজ্জাককে। আবারও আঘাত আসে দলটির ওপর। '৮৩ সালে আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে দলের একটি অংশ পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে বাকশাল গঠন করে। এ সময় সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। '৮৭ সালের কাউন্সিলে শেখ হাসিনা সভাপতি ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক হন।'৯২ ও '৯৭ সালের সম্মেলনে শেখ হাসিনা এবং জিলস্নুর রহমান দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০০ সালের বিশেষ কাউন্সিলে একই কমিটি বহাল থাকে। ২০০২ সালের ২৬ ডিসেম্বর জাতীয় কাউন্সিলে শেখ হাসিনা এবং আবদুল জলিল দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দেশের একক বৃহত্তম রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়। তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি আসনে বিজয়ী হওয়ার পর সর্বশেষ ২০০৯ সালের ২৪ জুলাই আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। শেখ হাসিনা সভাপতি পদে বহাল থাকেন এবং নতুন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন বর্তমান এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। আর এই কাউন্সিলের মাধ্যমে তারম্নণ্যেনির্ভর কেন্দ্রীয় কমিটি গড়ে তোলেন শেখ হাসিনা। এতে করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে ছিটকে পড়েন অধিকাংশ দলের সিনিয়র ও অভিজ্ঞ নেতারা। বর্তমানে এই কমিটি বহাল রয়েছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণী : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৬১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলৰে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বাণীতে দলের অগণিত নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীসহ আওয়ামী লীগের প্রাণশক্তির মূল উৎস বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৬১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলৰে আমি দলের অগণিত নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীসহ আওয়ামী লীগের প্রাণশক্তির মূল উৎস বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। দীর্ঘ পথপরিক্রমায় এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্বদানের সুমহান গৌরবের প্রতীক আওয়ামী লীগ আজ একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আজকের দিনে আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অন্য নেতৃবৃন্দকে। যাদের নেতৃত্বে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল। স্মরণ করছি, জাতীয় চার নেতাসহ আমাদের পূর্বসূরি নেতাকর্মীদের যাদের ঘাম-শ্রম, মেধা ও ত্যাগের বিনিময়ে এ সংগঠন গণমানুষের সংগঠনের পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাসের সঙ্গে এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। '৫২'র ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন, '৫৪'র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আইয়ুব খানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, '৬৪'র দাঙ্গার পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা, '৬৬'র ৬-দফা আন্দোলন ও '৬৯'র গণঅভু্যত্থানের পথ বেয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জাতিকে প্রস্তুত করে স্বাধীনতার জন্য। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে '৭০'র নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের পৰে বাঙালীর নিরঙ্কুশ রায়ের কথা উলেস্নখ করে বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন, "এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম।" ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিসত্মানী হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালীর ওপর অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে শুরম্ন করে ইতিহাসের নির্মমতম গণহত্যা। গ্রেফতার করা হয় বঙ্গবন্ধুকে। গ্রেফতারের পূর্বে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ওয়ারলেসের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শেখ হাসিনা বাণীতে আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালিত সফল মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালী জাতি ১৬ ডিসেম্বর চূড়ানত্ম বিজয় অর্জন করে। প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালীর হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের ফসল স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামাজিক ন্যায়বিচার, আইনের শাসন, মানবাধিকার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে একটি প্রগতিশীল, উদার, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আওয়ামী লীগ বদ্ধপরিকর। বাঙালী জাতির প্রতিটি মহৎ এবং শুভ অর্জনে আওয়ামী লীগের সংগ্রামী ভূমিকা জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইনশাল্লাহ অতীতের মতো ভবিষ্যতেও আওয়ামী লীগ এদেশের জনগণের পাশে থাকবে_ এই হোক আজকের দিনে সবার প্রত্যাশা।কর্মসূচী এবার সারাবছর ধরে সারাদেশেই ব্যতিক্রমী নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে দলের ৬১তম জন্মদিন পালন করার সিদ্ধানত্ম নিয়েছে আওয়ামী লীগ। আজ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচী ছাড়াও এক বছর ধরে ইউনিয়ন, থানা, জেলায়-জেলায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ, আনন্দর্যালি, মহানগরে বিভাগীয় বিশাল বিশাল মহাসমাবেশসহ নানা কর্মসূচী রয়েছে এ পরিকল্পনায়। এদিকে আওয়ামী লীগের জন্মদিন উপলৰে রাজধানীর প্রতিটি গুরম্নত্বপূর্ণ সড়ক মোহনায় ব্যানার, ফেস্টুন, পতাকা দিয়ে সাজানো হয়েছে। আজ আওয়ামী লীগের জন্মদিনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে_ ভোরে দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে সাতটায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন এবং বিকেল চারটায় বঙ্গবন্ধু আনত্মর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা। দলের সভাপতিম-লির সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ ছাড়াও এর সকল সহযোগী ও সমমনা সংগঠনগুলোও নিয়েছে বিসত্মারিত কর্মসূচী।দলের সাধারণ সম্পাদক ও এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের গৌরবোজ্জ্বল ৬১ বছর পূর্তি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সকল জেলা, উপজেলাসহ সকল সত্মরের নেতাকর্মী, সমর্থকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।এছাড়া আওয়ামী লীগের ৬১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলৰে আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ এবং আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় যোগদান।
আজ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
বিশেষ প্রতিনিধি ॥ "...জীবন দানের প্রতিজ্ঞালয়ে লক্ষ সেনানী তব পাছে/তোমার হুকুম তামিলের লাগি সাথে তব চলিয়াছে।/রাজভয় আর কারা শৃংখল হেলায় করেছ জয়/ফাঁসির মঞ্চে মহত্ত্ব তব কখনো হয়নি ক্ষয়।/বাংলাদেশের মুকুটহীন তুমি প্রমর্ত রাজ/প্রতি বাঙালির হৃদয়ে তোমার তখত তাজ...।"'বঙ্গবন্ধু-আওয়ামী লীগ-বাংলাদেশ' ইতিহাসে এই তিনটি নাম একই সূত্রে গাথা।
আজ গণমানুষের প্রিয় দল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। আওয়ামী লীগ মানেই বাঙালী জাতীয়বাদের মূল ধারা। অতীতের মতো বাংলাদেশের ভবিষ্যতও আওয়ামী লীগের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত। বাঙালী জাতির মুক্তির মূলমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে গণতান্ত্রিকভাবে জন্ম নেয়া উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আজ ৬১ বছরে পা রাখল। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার বিখ্যাত রোজ গার্ডেনে জন্ম হয়েছিল এই প্রাচীন রাজনৈতিক দলটির। এই দলের জন্মলাভের মধ্য দিয়েই রোপিত হয়েছিল বাঙালীর হাজারও বছরের লালিত স্বপ্ন স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজ। জন্মলগ্ন থেকেই দেশের মাটি ও মানুষের প্রতি দলটির নেতাকর্মীদের অঙ্গীকার ও ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হয় পাকিস্তানী ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙালী জাতির গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামের ইতিহাস। জনগণের অকুণ্ঠ ভালবাসা ও সমর্থন নিয়েই এই দলটি বিকশিত হয়।যার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির ভূখণ্ডের সীমানা পেরিয়ে এই উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ এবং জনসমর্থনপুষ্ট অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, মানব কল্যাণকামী রাজনৈতিক দল হিসাবে নিজেদের পরিচিতি অর্জনে সৰম হয়েছে। বাঙালীর ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ভাষা, বাঙালীর আত্মনিয়ন্ত্রণ, স্বায়ত্তশাসন সর্বশেষ স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে গড়ে ওঠা আওয়ামী লীগ তার আদর্শ এবং উদ্দেশ্যে অটল থেকেও সময়ের বিবর্তনে বৈজ্ঞানিক কর্মসূচীর মাধ্যমে একটি আধুনিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে আজ প্রতিষ্ঠিত। এই দলের নেতাকর্মীদের ত্যাগ তিতিক্ষা ও অঙ্গীকারদীপ্ত সংগ্রামী ভূমিকা ইতিহাসবিদিত।রোজ গার্ডেনে দলটি প্রতিষ্ঠালাভ করেছিল 'পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ' নামে। ১৯৫৬ সালে ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত দলীয় কাউন্সিলে 'মুসলিম' শব্দটি বাদ দিয়ে 'বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ' নামকরণের মাধ্যমে দলটি অসাম্প্রদায়িক বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হয়। এক কথায় বলতে গেলে, বাঙালী জাতির সকল মহতী অর্জনের নেতৃত্বে ছিল জনগণের প্রাণপ্রিয় সংগঠন আওয়ামী লীগ, যার মহানায়ক ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।দীর্ঘ রাজনৈতিক পথপরিক্রমায় অনেক ঘাত-প্রতিঘাত, চড়াই-উৎরাই ও প্রাসাদষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দলটি আজ এ দেশের গণমানুষের ভাব-ভাবনার ধারক-বাহকে পরিণত হয়েছে। অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক ভাব-ধারার আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে দলটি। জন্মের পর থেকে অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে ঐতিহ্যবাহী দলটি বেঁচে আছে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসাবে। জন্মলাভের পর দ্বিতীয়বারের মতো তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি আসনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ এখন রাষ্ট্রৰমতায়। বঙ্গবন্ধু বাঙালী জাতিকে উপহার দিয়েছেন মহামূল্যবান স্বাধীনতা। এখন তাঁরই কন্যা শেখ হাসিনা ভূমিধ্বস বিজয় নিয়ে ৰমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।আওয়ামী লীগের জন্মলাভের পর মহান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরম্ন করে '৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন, '৬৬ সালের ঐতিহাসিক ছয়দফা, '৬৯ সালের গণঅভু্যত্থান এবং '৭০ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে এই দলের নেতৃত্বে বাঙালী জাতি ক্রমশ এগিয়ে যায় স্বাধীনতার দিকে। এই দলের নেতৃত্বেই ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ নিজেদের স্থান দখল করে। আর এসব আন্দোলনের পুরোধা ও একচ্ছত্র নায়ক ছিলেন ইতিহাসের মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।১৯৭৫ সালে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দীর্ঘ ২১ বছর বিরোধী দলে অবস্থান করে আওয়ামী লীগ। এরপর ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করেছিল। এর আগে এই দলের আন্দোলন সংগ্রামেই প্রতিষ্ঠিত হয় সংসদীয় গণতন্ত্র, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান অনুযায়ী পূর্ণ মেয়াদ শেষে ৰমতা হসত্মানত্মর করে নির্বাচনে অংশ নেয় আওয়ামী লীগ। ২০০১ সালের পহেলা অক্টোবর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পরাজয়ের পর বিরোধী দলে অবস্থানকালে আওয়ামী লীগকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন ও নেতৃত্বশূন্য করতে আসে বেশ কয়েকবার মারণাঘাত। ২১ আগস্ট ভয়াল গ্রেনেড হামলায় শেখ হাসিনাসহ দলের শীর্ষস্থানীয় সকল নেতা অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে গেলেও ঝরে যায় অসংখ্য তাজা প্রাণ। ওয়ান ইলেভেনের পর আবারও ঝড় আসে আওয়ামী লীগের ওপরে। দীর্ঘ ১১ মাস কারাপ্রকোষ্ঠে বন্দী রেখেও বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া আওয়ামী লীগকে ভাঙতে পারেনি নেপথ্যের কুশীলবরা। সর্বশেষ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি আসনে দেশের জনগণ ভোট দিয়ে ৰমতায় বসিয়েছে আওয়ামী লীগকে।আওয়ামী লীগ বাঙালী জাতীয়বাদের মূল ধারা। এটা বাঙালী জাতির গৌরবের যে দ্বিজাতিতত্ত্বেও চোরাবালি থেকে বাঙালী জাতিকে পুনরম্নদ্ধার করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর মতো একজন শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি যিনি হাজার বছরের বাঙালী জাতির সাধনা, ধ্যান, জ্ঞান তাঁর বিপুল সংস্কৃতির ভা-ারের অনত্মর্গত সত্যকে নিজের জীবনে ধারণ করে তা রূপ দিয়েছিলেন দীর্ঘ দু'শ বছরের ধর্ম ও রাজনীতির সংমিশ্রণে জাতীয়তাবাদের বিকৃতি থেকে আমাদের মুক্ত করে। আগামী দু'এক শতাব্দীর মধ্যেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মতো একজন মহামানব, যুগ সৃষ্টিকারী কোন ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটবে, তা কল্পনাও করা যায় না। তাই বাঙালী জাতি আওয়ামী লীগের শুভ জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী শেখ মুজিবুর রহমানকেও।একনজরে আওয়ামী লীগের ৬১ বছর আওয়ামী লীগের পথচলা শুরম্ন ১৯৪৯ সালে। ওই বছর ২৩-২৪ জুন পুরান ঢাকার কেএম দাস লেনে বশির সাহেবের রোজ গার্ডেনের বাসভবনে প্রগতিবাদী ও তরম্নণ মুসলিম লীগ নেতাদের উদ্যোগে রাজনৈতিক কর্মী সম্মেলনের ভেতর দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় পাকিসত্মানের প্রথম প্রধান বিরোধী দল পূর্ব পাকিসত্মান আওয়ামী মুসলিম লীগ। প্রথম কাউন্সিলে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন শামসুল হক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন প্রথম কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক। দলের দ্বিতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় ১৯৫৩ সালে ময়মনসিংহে। এতে সভাপতি হন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান।১৯৫৫ সালের ২১-২৩ অক্টোবর ঢাকার সদরঘাটের রূপমহল সিনেমা হলে দলের তৃতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে আওয়ামী লীগ অসাম্প্রদায়িক সংগঠনে পরিণত হয়। দলের নতুন নামকরণ হয় পূর্ব পাকিসত্মান আওয়ামী লীগ। নিখিল পাকিসত্মান আওয়ামী মুসলিম লীগের সভাপতি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এ প্রসত্মাবটি উত্থাপন করেন। পরে কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মাওলানা ভাসানী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বহাল থাকেন।'৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক নির্ণয়ে সোহরাওয়ার্দী-ভাসানীর মতপার্থক্যের কারণে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগ ভেঙ্গে যায়। ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত হয় ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)। আর মূল দল আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ ও সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান অপরিবর্তিত থাকেন। '৫৮ সালে পাকিসত্মানে সামরিক শাসন জারি হলে আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড স্থগিত করা হয়। দীর্ঘ ছয় বছর 'আন্ডারগ্রাউন্ড' রাজনীতি করার পর '৬৪ সালে দলটির কর্মকা- পুনরম্নজ্জীবিত করা হয়। এতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে তর্কবাগীশ-মুজিব অপরিবর্তিত থাকেন।১৯৬৬ সালের কাউন্সিলে দলের সভাপতি পদে নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তাজউদ্দীন আহমেদ। এর পরে '৬৮ ও '৭০ সালের কাউন্সিলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অপরিবর্তিত থাকেন। এই কমিটির মাধ্যমেই পরিচালিত হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ। দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭২ সালে ৰমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রথম কাউন্সিলে সভাপতি হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন বর্তমান মহামান্য রাষ্ট্রপতি জিলস্নুর রহমান। '৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু সভাপতির পদ ছেড়ে দিলে সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয় এএইচএম কামরম্নজ্জামানকে। সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল থাকেন জিলস্নুর রহমান।১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আসে আওয়ামী লীগের ওপর মারণাঘাত। বঙ্গবন্ধু সপরিবারে হত্যার পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি আবারও স্থগিত করা হয়। '৭৬ সালে ঘরোয়া রাজনীতি চালু হলে আওয়ামী লীগকেও পুনরম্নজ্জীবিত করা হয়। এতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয় মহিউদ্দিন আহমেদ ও বর্তমান সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে। '৭৭ সালে এই কমিটি ভেঙ্গে করা হয় আহ্বায়ক কমিটি। এতে দলের আহ্বায়ক করা হয় সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনকে। '৭৮ সালের কাউন্সিলে দলের সভাপতি করা হয় আবদুল মালেক উকিলকে এবং সাধারণ সম্পাদক হন আবদুর রাজ্জাক।এর পরেই শুরম্ন হয় আওয়ামী লীগের উত্থানপর্ব, উপমহাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসাবে গড়ে তোলার মূল প্রক্রিয়া। সঠিক নেতৃত্বের অভাবে দলের মধ্যে সমস্যা দেখা দিলে নির্বাসনে থাকা বঙ্গবন্ধুর কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। দেশে ফেরার আগেই '৮১ সালের কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল রাখা হয় আবদুর রাজ্জাককে। আবারও আঘাত আসে দলটির ওপর। '৮৩ সালে আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে দলের একটি অংশ পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে বাকশাল গঠন করে। এ সময় সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। '৮৭ সালের কাউন্সিলে শেখ হাসিনা সভাপতি ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক হন।'৯২ ও '৯৭ সালের সম্মেলনে শেখ হাসিনা এবং জিলস্নুর রহমান দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০০ সালের বিশেষ কাউন্সিলে একই কমিটি বহাল থাকে। ২০০২ সালের ২৬ ডিসেম্বর জাতীয় কাউন্সিলে শেখ হাসিনা এবং আবদুল জলিল দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দেশের একক বৃহত্তম রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়। তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি আসনে বিজয়ী হওয়ার পর সর্বশেষ ২০০৯ সালের ২৪ জুলাই আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। শেখ হাসিনা সভাপতি পদে বহাল থাকেন এবং নতুন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন বর্তমান এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। আর এই কাউন্সিলের মাধ্যমে তারম্নণ্যেনির্ভর কেন্দ্রীয় কমিটি গড়ে তোলেন শেখ হাসিনা। এতে করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে ছিটকে পড়েন অধিকাংশ দলের সিনিয়র ও অভিজ্ঞ নেতারা। বর্তমানে এই কমিটি বহাল রয়েছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণী : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৬১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলৰে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বাণীতে দলের অগণিত নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীসহ আওয়ামী লীগের প্রাণশক্তির মূল উৎস বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৬১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলৰে আমি দলের অগণিত নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীসহ আওয়ামী লীগের প্রাণশক্তির মূল উৎস বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। দীর্ঘ পথপরিক্রমায় এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্বদানের সুমহান গৌরবের প্রতীক আওয়ামী লীগ আজ একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আজকের দিনে আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অন্য নেতৃবৃন্দকে। যাদের নেতৃত্বে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল। স্মরণ করছি, জাতীয় চার নেতাসহ আমাদের পূর্বসূরি নেতাকর্মীদের যাদের ঘাম-শ্রম, মেধা ও ত্যাগের বিনিময়ে এ সংগঠন গণমানুষের সংগঠনের পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাসের সঙ্গে এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। '৫২'র ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন, '৫৪'র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আইয়ুব খানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, '৬৪'র দাঙ্গার পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা, '৬৬'র ৬-দফা আন্দোলন ও '৬৯'র গণঅভু্যত্থানের পথ বেয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জাতিকে প্রস্তুত করে স্বাধীনতার জন্য। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে '৭০'র নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের পৰে বাঙালীর নিরঙ্কুশ রায়ের কথা উলেস্নখ করে বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন, "এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম।" ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিসত্মানী হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালীর ওপর অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে শুরম্ন করে ইতিহাসের নির্মমতম গণহত্যা। গ্রেফতার করা হয় বঙ্গবন্ধুকে। গ্রেফতারের পূর্বে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ওয়ারলেসের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শেখ হাসিনা বাণীতে আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালিত সফল মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালী জাতি ১৬ ডিসেম্বর চূড়ানত্ম বিজয় অর্জন করে। প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালীর হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের ফসল স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামাজিক ন্যায়বিচার, আইনের শাসন, মানবাধিকার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে একটি প্রগতিশীল, উদার, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আওয়ামী লীগ বদ্ধপরিকর। বাঙালী জাতির প্রতিটি মহৎ এবং শুভ অর্জনে আওয়ামী লীগের সংগ্রামী ভূমিকা জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইনশাল্লাহ অতীতের মতো ভবিষ্যতেও আওয়ামী লীগ এদেশের জনগণের পাশে থাকবে_ এই হোক আজকের দিনে সবার প্রত্যাশা।কর্মসূচী এবার সারাবছর ধরে সারাদেশেই ব্যতিক্রমী নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে দলের ৬১তম জন্মদিন পালন করার সিদ্ধানত্ম নিয়েছে আওয়ামী লীগ। আজ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচী ছাড়াও এক বছর ধরে ইউনিয়ন, থানা, জেলায়-জেলায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ, আনন্দর্যালি, মহানগরে বিভাগীয় বিশাল বিশাল মহাসমাবেশসহ নানা কর্মসূচী রয়েছে এ পরিকল্পনায়। এদিকে আওয়ামী লীগের জন্মদিন উপলৰে রাজধানীর প্রতিটি গুরম্নত্বপূর্ণ সড়ক মোহনায় ব্যানার, ফেস্টুন, পতাকা দিয়ে সাজানো হয়েছে। আজ আওয়ামী লীগের জন্মদিনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে_ ভোরে দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে সাতটায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন এবং বিকেল চারটায় বঙ্গবন্ধু আনত্মর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা। দলের সভাপতিম-লির সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ ছাড়াও এর সকল সহযোগী ও সমমনা সংগঠনগুলোও নিয়েছে বিসত্মারিত কর্মসূচী।দলের সাধারণ সম্পাদক ও এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের গৌরবোজ্জ্বল ৬১ বছর পূর্তি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সকল জেলা, উপজেলাসহ সকল সত্মরের নেতাকর্মী, সমর্থকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।এছাড়া আওয়ামী লীগের ৬১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলৰে আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ এবং আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় যোগদান।